× প্রচ্ছদ বাংলাদেশ বিশ্ব রাজনীতি খেলা বিনোদন বাণিজ্য লাইফ স্টাইল ভিডিও সকল বিভাগ
ছবি ভিডিও লাইভ লেখক আর্কাইভ

রংপুরে টাকা ফেরত নিলেন জেলা পরিষদ সদস্য আলতাব

রংপুর ব্যুরো

০৩ নভেম্বর ২০২২, ০৯:০১ এএম

রংপুর জেলা পরিষদ নির্বাচনে সদস্য পদে নির্বাচিত হয়েও ভোটারদের (ইউনিয়ন পরিষদের জনপ্রতিনিধিদের) কাছ থেকে টাকা ফেরত নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে আলতাব হোসেনের বিরুদ্ধে।

বৃহস্পতিবার দুপুরে উপজেলার টেপামধুপুর ইউনিয়ন পরিষদে এমন অভিযোগ তোলেন ইউনিয়ন পরিষদ সদস্যরা। 

টাকা ফেরত চেয়ে ইউনিয়ন পরিষদ সদস্যদের হুমকি ও ভয়ভীতি দেখানো হয়। জেলা পরিষদের সদস্য আলতাব হোসেনের এই কর্মকাণ্ড নিয়ে উপজেলা জুড়ে চলছে আলোচনা-সমালোচনা। 

উপজেলার টেপামধুপুর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য ইউনুস আলী বলেন, ভোটের আগের রাত সাড়ে তিনটার দিকে আলতাব হোসেন আমার বাড়ি আসে। এরপর তাকে ভোট দেওয়ার জন্য চেয়ারম্যানকে ১ লাখ এবং পুরুষ ও নারী সদস্যদের ৫০ হাজার করে টাকা দেন। নির্বাচনের পরের দিন চেয়ারম্যানসহ সকলের কাছ থেকে চাপ প্রয়োগ করে টাকা ফেরত নিয়েছেন। 

প্যানেল চেয়ারম্যান ও সদস্য আবুল কাশেম বলেন, আলতাব ভোটে জেতার পর ফোনে চেয়ারম্যানকে অকথ্য ভাষায় গালাগালিজ করে এবং সবাইকে টাকা ফেরত দিতে বলেন। পরে আলতাবকে ডেকে ইউনিয়ন পরিষদ ভবনের দ্বিতীয় তলায় চেয়ারম্যানের উপস্থিতিতে আমরা সবাই তাকে টাকা ফেরত দিয়েছি। 

সদস্য আব্দুল মতিন বলেন, ভোট কেনার জন্য ৫০ হাজার  টাকাসহ মিষ্টি এবং শাড়ি-পাঞ্জাবির টাকাও ফেরত দিয়েছি আমরা সবাই আলতাবকে।

সদস্য রফিকুল ইসলাম বলেন, আলতাবের কাছ থেকে ভোটের জন্য আমরা কেউ টাকা চাইনি। আলতাব নিজেই ইউনুস আলী মেম্বারের বাড়ীতে আমাদেরকে ডেকে নিয়ে জোড় করে তাকে ভোট দেয়ার জন্য ৫০ হাজার  করে টাকা দিয়েছিল। ভোটে জেতার পরও আমরা নাকি তাকে ভোট দেই নাই এমন অভিযোগ তুলে আমাদের কাছ থেকে টাকা ও শাড়ি-পাঞ্জাবি ফেরত চান। টাকা ফেরত না দিলে আমাদেরকে অপদস্থ করা হবে। সম্মানের ভয়ে আমরা সবাই টাকা ফেরত দিয়েছি। 

একই ইউনিয়ন পরিষদের নারী সদস্য রুহি বেগম বলেন, শুধু নগদ টাকাই নয়, ভোটের আগে দেয়া মিষ্টি, বাড়ির বাচ্চাদের জন্য দেয়া উপহার সামগ্রী এবং পাঞ্জাবি-শাড়িও ফেরত নিয়েছেন আলতাফ।

তিনি আরও বলেন, আমরা এলাকার মানুষের ভোটে নির্বাচিত হয়েছি। জেলা পরিষদ নির্বাচনে আমার ভোট বিক্রি করা সঠিক হয়নি বললেও আমরা এই ভোট বাতিলের দাবি জানাই।

তবে টেপামধুপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রাশেদুল ইসলাম ভোট বেচা কেনার টাকা ফেরত দেয়ার বিষয়ে মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানান। 

এদিকে টাকা ফেরত চেয়ে কাউনিয়া উপজেলার হারাগাছ ইউনিয়নের ৪, ৫ ও ৬নং ওয়ার্ডের সংরক্ষিত নারী সদস্য মোর্শেদা বেগমের স্বামী রফিকুল ইসলামের সঙ্গে জেলা পরিষদ সদস্য আলতাব হোসেনের কথোপকথনের একটি অডিও ক্লিপ ভাইরাল হয়েছে। এ ঘটনায় জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন দফতরে অভিযোগ দিয়েছেন নারী ইউপি সদস্য মোর্শেদা বেগম।

মোর্শেদা বেগম বলেন, জেলা পরিষদ নির্বাচনের আগের রাতে আলতাব আমাকে জিম্মি করে তার প্রতীকে ভোট দেওয়ার জন্য জোর করে ৫০ হাজার টাকা দেন। তাকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করা হয়। কিন্তু নির্বাচনে জয়লাভের পর ওই টাকা ফেরত চেয়ে চাপ দিতে থাকেন আলতাব। ওই টাকা না দেওয়ায় স্থানীয় বকুলতলা বাজারে সবার সামনে আমি লাঞ্ছিত হই।

এদিকে রংপুর জেলা পরিষদের নির্বাচিত সদস্য আলতাব হোসেন বলেন, আমি নির্বাচন করেছি। নির্বাচনে আমি দিনে-রাতে জনপ্রতিনিধি ভোটারদের দ্বারে দ্বারে গিয়ে ভোট চেয়েছি। তারা আমাকে সম্মানিত করেছে। আমি কাউকে টাকা দেই নাই, কারও কাছে টাকা ফেরতও চাইনি। যারা টাকা ফেরতের প্রসঙ্গে কথা বলছে তারা পরাজিত প্রার্থীর কথায় জেলা পরিষদ নির্বাচন প্রশ্ন বিদ্ধ করার পায়তারা করছে।

উপজেলা নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছর ১৭ অক্টোবর রংপুর জেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে কাউনিয়া উপজেলা তথা (২নং ওয়ার্ডে) সদস্য প্রার্থী ছিলেন আলতাব হোসেন, গোলাম সারোয়ার বাবু ও মিজানুর রহমান মিজান । নির্বাচনে ৫২ ভোট পেয়ে আলতাব হোসেন সদস্য নির্বাচিত হন। তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী গোলাম সারোয়ার ৪০ ভোট ও মিজানুর রহমান মিজান ১ ভোট পান।

Sangbad Sarabela

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর

যোগাযোগ: । 01894-944220 । [email protected], বিজ্ঞাপন: 01894-944204

ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।

আমাদের সঙ্গে থাকুন

© 2024 Sangbad Sarabela All Rights Reserved.