× প্রচ্ছদ বাংলাদেশ বিশ্ব রাজনীতি খেলা বিনোদন বাণিজ্য লাইফ স্টাইল ভিডিও সকল বিভাগ
ছবি ভিডিও লাইভ লেখক আর্কাইভ

লক্ষ্মীপুরে বছরে ১২ হাজার ৮৬২ টন সুপারি উৎপাদন

লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি

০৭ নভেম্বর ২০২২, ০৩:১৩ এএম । আপডেটঃ ০৭ নভেম্বর ২০২২, ০৩:৩১ এএম

উপকূলীয় জনপদ লক্ষ্মীপুরে সবচেয়ে বেশি সুপারি উৎপাদন হয়। এখানকার সুপারি দেশের সীমানা ছাড়িয়ে বিদেশেও রপ্তানি হয় জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।

লক্ষ্য করা গেছে, লক্ষীপুরের সুপারি বড়বাজার দালাল বাজার হায়দারগঞ্জ রায়পুর ও লক্ষ্মীপুর উত্তর তেহমুনী সব চেয়ে বড় বাজার বসে।বর্তমান সময় সুপারি ব্যবসায়ীরা সুপারি কিনে বস্তাভরে প্রক্রিয়াজাত করছেন।চাষীরা দরকষাকষি করে ব্যবসায়ীদের কাছে সুপারি বিক্রি করছেন। সুপারি প্রতি পণ বিক্রি হচ্ছে ১১০-১২৫ টাকায়। প্রতিটি কাহন (১৬ পণ) সুপারি এখন বিক্রি হচ্ছে ২২শ থেকে ২৪ শ ৫০ টাকায়। 

এ ছাড়া লক্ষীপুরের রায়পুর উপজেলা হায়দারগঞ্জ -মোল্লার হাট-রাখালিয়া বাজার- সদর উপজেলা পোদ্দার বাজার- বশিক পুর পাটওয়ারি হাট -  সোনাপুর সমবয় বাজার -জকসিন-চন্দ্রগ্জ ও ভবানীগঞ্জ -রামগঞ্জ উপজেলার মিরগঞ্জ রামগঞ্জ বাজারসহ কমলনগর ও রামগতি উপজেলার আলেকজান্ডার -চরফলকন তোরাবগঞ্জ বাজার ও রামগতি উপজেলার বিভিন্ন স্থানে সুপারি ক্রয়- বিক্রি হয় জমজমাট।

গত বছর সুপারিতে ৯৫ লক্ষ টাকা বিনিয়োগ করে পাঁচ হাজার ৫০০কাহন সুপারি ক্রয় করেন দালাল বাজার এলাকার ব্যবসায়ী আমজাদ হোসেন।একি বছর জেলার বিভিন্ন স্থানে সুপারি ক্রয় - বিক্রি করে তিনি লাভ করেন ১৯ লাখ  টাকার উপরে।তিনি বলেন লক্ষীপুর জেলা সুপারির ব্যপক চাহিদা এ জেলা সুপারির উৎপাদন আগের তুলনায় অনেক বেশি। তাই আশানুরূপ দাম পাচ্ছেন না। 

 উপকূলীয় এ জেলার প্রতিটি বাড়ির আঙিনা, পতিত ও ফসলি জমিতে সুপারি বাগান রয়েছে। এ জেলায় বছরে কোটি কোটি টাকার সুপারি বাণিজ্য হয়। অনুকূল আবহাওয়া ও রোগবালাই মুক্ত পরিবেশ হওয়ায় প্রতি বছরই সুপারি উৎপাদন বাড়ছে। বছরজুড়েই সুপারির ব্যাপক চাহিদা থাকায় বাণিজ্যিকভাবে দেশের বিভিন্ন জেলার পাশাপাশি সরবরাহ হচ্ছে মধ্যপ্রাচ্যের কয়েকটি দেশে। এবার সুপারিতে প্রায় ৬০০ কোটি টাকার বাণিজ্যের সম্ভাবনা রয়েছে। তবে সুপারির দাম নিয়ে অনেকটা হতাশ কৃষক।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, জেলার পাঁচটি উপজেলায় এবার সাত হাজার হেক্টর জমিতে সুপারি উৎপাদন হবে ১৭ হাজার টন, যার বর্তমান বাজারমূল্য প্রায় ৬০০ কোটি টাকা। সে হারে গত ১০ বছরের তুলনায় চলতি বছর ৪ হাজার ১৩৮ টন উৎপাদন বেড়েছে।

