লামার রাবার ইন্ডাস্ট্রির অত্যাচার নিপীড়নের শিকার হয়েছেন রেংয়েন কারবারী পাড়াসহ তিন গ্রামের অর্ধ শতাধিক মানুষ। ৪০০ একর জায়গা দখল নিতে মরিয়া হয়ে উঠে পড়েছে রাবার ইন্ডাস্ট্রির কোম্পানি।
একাধিক তান্ডব চালিয়ে তিন শতাধিক গ্রামের মানুষকে পথে বসিয়েছেন রাবার কোম্পানি। অভিযোগ উঠেছে রেংয়িন পাড়া গ্রামের ৯টি বাড়িতে অগ্নিসংযোগ, হামলা ও লুটপাট করেছে লামা রাবার ইন্ডাস্ট্রির ।
গতকাল রবিবার রাতে লামা রাবার ইন্ডাস্ট্রিজ'র দ্বায়িত্ব প্রাপ্ত দেলোয়ার, নুরু ও মহসিনের নেতৃত্বে বাগানের শ্রমিক ও ৪ ট্রাক বহিরাগত ভাড়াটেসহ প্রায় ২শত জনের অধিক মিলিত হয়ে অগ্নি সংযোগ, হামলা, ভাংচুর ও লুটপাট চালানো হয় রেংয়েন পাড়া গ্রামে। এছাড়াও দুইঠেঙ ম্রো, রেঙনক, রেংইয়ুঙ ম্রো, লাংরুঙ, চিতলিত ম্রো ও ইয়ংরিঙ ম্রো’র ঘর ও ঘরের সোলার-ব্যাটারিসহ জিনিসপত্র ভেঙ্গে চুরমার করে দেয়। ঘটনাস্থলে বেশ কয়েকজন গ্রামবাসীকে মারধর ও গৃহপালিত পশুসহ, চাউল -ডাল পর্যন্ত চুরি করে নিয়ে গেছে এই হামলাকারীরা।
ভুক্তভোগীরা হলেন, চামরুম ম্রো, চিংচ্যং ম্রো, রেঙয়িং ম্রো, লাংনক ম্রো, তারা সরই ইউনিয়নের রেংঙয়িং কারবারি পাড়ার বাসিন্দা।
প্রত্যক্ষদর্শী রেঙয়িন কারবারী জানান, লামা রাবার ইন্ডাস্ট্রিজ’র কয়েকশ লোক গভীর রাতে এসে গ্রামের ভিতর তান্ডব চালায়। এসময় ৭টি বাড়িতে আগুন দেয়। শুধু তাই নয় আমাদের পালিত পশু ছাগল,মুরগীসহ ব্যবহৃত মোবাইলে চুরি করে নিয়ে যায়। আমরা এখন দিশেহারা। পাশ্ববর্তী লাংক পাড়া গ্রাম প্রধান( কারবারী ) লাংক ম্রো জানান, তিনটি ট্রাকে করে প্রায় ৩শত মত লোক এসে আগুন দিয়ে ৯টি পরিবারের ঘর পুড়িয়ে দেয়। পূড়ে গেছে। তারা সবাই লামা রাবার ইন্ডাস্ট্রির কোম্পানি লোক বলে জানান তিনি।
গত বছর (২০২২) ৯ এপ্রিল থেকে লামা রাবার ইন্ডাস্ট্রিজ সরই ইউনিয়নের রেংয়েন কারবারী (ম্রো) পাড়া, লাংকম কার্বারী (ম্রো) পাড়া ও জয়চন্দ্র ত্রিপুরা পাড়াবাসীদের ভোগদখলীয় ৪০০ একর জুমভূমি জবরদখলের চেষ্টা চালিয়ে আসছে। ইতোমধ্যে আগুন দিয়ে জুমভূমি পুড়িয়ে দেওয়া, পানির উৎসে বিষ প্রয়োগ, ভূমি রক্ষা আন্দোলনের নেতার ওপর হামলা, মিথ্যা মামলাসহ বিভিন্ন উৎপীড়নমূলক কর্মকাণ্ড চালিয়ে পাড়াবাসীদের উচ্ছেদের চেষ্টা চালিয়েছে রাবার কোম্পানির লোকেরা। তাদের এই কর্মকাণ্ডের হাজার অভিযোগ রয়েছে।
সরই ইউপি চেয়ারম্যান মো.ইদ্রিজ কোম্পানী বলেন, রাতে আগুন দিয়েছে সেটা শুনেছি। কিন্তু রাবার মালিক পক্ষ অস্বীকার করেছে তাদের তাদের এই অভিযোগ। ইউপি থেকে কোন প্রকার সহযোগিতা করেছেন কিনা এব্যাপারে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, এখনও ইউনিয়ন থেকে কোন সহযোগীতা করতে পারছিনা। ব্যাক্তিগত ভাবে সহযোগীতা করা যেতে পারে। তবে আমি এখন ঢাকায়। এ ব্যাপারে লামা রাবার ইন্ডাস্ট্রির কোম্পানি কামাল সাথে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
লামা থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি শহিদুল ইসলাম জানান, অগ্নিসংযোগ ঘটনাটি ব্যাপারে আমি নলেজে নাই। খোজ নিয়ে জানাচ্ছি। লামা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মোস্তফা জাবেদ কায়সার বলেন, গতকাল আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ঘটনাটি ব্যাপারে জানিয়েছেন। লিখিত একটা অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে সহযোগীতা ব্যাপারে আমরা চেষ্টা চালাচ্ছি।