প্রাকৃতিক সৌন্দর্যবেষ্টিত, নৈসর্গিক পরিবেশের প্রাচীন রাজধানী সোনারগাঁও। এ অঞ্চলের অসংখ্য দর্শনীয় স্থানের মধ্যে পশ্চিমবঙ্গের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসুর বাড়ি অবস্থিত। তিনি ১৯১৪ সালের ৮ জুলাই ভারতের কলকাতার হ্যারিসন রোডের একটি বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর জন্মস্থান কলকাতাতে হলেও তাঁর পৈত্রিক ভিটা ছিল নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ের বারদী ইউনিয়নের চৌধুরীপাড়া গ্রামে। সে সুবাদে তাঁর শৈশবের কিছুটা সময় কাটে এ গ্রামে। বর্তমান সরকার জ্যোতি বসুর স্মৃতিবিজড়িত বাড়িটি সংরক্ষণ করে একটি আধুনিক লাইব্রেরি, সেমিনার হল এবং জাদুঘর প্রতিষ্ঠা করেছে। এতে করে দিন দিন বাড়িটির প্রতি দর্শনার্থীদের আগ্রহ বেড়ে চলেছে।
আরো একটি পর্যটকস্থান নামে পরিচিত পেয়েছে ছটাকিয়া নদীর পাড়। বারদী ইউনিয়নের অন্তর্গত এই দুই স্থানে প্রতিদিন প্রায় হাজারও পর্যটকদের ভীড় জমে। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ছুটে আসা ওই সব পর্যটকরা সকাল থেকে সন্ধ্যা এমনকি রাত্রী পর্যন্ত ঘুরে বেড়ান জ্যোতি বসুর বাড়ি ও ছটাকিয়াসহ বারদীর বিভিন্ন স্থানগুলোতে। কিন্তু দুর্ভাগ্য হলেও সত্য এখানে আসা একটি মাত্র রাস্তা ছাড়া প্রায় সবগুলো রাস্তারই বেহাল দশা। বিশেষ করে বারদীর ইউনিয়নের খুব কাছে ছটাকিয়া নদীর পাড় যাওয়া রাস্তাটি এতটাই বেহাল দশা যে, পর্যটকদের সেখানে যেতে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। গ্রাম্যপথ ধরে ছুটে চলা এ দুটি রাস্তা বেশিরভাগই খানাখন্দে ভরা।
রাস্তাটির দুপাশ ভেঙ্গে পড়ায় এ পথে যানবাহন তো দূরের কথা পাঁয়ে হেটে পথ চলতেও হিমশিম খেতে হচ্ছে পর্যটকসহ স্থানীয়দের। রাস্তাটি খারাপ হওয়ায় অটোরিকশা বা মিশুক চালকেরা অতিরিক্ত ভাড়া হাকিয়ে নিচ্ছে পর্যটকদের কাছ থেকে। কেননা, যে যানবাহন দিয়ে সেখানে যেতে হয় আবার সেই যানবাহন দিয়েই ফিরে আসতে হয়। কারণ, রাস্তাগুলির বেহাল দশার কারণে সেখানে কোন যানবাহন পাওয়া যায়না। তাই রিজার্ভ করেই যানবাহন নিতে হয় এবং চালকদের ইচ্ছেমত ভাড়া দিতে হয়।
স্থানীয়রা জানান, এ ভাঙ্গা রাস্তাটির কারণে এলাকায় অভিশাপ নেমে এসেছে। এই রাস্তায় কোন যানবাহনই আসতে চায় না। এ জন্য আমাদের বেশিরভাগ সময়ই পায়ে হেটে এ পথে চলতে হয়। কিন্তু রাস্তা দুটি এতটাই খারাপ অবস্থা যে, পাঁয়ে হেটে চলতে গেলেও বেশিরভাগ সময়ই আমাদের হোঁচট খেয়ে পরে যেতে হয়। আর বৃষ্টি এলেতো কোন কথাই নেই। সম্পূর্ণ অচল হয়ে যায় রাস্তা। তারা আরও বলেন, ভাঙ্গা রাস্তার কারণে পর্যটকরা এখানে ঘুরতে আসলে যদি সন্ধ্যা হয়ে যায় কিংবা কিছুটা রাত হয়ে যায়, তাহলেই বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হতে হয় পর্যটকদের। এসবের কারণে বারদীর বদনাম হচ্ছে। তাই পর্যটকদের সুবিধার্থে এ রাস্তা দুটির দ্রুত সংস্কার করা জরুরী। নয়তো, ধিরে ধিরে এ পর্যটকস্থান থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে পর্যটকরা।
এ বিষয়ে বারদী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো: মাহাবুব রহমান বাবুল সংবাদ সারাবেলাকে জানায় রাস্তাগুলি শুধু সংস্কারই হবেনা, দুদিকে ৩ ফিট করে প্রশস্ত করতে হবে । এ রাস্তা সংস্কার করবে এলজিইডি। খুব শিঘ্রই এ রাস্তার টেন্ডার হবে বলে আশা করছি।