২০১০-১১ অর্থবছরে জেলার পাঁচটি উপজেলায় ৬ হাজার ২০ হেক্টর জমিতে ১২ হাজার ৮৬২ টন সুপারি উৎপাদন হয়। সে তুলনায় ২০২০-২১ অর্থবছরে এসে সাত হাজার হেক্টর জমিতে প্রায় ১৭ হাজার টন সুপারি উৎপাদন হয় এ অঞ্চলে। পাঁচ বছরে এখানকার উৎপাদিত সুপারি থেকে ৩০০ কোটি টাকা আয় হলেও চলতি বছর দ্বিগুণ আয়ের সম্ভাবনা দেখছেন সংশ্লিষ্টরা।

এক মাস ধরে বাগান থেকে জেলার বাজারগুলোতে পাকা সুপারি কৃষকরা আনতে শুরু করেছেন। এ অঞ্চলের সুপারি সাইজে বড় ও সুস্বাদু হওয়ায় জেলার বাইরে সুপারির চাহিদা বেশি। এখন জমজমাট বেচা-কেনা চলছে লক্ষ্মীপুরের বাজারগুলোতে।

৫ ও ৭ নভেম্বর লক্ষ্মীপুরের সুপারির বড় বাজার দালাল বাজার ও লক্ষ্মীপুর উত্তর তেমুহনী সুপারিবাজার ঘুরে দেখা যায়, বিভিন্ন স্থান থেকে আগত বেপারিরা সুপারি কিনে বস্তা ভরছেন। চাষীরাও দরকষাকষি করে সুপারি বিক্রি করছেন। প্রতি পণ (৮০টি) সুপারি বিক্রি হচ্ছে ১২০-১২৫ টাকায়। মান ভালো হলে বিক্রি হচ্ছে ১৩০-১৪০ টাকায়। প্রতি কাহন (১৬ পণ) সুপারি এখানে বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার থেকে ২ হাজার ২৪০ টাকায়।

এছাড়া জেলার রায়পুর উপজেলার মোল্লার হাট, রাখালিয়া বাজার, সদর উপজেলার জকসিন, চন্দ্রগঞ্জ ও ভবানীগঞ্জ, রামগঞ্জ উপজেলার মিরগঞ্জ, রামগঞ্জ বাজারসহ কমলনগর ও রামগতি উপজেলার বিভিন্ন স্থানে সুপারির জমজমাট হাট বসে। 

সরজমিনে গিয়ে দেখা গেছে রায়পুর ও মান্দারীর একাধিক    ব্যবসায়ী  জানায়, এবার প্রতিটি সুপারি দেড় থেকে ২ টাকা দিয়ে কিনতে হচ্ছে। প্রতি পোন (৮০টি) সুপারি ১৩০-১৮০ টাকা পর্যন্ত বেচাকেনা হয়। 

গত বছর সুপারিতে ১ কোটি টাকা বিনিয়োগ করে ছয় হাজার কাহন সুপারি ক্রয় করেন লক্ষ্মীপুর পৌর শহরের বাসিন্দা (সুপারি বেপারি) আলমগীর হোসেন। ওই বছর জেলার বাইরে সুপারি সরবরাহ করে তিনি প্রায় ২০ লাখ টাকা লাভ করেন। তিনি বলেন, এ অঞ্চলের সুপারির ব্যাপক চাহিদা। তবে এবার চাহিদার তুলনায় সুপারির উৎপাদন বেশি, তাই দাম একটু কম। তবুও লাভের আশায় সুপারি কেনা-বেচা করছেন তিনি।

 তবে আশানুরূপ বৃষ্টি না হওয়ায় এ বছর সুপারির আকার অনেকটা ছোট। বেশি দামে কিনলেও পরে বিক্রি করতে গেলে দাম কমে যাওয়ার শঙ্কা করছেন ব্যবসাহীরা।

