একদিকে ভ্যাপসা গরম। অন্যদিকে বাড়িতে অসুস্থ রোগী। প্রয়োজন হয় প্রচুর পানির। অথচ শুধু সকাল সন্ধ্যা নয়, মধ্যরাতেও ঘন্টার পর ঘন্টা নেই বিদ্যুৎ। বিদ্যুৎ না থাকায় সন্ধ্যায় দোকানপাটে নেই ক্রেতা। এমন অভিযোগ ব্যবসায়ীসহ অনেকের। বলা যায় হঠাৎ করে গত ২/৩ দিনে ভেঙে পড়েছে পুরো জেলার বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থা। শহর এলাকায় ঘন্টায় ঘন্টায় চলছে বিদ্যুতের লুকোচুরি। আর গ্রামে টানা ৫-৭ ঘন্টা দেখা মিলছে না বিদ্যুতের দেখা । মৌলভীবাজারের ৭ উপজেলার প্রায় ৫ লাখ বিদ্যুৎ গ্রাহক চরম ভোগান্তির শিকার। বিদ্যুৎ গ্রাহকেরা এই পরিস্থিতির জন্য বিতরণ ব্যবস্থায় নিয়োজিত প্রকৌশলী ও কর্মকতা- কর্মচারীদের অনিয়ম অবহেলাকে দায়ী করছেন । বিদ্যুৎ বিভাগ অবশ্য বলছে, এখানে আমাদের করার কিছু নেই। এটা জাতীয় বিপর্যয়। তারা প্রয়োজনীয় বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে পারছে না।
বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড ( বিপিডিবি) এবং বাংলাদেশ রুর্যাল ইলেকট্রিফিকেশন বোর্ড ( আরইবি) আঞ্চলিক অফিসগুলো জানায়, মৌলভীবাজার জেলার ৭ উপজেলা ও ৫ পৌরসভার বিদ্যুৎ গ্রাহকের সংখ্যা প্রায় ৫ লাখ। এর মধ্যে মৌলভীবাজার শহরসহ আশপাশের এলাকায় পিডিবির প্রায় ২৮ হাজার এবং কুলাউড়া ও জুড়ী মিলে আরও ৪২ হাজার হবে। আর জেলার ৭ উপজেলার গ্রামেগঞ্জে আরও প্রায় ৪ লাখ গ্রাহক আছেন পল্লী বিদ্যুতের।
বিদ্যুতের বর্তমান অসহনীয় লোডশেডিং প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুত সমিতি মৌলভীবাজারের মহা-ব্যবস্থাপক( জিএম) ইঞ্জিনিয়ার সাখাওয়াত হোসেন সংবাদ সারাবেলা কে বলেন, মৌলভীবাজার জেলার ৭ উপজেলায় আমাদের গ্রাহক প্রায় ৪ লাখ। যেকারণে প্রতিদিন প্রায় ৯০ মেঘাওয়াট বিদ্যুতের প্রয়োজন। অথচ বর্তমানে ১৫ থেকে ২২ মেঘাওয়াটের মত পাচ্ছি। জাতীয় গ্রিডে উৎপাদন ঘাটতি থাকায় এই পরিস্থিতি।
তিনি বর্তমান পরিস্থিতিতে গ্রাহকদের ধৈর্য ধারণের আহবান জানান।
পিডিপি মৌলভীবাজার বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগের উপ সহকারী প্রকৌশলী ইঞ্জিনিয়ার রাকিবুজ্জান সংবাদ সারাবেলা কে বলেন, জাতীয় গ্রিডে গ্যাসের চাপ কম। যে কারণে বিদ্যুৎ উৎপাদন অনেক কমে গেছে। আমাদেরকে বলা হয়েছে শহর এলাকায় ৫-৬ ঘন্টা এবং গ্রাম এলাকায় ৮-১২ ঘন্টা লোডশেডিং করার জন্য। আমরা ৫-৬ ঘন্টা লোডশেডিং করছি।
পিডিবি কুলাউড়া বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী ওসমান গনি সংবাদ সারাবেলা কে বলেন,গত মাসে হবিগঞ্জের শাহাজীবাজারে বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রে আগুন লেগে দুটি ইউনিট পুড়ে যায়। আমাদের সোর্স লাইন সেখানে। বর্তমানে শাহাজীবাজারে ৫৬০ মেঘাওয়াটের জায়গায় উৎপাদন হচ্ছে মাত্র ৩২০ মেঘাওয়াটের মতো। যেকারণে ঘাটতি থেকেই যাচ্ছে।