মৎস্য ভাণ্ডার খ্যাত সিরাজগঞ্জের তাড়াশ, রায়গঞ্জ, উল্লাপাড়া উপজেলার বিভিন্ন স্থানে শুটকি উৎপাদনে চাতাল তৈরি করছেন ব্যবসায়ীরা।
চলনবিল জুড়ে বন্যার পানি কমার সাথে সাথে শুটকি তৈরির ধুম পড়ে যায়। শুটকি উৎপাদনের লক্ষে এ অঞ্চলের ২ শতাধিক শুটকি চাতালে শ্রমিকরা দেশীয় জাতের শুটকি তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন।চলনবিল এলাকার উল্লেখযোগ্য ৪৮টি বিল, ১৩টি খাল ও ১১টি নদীতে প্রচুর কৈ, মাগুর, রুই, কাতলা, মৃগেল, বাউশ, আইড়, রিটা মাছ পাওয়া যায়। শুঁটকি তৈরি করে দেশের বিভিন্ন মোকামে পাঠানো হয়। দেশব্যাপী চলনবিলের মাছের শুঁটকির চাহিদা রয়েছে। পানি কমার সঙ্গে সঙ্গে বিল এলাকায় বিভিন্ন ধরনের মাছ পাওয়া যাচ্ছে। এখন মাছের দামও অনেক কম। বিভিন্ন চাতালে শুঁটকি তৈরিতে ব্যস্ত শত শত নারী-পুরুষ। প্রতিটি চাতালে ৮ -১০ জন শ্রমিক কাজ করছেন। তবে এ কাজে নারী শ্রমিকরাই বেশি দক্ষ বলে জানান ব্যবসায়ীরা। এ কারণে চাতালগুলোতে নারী শ্রমিকই বেশি। ব্যবসায়ীরা জানান, এখন মহিষলুটি মাছের আড়তে পুঁটি মাছ ৭০ থেকে ৮০ টাকা, চাঁদা ৫০থেকে ৮০ টাকা, খলিশা ৫০ থেকে ৫৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। ৪০ কেজি কাঁচা মাছ শুকালে ১৫ কেজি শুঁটকি হয়। শুঁটকি মাছের মোকাম সৈয়দপুর, নীলফামারী, রংপুরে। প্রকারভেদে প্রতি মণ শুঁটকি ১৫ হাজার থেকে ২৫ হাজার টাকা দরে বিক্রি হয়। চলন বিলের অনেক নারী ও পুরুষ শ্রমিক,এখন শুটকি তৈরি চাতালে কাজ আর্থিক দিক দিকে এখন লাভবান হচ্ছে।
শুটকি ব্যবসায়ী রেজাউল করিম জানান, এ ব্যবসায় অনেক লাভ হয়। তাছাড়া দেশব্যাপী চলনবিলের মাছের শুটকির ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। পানি কমার সঙ্গে সঙ্গে বিল এলাকায় এ বছর প্রচুর পরিমাণে টেংরা, পুঁটি, খলশে, বাতাসী, চেলা, মলা, ঢেলা, টাকি, চিংড়ি, বোয়াল, চিতল, শিলং, রুই, কাতলাসহ বিভিন্ন ধরনের মাছ পাওয়া যাচ্ছে। এখন এই এলাকায় মাছের দামও অনেক কম থাকায় ব্যবসায়ীরা ব্যস্ত হয়ে পড়েছে শুটকি তৈরিতে। মাছগুলো চাতালে নেওয়ার পর বাজারজাত করতে মাসখানেক সময় লাগে। সারাদেশেই এই শুটকি বাজারজাত করা হয়।তাড়াশ উপজেলার মহিষলুটি ও মান্নান নগর এলাকার আবদুল মালেক, দুলাল হোসেন , নুর ইসলামসহ কয়েক জেলে জানান, শুকনো মৌসুমে তারা ক্ষেতে-খামারে মজুর খাটেন। তবে বর্ষা মৌসুমে কাজ না থাকায় রাতভর খরা জাল, বড়শি,ও দাউনা দিয়ে চলনবিল থেকে মাছ শিকার করেন। অনেকে মাছ শিকারের পর আড়তে বিক্রি করেন। সেই মাছগুলো যায় শুটকির চাতালে।