দেখলে মনে হবে, ভরা বিল বা পুকুরে মাছ ধরতে জাল নিয়ে নেমেছে লোকজন। আসলে তা নয়। ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে বরিশালে রেকর্ড পরিমাণ বৃষ্টিপাতের কারণে বরিশাল নগরীর সিংহভাগ ডুবে যায়। নগরীর রাস্তাঘাট, মাছের পুকুর, ডোবা সর্বত্র থই থই করছে পানি। ফলে ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাব কেটে যাওয়ার পরথেকেই পানিবন্দী নগরে সড়কে মাছ শিকারে নেমেছিলেন শৌখিন মৎস্য শিকারিরা।
প্রবল বৃষ্টিপাত ও শহর সংলগ্ন কৃর্তনখোলা নদীর পানি বেড়ে যাওয়ায় সদর রোড, নগরীর সদর রোড, আগরপুর রোড, গোরস্থান রোড, মুন্সি গ্যারেজ, বাংলাদেশ ব্যাংক, দ্বীনবন্ধু সেন সড়ক, অক্সফোর্ড মিশন রোড, কালুশাহ সড়ক, বটতলা, হাতেম আলী চৌমাথা, বাংলাবাজার, কলেজ অ্যাভিনিউ, কলেজ রো, ফকিরবাড়ি, কালীবাড়ি, ব্রাউন কম্পাউন্ড, বৈদ্যপাড়া, কাজীপাড়া, বগুরা রোড, কাউনিয়া, পলিটেকনিক সড়ক, বাংলাবাজার, আমানতগঞ্জ, পলাশপুর, রুপাতলী হাউজিং, কালিজিরা, নথুল্লাবাদ, নজরুল ইসলাম সড়ক, মেডিক্যাল কম্পাউন্ডসহ নগরীর অধিকাংশ এলাকায় এলাকার বসতবাড়ির ও দোকান পাটের আঙিনা ও রাস্তায় দুই থেকে তিন ফুট পানি জমে যায়। নগরীর পুকুর, খাল ও ডোবার পানির সঙ্গে বৃষ্টির পানি মিশে হয় একাকার। ফলে পুকুর, ডোবা ও খালের মাছ উঠে আসে সড়ক ও বাসা-বাড়ির আঙিনায়। তখন জলাবদ্ধতার দুর্ভোগ ভুলে মাছ শিকারে পাড়ায় পাড়ায় কিশোর-যুবকেরা নেমে পড়ে সড়কে। যে যেমন পেরেছে জালসহ নানা উপকরণ নিয়ে মাছ ধরেছে। গতকাল মঙ্গলবার (২৫ অক্টোবর ) মধ্যে রাত পর্যন্ত এ চিত্র দেখা গেছে বিভিন্ন সড়ক ও বাসা-বাড়ির আঙিনায়।
গত মঙ্গলবার রাত সরেজমিনে দেখা যায়, গতকাল নগীর গোস্থান রোড, নবগ্রাম রোড, রুপাতলি হাউজিং এলাকায় ঝাকি জাল দিয়ে মাছ শিকার করছে কিছু যুবক। এছাড়াও বিএম কলেজের ক্যাম্পাস ও পার্শ্ববর্তী রাস্তায় কোঁচ দিয়ে মাছ শিকার করছেন কিছু যুবক। আবার কেউ কেউ দেশীয় অস্ত্র দা নিয়ে বের হয়েছেন মাছ শিকারে। তবে সিএন্ডবি রোড সেন্টাল হাসপাতালের সংলগ্ন সড়কের চিত্র আরও চিত্তাকর্ষক। সেখানে গতকাল রাত ১১ টার পর্যন্ত উৎসবের আমেজে ঝাকি জাল নিয়ে মাছ ধরতে নেমেছেন কয়েকজন যুবক। সবার মাছের টোপলাতেই জমা পড়েছে বেশ কিছু মাছ। আর এসব দেখতে ফুটপাতে ভিড় জমিয়েছেন উৎসুক জনতারা।
গোস্থান রোডের বাসিন্দা রফিকুল ইসলাম (পল্টু) জানান, ‘সকাল সাতটায় বাসার সামনে পানিতে মাছ দেখতে পাই। এরপর জাল নিয়ে বের হই। বেশ কিছু তেলাপিয়া মাছ পেয়েছি। আমি নামার পর আমার সাথে আরও অনেকে মাছ শিকারে নামে।
গতকাল মধ্য রাত পর্যন্ত চলছিল মাছ ধরার উৎসব। এরপর আস্তে আস্তে পানি কমতে থাকলে মাছ শিকারিরাও ফিরে যান নিজগৃহে ।