বিপিএলে মঙ্গলবার মিরপুরে খুলনা
টাইগার্সের বিপক্ষে স্রেফ ১০৮ রানের পুঁজি নিয়েও বিজয়ীর বেশে মাঠ ছাড়ে ঢাকা। ২৪
রানের জয়ে দূর হয় তাদের জয়ের খরা। ৯ রানে ৪ উইকেট নিয়ে অভাবনীয় এই জয়ের নায়ক
তাসকিন।
এই ম্যাচ জিততে ঢাকার প্রয়োজন ছিল
একইসঙ্গে আঁটসাঁট ও উইকেট শিকারি বোলিং। দারুণ বোলিংয়ে দুটি দাবিই মেটান তাসকিন।
উইকেট যেমন এনে দেন দলকে,
তেমনি তার ২১ বলের মধ্যে ১৫টিতেই কোনো রান নিতে পারেনি খুলনার
ব্যাটসম্যানরা।
নিখুঁত লাইন-লেংথে গতির ঝড় তুলেও এবারের বিপিএলে
তাসকিন আহমেদের পরিণতি ছিল যেন পরাজিত দলে থাকা। অবশেষে ভেঙেছে সেই বৃত্ত, যেখানে বড় ভূমিকা তারই।
অভিজ্ঞ ফাস্ট বোলারের বিধ্বংসী বোলিংয়ে টানা ৬ হারের পর অবশেষে জয়ের দেখা পেয়েছে
ঢাকা ডমিনেটর্স। দলকে জিতিয়ে তাসকিন শোনালেন তার হতাশাকে জয় করার মন্ত্র।
আসরের শুরু থেকেই এমন আগ্রাসী বোলিং করে
আসছেন তাসকিন। খুলনার বিপক্ষে ঢাকার প্রথম জয়ের ম্যাচে উইকেট না পেলেও ৪ ওভারে দেন স্রেফ ১৪ রান। পরে টানা হারতে থাকা ৬ ম্যাচে ঢাকার
ম্যাড়ম্যাড়ে পারফরম্যান্সের ভিড়ে তাসকিনের বোলিং ছিল ব্যতিক্রম। তার বিপক্ষে সহজে রান নিতে পারেনি প্রতিপক্ষ দলের ব্যাটসম্যানরা।
নতুন বলে গতির সঙ্গে মুভমেন্ট ও সুইংয়ের মিশেলে রীতিমতো অপ্রতিরোধ্য ২৭ বছর বয়সী
পেসার। শেষ দিকে পুরোনো বলে স্লোয়ার, ইয়র্কার, বাউন্সারসহ নানা বৈচিত্র ব্যবহার করেও সফল তাসকিন। সবমিলিয়ে ৮ ম্যাচে
তার উইকেট এখন ১০টি। ওভারপ্রতি খরচ স্রেফ ৬.১৬ রান।
ধারাবাহিকভাবে ভালো বোলিং করতে থাকা
তাসকিনের তোপেই ফিরতি ম্যাচে বিধ্বস্ত খুলনা। তাদের হারিয়ে ম্যাচ সেরার পুরস্কার
জিতে সংবাদ সম্মেলনে তাসকিন বললেন, ভয়কে জয় করেই তিনি
ছুটছেন সাফল্যের পথে।
“ক্রিকেটার হিসেবে আমার মঞ্চ ও আমার
গ্ল্যামার পুরোটাই ২২ গজে। এখানে আমি আমার সেরাটা দিয়ে উপভোগের চেষ্টা করি। কোনো
দিন ভালো হবে, কোনো দিন খারাপ। কঠোর পরিশ্রম করা, প্রক্রিয়ায় থাকা, মাইন্ড ট্রেনিং করা... সব
কিছু মিলিয়ে আমি মাঠে ব্যর্থ হওয়ার ভয়টা ছাড়া খেলার চেষ্টা করি। কিছু দিন হয়তো
(কাজ) হবে না। তবে এটাও মেনে নিতে হবে।”
“ব্যর্থতার ভয় বাদ দিয়ে আমি সেরাটা
দিয়ে মাঠে চেষ্টা করি। এমনকি ফিল্ডিংয়েও। একটা সময় হয়তো বেশি খারাপ ফিল্ডার ছিলাম।
এখন আগের চেয়ে কিছুটা ভালো হয়েছে। উন্নতির তো শেষ নেই। সব কিছু নিয়েই কাজ করছি।
যাতে আরেকটু উন্নতি করা যায়।”
বিপিএল ইতিহাসে ১০৮ রানের
চেয়ে কম করে জেতার নজির স্রেফ ১টি। ২০১৩ সালের আসরে ৯৯ রান করেও চিটাগং কিংসকে ২
রানে হারায় দুরন্ত রাজশাহী। এছাড়া ২০১৫ সালে ১০৮ রান করেই সিলেট সুপার স্টার্সের
বিপক্ষে জেতে বরিশাল বুলস। তবু ১০৮ রানের পুঁজি নিয়েও খুলনার বিপক্ষে ম্যাচ জেতার
বিশ্বাস ছিল বলে জানালেন তাসকিন।