বন্যার পানিতে তলিয়ে আছে অনেক হাট। প্রবাসীরাও কোরবানির পরিবর্তে বন্যার্তদের মাঝে ত্রাণ বিতরণে বেশি আগ্রহী। ফলে ঈদের আর মাত্র ৬ দিন বাকি অথচ মৌলভীবাজারে জমছে না কোরবানির পশু কেনাবেচা। অন্যদিকে চলতি বছর জেলায় কোরবানির পশু লালন পালন হয়েছে চাহিদার তুলনায় কম।এমনকি পশুর হাটে নেই ভারতীয় গরু। তারপরও কোরবানির পশুর প্রত্যাশিত দাম পাচ্ছেন না এখানের খামারীরা ।পাশাপাশি গোখাদ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় অনেক খামারি দাম পাওয়ার অপেক্ষা না করে পানির দামে বিক্রি করে দিচ্ছেন নিজেদের কষ্টের পালিত কোরবানির পশু।
মৌলভীবাজার জেলার ভারপ্রাপ্ত প্রানী সম্পদ কর্মকর্তা ডা. সিনথিয়া কবির জানান, জেলার ৭ উপজেলায় চলতি বছর কোরবানির পশুর চাহিদা ৭২ হাজারের বেশি। অথচ এখানে লালন পালন হচ্ছে ৬৪ হাজারের মতো কোরবানির পশু।সেদিক থেকে এখানে কোরবানির পশুর ঘাটতি রয়েছে ৮ হাজারের মতো।
সদর উপজেলার একাটুনা ইউনিয়নের কিবরিয়া ডেইরি ফার্মের সত্ত্বাধিকারী মুহাম্মদ কিবরিয়া 'সংবাদ সারাবেলা 'কে জানান, চলতি বছর তিনি ৩ টি কোরবানির পশু লালন পালন করেন। এ পর্যন্ত বিক্রি করেছেন সবচেয়ে বড়টি মাত্র সাড়ে ৩ লাখ টাকায় । অথচ এমন একটি গরু গত বছর ৪ লাখের বেশি টাকায় বিক্রি হয়েছে। তার বাকি ২ টি কোরবানির গরু এখানো বিক্রি করতে পারছেন না।
তিনি আরও জানান, এখন গোখাদ্যের দাম অনেক বেশি। গরু লালন পালন এখন কঠিন হয়ে পড়েছে।
স্থানীয় সুত্র জানিয়েছে,কুলাউড়া জুড়ী বড়লেখাসহ হাকালুকি হাওড় পারের অনেক গ্রামে গত ১৫ দিন যাবত পানি। এসব গ্রামের লোকজন জীবন জীবিকার লড়াইয়ে। ফলে কোরবানি নিয়ে ভাবার সময় নেই বলে জানালেন সৌদি প্রবাসী সাইদুল ইসলাম।
কুলাউড়া উপজেলার কাদিপুর হোসেনপুর ফরিদপুর মনসুর ছকাপন গ্রামের ২০-৩০ জন যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী প্রতিবছর বড় বড় গরু খাসি কোরবানি দিতেন।তাদের পারিবারিক সুত্রে জানা যায়, চলতি বছর ভয়াবহ বন্যার কারণে ত্রাণ হিসেবে বড় অংকের অর্থ তারা দেশে পাঠিয়েছেন। ফলে এখন কোরবানি নিয়ে তাদের তেমন আগ্রহ নেই।
হাকালুকি হাওর পারের ভুকশিমইল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আজিজুর রহমান মনির জানান, সারা ইউনিয়নে শুধু পানি আর পানি। যেভাবে পানি নামছে হয়তো অনেক গ্রামে ঈদের নামাজ পড়া যাবে কি না সন্দেহ আছে।
তিনি জানান, তার ইউনিয়নের ঈদের এক সপ্তাহ আগ থেকে নবাবগঞ্জ বাজারে কোরবানির পশুর হাট বসতো।প্রচুর গরু ছাগল বিক্রি হতো। কিন্তু চলতি বছর পশুর হাট বসে কি না সন্দেহ আছে।মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহসান সংবাদ সারাবেলা কে জানান এখানে অস্থায়ী ১৬ টিসহ মোট পশুর হাটের সংখ্যা ৩৫ টি।হাওর এলাকার তলিয়ে যাওয়া পশুর হাটের বিকল্প হিসেবে উঁচু স্থানে পশুর হাট বসানোর চেষ্টা চলছে।
পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জাকারিয়া সংবাদ সারাবেলাকে জানান, মৌলভীবাজারের কোরবানির পশুর হাটে জাল টাকা সনাক্ত করা,চোরাই গরু বিক্রি বন্ধ সহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় প্রয়োজনীয় সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হবে।