চামড়া নিয়ে দেশে একটি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত অপপ্রচার চালানো হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন। তিনি বলেন, গত ১০ বছরের মধ্যে এবারের কুরবানির মৌসুমে সবচেয়ে বেশি দামে চামড়া বিক্রি হয়েছে, অথচ সেই ইতিবাচক দিকটি সঠিকভাবে প্রচার করা হচ্ছে না।
মঙ্গলবার (১০ জুন) বিকেলে জয়পুরহাটের চামড়া গুদাম এলাকায় স্থানীয় চামড়া ব্যবসায়ীদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন তিনি।
বাণিজ্য উপদেষ্টা জানান, কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনা তুলে ধরে চামড়ার বাজার সম্পর্কে নেতিবাচক প্রচারণা চালানো হচ্ছে, যা বাস্তবতার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। তিনি বলেন, চামড়ার গুণগত মান রক্ষায় সরকার লবণ দিয়ে সংরক্ষণের ব্যবস্থা নিয়েছে, যাতে তা নষ্ট না হয় এবং ব্যবসায়ীরা ন্যায্য মূল্য পান।
তিনি আরও বলেন, “বাজারে একসঙ্গে বেশি চামড়া সরবরাহ হলে দামে অস্থিরতা দেখা দিতে পারে। তবে সংরক্ষণ করে ধাপে ধাপে বিক্রি করলে আরও ভালো দাম পাওয়া সম্ভব।”
চামড়া পচা নিয়ে গুজব প্রসঙ্গে শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, “যদি সময়মতো প্রক্রিয়াজাত করা না হয়, তাহলে পচন ধরতে পারে। সেই পচা চামড়া কোনো ব্যবসায়ী কিনতে চায় না—এটা স্বাভাবিক। তাই যথাযথ সংরক্ষণ ও দ্রুত প্রক্রিয়াজাতকরণ গুরুত্বপূর্ণ।”
তিনি জানান, সরকার ইতোমধ্যে সাড়ে ৭ লাখ মণ লবণ কিনে সারাদেশে বিতরণ করেছে এবং কসাইদের প্রশিক্ষণ দিয়েছে, যাতে চামড়া সঠিকভাবে সংগ্রহ ও সংরক্ষণ করা যায়।
চামড়ার মূল্য নিয়ে আশাবাদ প্রকাশ করে তিনি বলেন, “গত এক দশকের মধ্যে এবারই সর্বোচ্চ দামে চামড়া বিক্রি হয়েছে। আশা করছি, আগামী বছর আরও দাম বাড়বে। এজন্য সবাইকে সম্মিলিতভাবে কাজ করতে হবে। আমাদের অর্থনীতিকে এগিয়ে নিতে বাণিজ্য সম্প্রসারণে মনোযোগ দিতে হবে।”
সভায় জয়পুরহাট জেলা প্রশাসক আফরোজা আকতার চৌধুরী, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আবদুল ওয়াহাব, সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার রাশেদুল ইসলাম, জয়পুরহাট চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি আব্দুল হাকিম মন্ডল এবং জেলা চামড়া ব্যবসায়ী গ্রুপের সভাপতি আবু বকর সিদ্দিক উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন হেলিকপ্টারে করে জয়পুরহাট স্টেডিয়ামে পৌঁছালে জেলা প্রশাসন ও পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা তাকে স্বাগত জানান। পরে তিনি চামড়ার আড়ৎ পরিদর্শন করেন।