মুন্সীগঞ্জে কিস্তির ঋণ কেড়ে নিল আয়ার প্রাণ। একটি কিন্ডারগার্টেন স্কুলের আয়ার চাকুরী করেন আয়শা বেগম।
বৃহস্পতিবার সকাল ৭টা’র দিকে মাঠপাড়া এলাকার ব্রিলিয়ান্ট ক্যাডেট কেজি স্কুলের ভেতর থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় তার লাশ দেখতে পেয়ে স্থানীয়রা পুলিশকে খবর দেয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে আয়শার (৬৫) লাশ উদ্ধার করে।
স্থানীয়রা জানায় একাধিক কিস্তির টাকা পরিশোধ করতে না পারার কারণে সে এই পথ বেঁছে নিয়েছে। অভাব, আর অনটন যেনো লেগেই ছিল আয়শার জীবন। দশ বছর পূর্বে স্বামী হারিয়েছেন আয়শা। স্বামী হারানোর পর থেকে অভাব যেন তার পিছু ছাড়েনি। ছেলে সন্তান ভাই বোন থেকেও আয়শা বেগম ছিল অসহায়। এই টানা টানির সংসারে বৃদ্ধা বয়সেও চাকুরী করে গেছেন। অবশেষে গলায় রশি দিয়ে আত্মহত্যা করে বুঝিয়ে গেল অভাব কাকে বলে। অভাবের অপর নাম মৃত্যু।
প্রতিদিনের ন্যায় আয়শা তার কর্মস্থলে আসলেও গতকাল বাড়ি না গিয়ে বিদ্যালয়ে অবস্থান করে। শিক্ষকরা বিদ্যালয়ে আসলে আয়শার ঝুলন্ত লাশ দেখতে পেয়ে পুলিশকে খবর দেয়। পুলিশ ঘটনাস্থলে সাড়ে আটটায় লাশ হাসপাতাল মর্গে পাঠায় ।
বৃদ্ধা বয়সে ক্ষুধার যন্ত্রনা আর এক কিস্তির টাকা দিয়ে আরেক কিস্তি লোন পরিশোধ যেন মরণ ফাঁদ হয়ে গেছে আয়শার জীবনে। মৃত নুরুমিয়ার (নুরা) স্ত্রী আয়শা বেগ, মুন্সীগঞ্জ পৌসভার ৮ নং ওয়ার্ডের যোগনিঘাট এলাকার বাসিন্দা। তাহার ২ ছেলে, বড় ছেলে বিদেশে কাজ করেন ছোট ছেলে দেশেই হাতের কাজ করে ব্যবসা করেন।
স্থানীয়রা জানায়, মায়ের কোন খোঁখবর নেয় না। বড় পুত্র বধুর বিভিন্ন রকমের চাপে ইতিমধ্যে বিষ পানে মরতে চেয়েছেন কয়েকবার। এলাকার লোকজনের সহায়তায় ঐ সময় রক্ষা পায়।
আয়শার বাবার বাড়ীও একই এলাকায়, আয়শার ওয়ারিশ তাহার ভাইয়েরাও আত্মসাৎ করেছে। ভাইয়েরাও আয়শা বেগমের কোন খোজ খবর রাখতো না। আয়শা বেগমের নামে প্রায় ১৫/২০ টি কিস্তির লোন ছিলো। পৌরসভার যোগিনীঘাট এলাকার মৃত নুর হোসেনের স্ত্রী আয়েশা বেগম (৬০), স্কুলের নামাজ রুমের দরজার সাথে প্লাস্টিকের রশি গলায় পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেন। পারিবারিক কলহ এবং কিস্তির ঋণ পরিশোধ নিয়ে তিনি আত্মহত্যা করে থাকতে পারেন।
এ বিষয় মুন্সীগঞ্জ সদর থানার এসআই ফাইজুল বলেন, সকাল আটায় ঘটনার বিষয় জানতে পারি, সাড়ে আটায় লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্ত করার জন্য হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছি। কোন মামলা বা অভিযোগ করতে কেউ আসে নাই। লাশের স্বজদের খবর দিয়ে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে বলে এস আই ফাইজুর জানান ।