সারাদেশে চা শ্রমিকদের ৩০০টাকা মজুরি আদায়ের লক্ষে চা শ্রমিকরা লাগাতার কর্ম বিরতি শুরু করেছেন।
১৮ আগষ্ট (বৃহস্পতিবার) মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার লুহানি চা-বাগান, হিংগাজিয়া চা-বাগান ও হলিছড়া চা-বাগানের শ্রমিকেরা একসাথে মিলিত হয়ে উপজেলার ব্রাক্ষনবাজারের কুলাউড়া মৌলভীবাজার সড়ক এবং কুলাউড়া শমসেরনগর সড়কে অবস্থান নেন। তাদের ৩০০টাকা দাবি বাস্তবায়নের লক্ষে অতিষ্ট হয়ে সড়ক অবরোধ করছেন বলে যানান তারা। যতদিন ৩০০ টাকা মজুরি না হচ্ছে ততদিন তাদের এই কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।
স্থানীয় চা বাগানের নেতারা বলেন, ১২০ টাকা মজুরি দিয়ে ২ কেজি চাল কিনতে পারিনা। তাহলে পরিবার চালাবো কিভাবে। দিন দিন চায়ের উৎপাদন বাড়ছে। শুধু বাড়ছেনা চা শ্রমিকদের মজুরি।
সড়ক অবরোধের কারনে শত শত যানবাহন আটকা পড়ে। পরে ৫নং ব্রাক্ষনবাজার ইউপি চেয়ারম্যান মমদুদ হোসেন সহ কুলাউড়া থানা পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে। প্রায় দেড় ঘন্টা পর যানবাহন সাভাবিক হয়।
এর আগে বক্তব্যে নেতারা আরও বলেন, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে চা শ্রমিকেরা দিশেহারা। ১২০ টাকার মজুরি দিয়ে এখন শ্রমিকদের সংসার চলে না। চাল, ডাল, মসলা সহ নিত্যপ্রতিদিনের জিনিসপত্র কিনলে মাছ কেনার টাকা থাকে না। সন্তানদের পড়াশোনার খরচ চালাতে চালাতে না পেরে শ্রমিকদের সন্তান তারাও ১২০ টাকা মজুরিতে যোগ দিচ্ছে বাগানে। ফলে তাদের ভবিষ্যৎ অন্ধকারের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে ।
বাগান মালিকদের সাথে মজুরি বৃদ্ধির কথা থাকলেও মালিকেরা নানা টালবাহানায় মজুরি বাড়াচ্ছেন না।
এদিকে, ১৬৮ বছরের ইতিহাসে বাণিজ্যিক চা চাষে রেকর্ড গড়েছে বাংলাদেশ। করোনা সংকটের মধ্যেই গেল বছর সর্বোচ্চ ৯ কোটি ৬৫ লাখ কেজি চা উৎপাদন হয়েছে।
১৯ জানুয়ারী ২০২২ বাংলাদেশ চা বোর্ডের এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছিলো। ২০২১ সালে ছোট-বড় সব বাগান থেকে রেকর্ড পরিমাণ এ চা উৎপাদন হয় বলে এতে জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত বছর ১০ কোটি কেজি চা উৎপাদনের টার্গেট থাকলেও বছর শেষে ১৬৭টি বাগান এবং ক্ষুদ্রতায়ন অন্যান্য বাগান মিলে মোট ৯ কোটি ৬৫ লাখ ৬ হাজার কেজি চা উৎপাদিত হয়।
নজির গড়া উৎপাদনের এ পরিমাণ ২০২০ সালের তুলনায় এক কোটি ১১ লাখ কেজি বেশি। এর আগে ২০১৯ সালে ৯ কোটি ৬০ লাখ ৬৯ হাজার কেজি চা উৎপাদিত হয়েছিল, যা ছিল সেসময় পর্যন্ত দেশে চা শিল্পের ইতিহাসে সর্বোচ্চ পরিমাণ।
চায়ের উৎপাদন বাড়লেও বাড়ছেনা চা শ্রমিকের মজুরি এমটাই বলছেন চা শ্রমিকরা।