বিএনপির গণসমাবেশ ঘিরে বাংলাদেশে রাজনীতির মাঠ উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। বিএনপিকে ঠেকাতে সতর্ক পাহারার নামে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা রাজধানী কেরানীগঞ্জের বিভিন্ন স্থানে মহড়া শুরু করেছে। মিছিল, স্লোগান দিয়ে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মোড়ে মোড়ে অবস্থান নিতে দেখা গেছে। এ পরিস্থিতিতে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ঢাকা-মাওয়া মহাসড়ক, গুলিস্তান-বান্দুরা আঞ্চলিক মহাসড়কে উত্তাপ আরও বাড়িয়ে দেবে বলেই শঙ্কা বাড়ছে সাধারণ মানুষের মধ্যে।
কেরানীগঞ্জ দক্ষিণ ও মডেল থানা আওয়ামী লীগের সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার রাত থেকে কেরানীগঞ্জ দক্ষিণ ও মডেল থানা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা বিভিন্ন স্থানে মিছিল সহকারে অবস্থান নেন। এর মধ্যে কদমতলি গোলচত্বর অস্থায়ী ক্যাম্প করে নেতাকর্মীদের একটি দল পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে। মিছিল দেখা গেছে শুভঢ্যা, আগানগর, হযরতপুর, শাক্তা, রামেরকান্দা, হাসনাবাদ এলাকাগুলোতে। এছাড়াও পিকআপে চড়ে বিভিন্ন স্লোগান দিতে দিতে এলাকায় ঘুরছেন নেতাকর্মীরা। ‘শেখ হাসিনার ভয় নাই, রাজপথ ছাড়ি নাই’, ‘কেরানীগঞ্জের মাটি বিপু, শাহীনের খাঁটি, ‘বিএনপির দালালেরা হুঁশিয়ার, সাবধান’ এসব স্লোগান দিতে শোনা যায়। পাশাপাশি মহাসড়কের সঙ্গে উপজেলার বিভিন্ন সংযোগ সড়ক ও আঞ্চলিক সড়কেও অবস্থান নিয়েছেন পুলিশ সদস্যরা। যাত্রীবাহী দূরপাল্লার বাস ছাড়াও লোকাল বাস, মাইক্রোবাস, ট্রাক, ব্যক্তিগত গাড়ি, পিকআপ ভ্যান ও মোটরসাইকেলে তল্লাশি চালাতে দেখা গেছে পুলিশের। এছাড়া পদ্মাসেতু পাড় হয়ে কেরানীগঞ্জে আসার পথে বঙ্গবন্ধু মহাসড়কের পলাশপুর সড়ক এলাকাতেও চেক পোস্ট বসানো হয়েছে। মহাসড়কে তল্লাশি চালানোর যৌক্তিকতা তুলে ধরে পুলিশ দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি শাহ জামান বলছে, বিএনপির সমাবেশের নামে কোনো ধরনের নাশকতার ঘটনা যেন না ঘটে, এ জন্য এসব তল্লাশিচৌকি বসিয়েছে পুলিশ।
বাগেরহাটের উদ্দেশ্যে রওনা হওয়া সালাউদ্দিন নামে এক যাত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ যদি মিছিল মিটিং করতে পারে, তবে বিএনপি কেন সমাবেশ পারবে না? সমাবেশ তো ঢাকার পল্টনে, এর জন্য আমরা সাধারণ মানুষ কেন ভোগান্তির শিকার হব? পুলিশের এই বাড়াবাড়ির কোনো মানে হয় না। ধলেশ্বরী টোলপ্লাজা এলাকায় রতন সরকার বলেন, আমার কর্মস্থল ঢাকা। যে পরিস্থিতি মনে হচ্ছে হেঁটেই ওই পর্যন্ত যেতে হবে। পুলিশের এই চেকপোস্টের কারণে জনসাধারণের মধ্যে ভীতিকর অবস্থা তৈরি হয়েছে। মানুষের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। বরিশাল সদর থেকে সমাবেশে যোগ দিতে এসেছেন সাইফুল শিকদার। তিনি জানান, বাস বন্ধ থাকায় তিনি ট্রাকে করে সমাবেশে যোগ দিতে এসেছেন। আসার পথে পদ্মা ব্রিজ এলাকায় পুলিশ তাদের ট্রাক চেক করে। পরে ছেড়ে দেয়।
দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানা যুবলীগের সভাপতি মাহমুদ আলম বলেন, তাঁদের প্রতিটি ওয়ার্ডের নেতাকর্মীদের সতর্ক পাহারায় থাকার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। বিএনপি কোথাও ভাঙচুরের চেষ্টা করলে জবাব দেওয়া হবে। তিনি বলেন, তারা বিএনপির গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করবে।
কেরানীগঞ্জ সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শাহাবুদ্দিন কবীর বলেন, বিএনপির সমাবেশকে ঘিরে কেউ যেন কোনো ধরনের নাশকতা বা আইনশৃঙ্খলার ব্যাঘাত ঘটাতে না পারে, সে জন্যই আমরা সড়কে অবস্থান করছি। সকাল থেকেই বিভিন্ন তল্লাশি কার্যক্রম চালাচ্ছি। যাত্রীদের হয়রানির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, জনসাধারণের নিরাপত্তার জন্যই এ কার্যক্রম। এখানে হয়রানির কিছু নেই। কয়েক মিনিটের তল্লাশিতে খুব বেশি ক্ষতি হয়ে যাবে না।
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর
যোগাযোগ: । [email protected] । বিজ্ঞাপন ও বার্তা সম্পাদক: 01894944220
ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।
© 2025 Sangbad Sarabela All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh