আইসিসির
আইন অনুযায়ী, বলের
বেশির ভাগ অংশ বা বলের অন্তত ৫১ ভাগ স্টাম্পের লাইনে থাকলে সেটিকে ‘ইন লাইন’ বলে
ধরে নেওয়া হবে। কিন্তু বিপিএলের প্লেয়িং কন্ডিশন অনুযায়ী, ‘ইন লাইন’ হিসেবে বিবেচনার জন্য বলের সামান্য কোনো অংশ লাইন স্পর্শ
করলেই চলবে।
বিপিএলে
টিভি আম্পায়ারের একটি সিদ্ধান্ত নিয়ে তুমুল আলোচনা-সমালোচনার পর সেটির প্রেক্ষাপট
আনুষ্ঠানিকভাবে জানিয়েছে বিসিবি। আলোচিত সেই আউটের ক্ষেত্রে বিপিএলের প্লেয়িং
কন্ডিশনই অনুসরণ করেছেন টিভি আম্পায়ার। আউট নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়ানোর মূল কারণ, আইসিসির আইন বদলে ফেলা হয়েছে
বিপিএলে।
বিপিএলে
শনিবার কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স ও ফরচুন বরিশালের ম্যাচে দ্বিতীয় ভাগের ঘটনা সেটি।
চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরি স্টেডিয়ামে কুমিল্লার রান তাড়ায় চতুর্দশ ওভারে
ইফতিখার আহমেদের বলে জাকের আলিকে এলবিডব্লিউ দেন আম্পায়ার। জাকের নেন রিভিউ।
রিভিউয়ে দেখা যায়, বলের সামান্য একটু অংশ কেবল পড়েছে স্টাম্প লাইনে। আইসিসির নিয়ম অনুযায়ী,
এটি ‘নট আউট।’ কিন্তু মাঠের আম্পায়ারের সিদ্ধান্ত বহাল রাখেন
টিভি আম্পায়ার।
আউট হয়ে বিশ্বাসই
করতে পারছিলেন না ব্যাটসম্যান জাকের। মাঠে ছাড়েন তিনি চোখেমুখে বিস্ময় নিয়ে।
ধারাভাষ্যকাররাও এটা বিশ্বাস করতে পারছিলেন না। ধারাভাষ্যকার শামীম আহমেদ চৌধুরি
বলেন, “কোনো ভাষা খুঁজে পাচ্ছি না।”
সিদ্ধান্তের পরপরই
মূলধারার সংবাদ মাধ্যমে যেমন প্রবল সমালোচনা হয়, তেমনি
ট্রলের ঝড় বয়ে যায় সামাজিক মাধ্যমে।
ম্যাচ শেষে
কুমিল্লার কোচ মোহাম্মদ সালাউদ্দিন এই সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রচণ্ড ক্ষোভ প্রকাশ করে
বলেন, “প্রতিবাদ করেও তো লাভ নেই। আমরা লিখিত দেব বা
প্রতিবাদ করব যে, সেটা করেও লাভ নেই। কোনো লাভ হবে না।
আসলে কিছু করার নেই। হাত-পা বাঁধা আছে।”
বরিশালের প্রতিনিধি
হয়ে সংবাদ সম্মেলনে আসা পেসার কাজী অনিক জানান, "টিভি
রিপ্লে দেখে সাকিব ভাই মিরাজকে বলছিলেন যে এটা আম্পায়ার্স কল, তাই আউটই।"
দুজনের প্রতিক্রিয়ায়
ফুটে ওঠে, কোচ সালাউদ্দিন কিংবা বরিশাল অধিনায়ক সাকিব
অথবা দুই দলের কেউই জানতেন না বিপিএলের আইনের এই ধারার কথা।
প্লেয়িং কন্ডিশনের
কোনো কপি সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া হয়নি এবার। সেই ‘প্লেয়িং কন্ডিশন’ জোগাড় করে দেখা
যায়, পরিশিষ্ট ডি১-এর ৬.৪.৩.৩ ধারা অনুযায়ী, বলের কোনো অংশ স্টাম্প লাইন স্পর্শ করলেই তাকে ‘ইন লাইন’ বলে ধরে নেওয়া
হবে।’
ক্রিকেট বিশ্বজুড়ে
বিভিন্ন ঘরোয়া লিগ বা ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটকে আকর্ষণীয় করার জন্য অনেক সময়ই অনেক
আইনে একটু উদ্ভাবনী কিছু যোগ করা হয়। কিন্তু ক্রিকেটের একটি মৌলিক আইন এভাবে বদলে
ফেলার নজির যথেষ্টই বিরল।
পরে রাত ১১টা ২০
মিনিটে বিসিবি থেকে মেইল করে জানানো হয়, বিপিএলের
প্লেয়িং কন্ডিশন অনুযায়ী টিভি আম্পায়ারের সিদ্ধান্ত ঠিকই ছিল।