প্রতারণার ফাঁদে ফেলে অশ্লীল ছবি ও ভিডিও ধারণ করে ব্ল্যাকমেইলের মাধ্যমে চাঁদাবাজির ঘটনায় নারীসহ তিনজনকে আটক করেছে বরিশাল র্যাব-৮ এর সদস্যরা। শনিবার সকালে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে র্যাব-৮ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট মো. শহিদুল ইসলাম তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
নগরীর রূপাতলীস্থ বরিশাল র্যাব-৮ এর সদর দপ্তরে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে উল্লেখ করা হয়, গত ২৩ ডিসেম্বর রাজধানী ঢাকা ও পটুয়াখালীতে অভিযান চালিয়ে চক্রের তিন সদস্যকে আটক করা হয়েছে। আটকৃতরা হলো-পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার বিপাশা এলাকার সাকিব হোসেন শুভ (২২), নাহিদ হোসেন (২০) ও নাজমা আক্তার মিলা (২৩)।
সংবাদ সম্মেলনে অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, পটুয়াখালী সড়ক ও জনপদ বিভাগের গাড়িচালক বাউফল থানাধীন মাছপাড়া এলাকার বাসিন্দা মো. রফিকুল ইসলাম (৬৩) সরকারি চাকরি থেকে অবসরগ্রহন করে পেনশনের টাকা ব্যাংকে জমা রাখেন। পেনশনে আসার পর থেকে অভিযুক্তরা বিভিন্ন সময় রফিকুল ইসলামের কাছে বিভিন্ন অযুহাতে চাঁদা দাবী করে আসছিলো। রফিকুল ইসলাম টাকা দিতে অস্বীকার করায় গত ৬ অক্টোবর সন্ধ্যায় মসজিদ থেকে মাগরিবের নামাজ আদায় শেষে বাড়িতে ফেরার পথে অভিযুক্তরা দেশীয় অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে রফিকুল ইসলামকে জোরপূর্বক একটি নির্জন বাগানে নিয়ে যায়। পরবর্তীতে সেখানে জোরপূর্বক রফিকুল ইসলামের অশ্লীল ছবি এবং ভিডিও অভিযুক্তদের মোবাইল ফোনে ধারণ করা হয়। পাশাপাশি একশ’ টাকার তিনটি নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর গ্রহন করে রফিকুল ইসলামের কাছে ১০ লাখ টাকা দাবি করে ১০ অক্টোবরের মধ্যে পরিশোধের জন্য সময় নির্ধারন করে দেয়া হয়। অভিযুক্তদের দাবিকৃত চাঁদার টাকা যথাসময়ে পরিশোধ করা না হলে অশ্লীল ছবি ও ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেয়ার হুমকি প্রদর্শন করা হয়। এছাড়াও দাবীকৃত টাকা না দিলে অভিযুক্তরা রফিকুলের ছেলে মোঃ রাব্বিকে (২৫) হত্যা করার হুমকি দেয়।
উপায়অন্তুর না পেয়ে রফিকুল ইসলাম গত ১০ অক্টোবর বাউফলের একটি ব্যাংকে বসে অভিযুক্ত শুভকে পাঁচ লাখ টাকা এবং অভিযুক্ত নাহিদকে তিন লাখ টাকা প্রদান করেন। পরবর্তীতে ভয়ে রফিকুল ইসলাম নিজের বসতবাড়ি ছেড়ে মোবাইল ফোন বন্ধ রেখে শ্বশুড়ের পটুয়াখালী সদরের বাসায় অবস্থান করেন।
সংবাদ সম্মেলনে আরো উল্লেখ করা হয়, এ ঘটনায় গত ১৪ ডিসেম্বর রফিকুল ইসলাম অভিযুক্ত তিনজনের বিরুদ্ধে র্যাব-৮ এর পটুয়াখালী ক্যাম্পের ক্রাইম প্রিভেনশন কোম্পানিতে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগপ্রাপ্তির পর র্যাব-৮ এর সদস্যরা ছায়া তদন্ত শুরু করে তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে অভিযোগের সত্যতা পান।
পরে প্রথমে অভিযোগপত্রের দুই নম্বর অভিযুক্ত নাহিদ হোসেন এবং তিন নম্বর অভিযুক্ত নাজমা আক্তার মিলাকে আটক করা হয়। পরে তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী এক নম্বর অভিযুক্ত সাকিব হোসেন শুভকে ঢাকা থেকে আটক করা হয়েছে। র্যাব-৮-এর অধিনায়ক আরো জানান, এ ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।