ফরিদপুরের সালথা উপজেলায় এক প্রতিবন্ধীব্যক্তিকে প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ন প্রকল্পের ঘর পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে ঘুষ ও চাঁদবাজির মামলায় জামিনে মুক্তি পেয়েছেন সালথা উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান রূপা বেগমের স্বামী ও মাঝারদিয়া ইউনিয়ন কৃষকলীগের সাবেক সভাপতি হায়দার মোল্যা।
গত ১৫ আগস্ট দিনগত রাতে সালথা থানা এলাকা থেকে তাকে পুলিশ অাটক করে ১৬ অাগষ্ট তাকে ফরিদপুর কারাগারে পাঠানো হয়। ২১ দিন কারাভোগ করার পর মঙ্গলবার (৬ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১ টার দিকে ফরিদপুর আদালত থেকে জামিন পান তিনি।
জামিনের বিষয়টি নিশ্চিত করে আসামীপক্ষের আইনজীবী এ্যাডভোকেট জয়নাল আবেদীন বুকুল মিয়া বলেন, ফরিদপুর জেলা ও দায়রা জজ মো. আলী আকবর শেখ ২০ হাজার টাকা মুচলেকায় হায়দার মোল্যার জামিন মঞ্জুর করেন। এখন মুক্তি পেতে তার আর কোনো বাধা নেই।
উল্লেখ্য, সালথা উপজেলার মাঝারদিয়া ইউনিয়নের কুমারপট্টি গ্রামের আব্দুর রহমান নামের এক প্রতিবন্ধি ভিক্ষুককে প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ন প্রকল্পের ঘর পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে ২৫ হাজার ৫'শ টাকা নেয় উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যানের স্বামী হায়দার মোল্যা। পরে সেই টাকা চাইতে গেলে ওই ভিক্ষুককে বিভিন্ন সময়ে হুমকি-ধমকি দেন রূপা বেগমের স্বামী হায়দার মোল্যা ও রূপার আপন ছোট ভাই মোকাদ্দেস। এছাড়া উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান রূপা বেগমও বিভিন্ন লোকজন দিয়ে হুমকিধামকি দিচ্ছেন বলেও সালথা থানায় অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী ভিক্ষুকের পরিবার।
পরে এঘটনায় সালথা থানায় গত ১৫ আগস্ট চাঁদাবাজি ও হুমকিধামকির অভিযোগ এনে একটি এজাহার দায়ের করেন ভিক্ষুক আব্দুর রহমান। এজাহারে উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান রুপা বেগমের স্বামী হায়দার মোল্যা ও উক্ত মহিলা ভাইস চেয়ারম্যানের ভাই মোকাদ্দেস মাতুব্বরকে আসামি করা হয়। ওই মামলায় হায়দার মোল্যাকে ১৫ আগস্ট রাতে গ্রেপ্তার করে ১৬ আগস্ট আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।
এদিকে সালথা উপজেলার মাঝারদিয়া গ্রামের ইকরাম মাতুব্বরের ছেলে মো: মিরাজ হোসেনের কাছ থেকে প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ন প্রকল্পের ঘর পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে ২০ হাজার টাকা চাঁদা নেয় উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান রুপা বেগম ও তার স্বামী হায়দার মোল্যা এবং ছোট ভাই মোকাদ্দেস মিয়া। ঘর না পেয়ে পরে সেই টাকা চাইতে গেলে মিরাজ হোসেনকে বিভিন্ন সময়ে খুন ও জখমের হুমকি-ধমকি দেন রুপা বেগম, হায়দার মোল্যা ও মোকাদ্দেস মিয়া। এঘটনায় গত ২৩ আগষ্ট ভয়ভীতি দেখিয়ে চাঁদা দাবী ও জোর পূর্বক চাঁদার টাকা গ্রহনের অপরাধে সালথা থানায় উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান রুপা বেগম ও তার স্বামী হায়দার মোল্যা এবং ছোট ভাই মোকাদ্দেস মিয়ার বিরুদ্ধে একটি মামলা হয়। এই মামলায় রূপা বেগম কিছুদিন পলাতক থাকার পরে ৩১ আগষ্ট ফরিদপুরের জজ কোর্ট থেকে পান।