সুপারির ওপর অনেক মানুষের জীবন-জীবিকা নির্ভর করে।
জেলা কৃষি বিভাগ জানায়, মেঘনা উপকূলীয় জেলা লক্ষ্মীপুরে সাত হাজার ২০০ হেক্টর জমিতে সুপারি বাগান রয়েছে। বর্তমান বাজারমূল্যে এবার সুপারি থেকে হাজার কোটি টাকা আয়ের সম্ভাবনা রয়েছে। গেল বছর প্রায় ৫৫০ কোটি টাকা আয় করেছে লক্ষ্মীপুরের কৃষক ও ব্যবসায়ীরা।

স্থানীয়ভাবে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, অক্টোবর থেকে জানুয়ারি পর্যন্ত লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ, রায়পুর ও সদর উপজেলার প্রতিটি পাড়া-মহল্লা সুপারি কেনাবেচা হয়।
চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে পাইকাররা লক্ষ্মীপুরে এসে সুপারি কিনে নানাপ্রান্তে নিয়ে যান। সেখান থেকে আবার বিদেশও পাঠাচ্ছেন আড়তদাররা। সাধারণত সুপারি কাঁচা, ভেজা ও শুকিয়ে বিক্রি করা হয়।

 উপকূলীয় এ জেলার প্রতিটি বাড়ির আঙিনা, আশে পাশের অনাবাদি জমিতে মাটি ভরাট করে সুপারির চারা রোপন করেন চাষিরা
 ফসলি জমিতে সুপারি বাগান রয়েছে। এ জেলায় বছরে কোটি কোটি টাকার সুপারি বাণিজ্য হয়। অনুকূল আবহাওয়া ও রোগবালাই মুক্ত পরিবেশ হওয়ায় প্রতি বছরই সুপারি উৎপাদন বাড়ছে। সারাবছর সুপারির ব্যাপক চাহিদা থাকায় বাণিজ্যিকভাবে দেশের বিভিন্ন জেলার পাশাপাশি সরবরাহ হচ্ছে মধ্যপ্রাচ্যের কয়েকটি দেশে। এবার সুপারিতে প্রায় ৬০০ কোটি টাকার বাণিজ্যের সম্ভাবনা রয়েছে। তবে সুপারির দাম নিয়ে অনেকটা হতাশ কৃষক।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, জেলার পাঁচটি উপজেলায় এবার সাত হাজার হেক্টর জমিতে সুপারি উৎপাদন হয় ১৭ হাজার টন, যার বর্তমান বাজারমূল্য প্রায় ৬০০ কোটি টাকা। সে হারে গত ১০ বছরের তুলনায় চলতি বছর ৪ হাজার ১৩৮ টন উৎপাদন বেড়েছে।

২০১০-১১ অর্থবছরে জেলার পাঁচটি উপজেলায় ৬ হাজার ২০ হেক্টর জমিতে ১২ হাজার ৮৬২ টন সুপারি উৎপাদন হয়। সে তুলনায় ২০২০-২১ অর্থবছরে এসে সাত হাজার হেক্টর জমিতে প্রায় ১৭ হাজার টন সুপারি উৎপাদন হয় এ অঞ্চলে। পাঁচ বছরে এখানকার উৎপাদিত সুপারি থেকে ৩০০ কোটি টাকা আয় হলেও চলতি বছর দ্বিগুণ আয়ের সম্ভাবনা দেখছেন সংশ্লিষ্টরা।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ড. মো. জাকির হোসেন বলেন, এ অঞ্চলে সুপারির  একটি গবেষণা কেন্দ্র স্থাপন করলে দেশের অর্থনীতিতে আরো সহায়ক ভূমিকা রাখবে। 

Sangbad Sarabela

সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর

যোগাযোগ: । [email protected] । বিজ্ঞাপন ও বার্তা সম্পাদক: 01894944220

ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।

আমাদের সঙ্গে থাকুন

© 2025 Sangbad Sarabela All Rights Reserved.