আশুলিয়ার ফুটওভার ব্রিজ ও রাস্তায় যত্রতত্র পড়ে থাকা ভিজিটিং কার্ড নিয়ে দিন দিন রহস্যে বাড়ছে। আবাসিক হোটেল ও গেস্ট হাউজের নাম ঠিকানা ব্যবহার করে এসব ভিজিটিং কার্ড ফুটওভার ব্রিজের উপরে ও ফুটপাতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে থাকতে দেখা যাচ্ছে। আর কার্ডে থাকছে হরেক নামের ভাইদের ফোন নম্বর দেওয়া। আশুলিয়ার নবীনগর এলাকার রাস্তায় ও ফুটপাতে এসব ভিজিটিং কার্ড পড়ে থাকায় স্থানীয়দের মধ্যে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
গতকাল সরজমিনে নবীনগর বাসস্ট্যান্ডে ফুটওভার ব্রিজ, বিশমাইল ফুটওভার ব্রিজ, বাইপাইল ফুটওভার ব্রিজসহ কয়েকটি ফুটওভার ব্রিজ ঘুরে দেখা গেছে মেইনরোডসহ ফুটপাতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে রহস্যজনক ভাইদের ভিজিটিং কার্ড। নবীনগর ও সাভারে অবস্থিত ফুটওভার ব্রিজ ও বিভিন্ন স্কুল কলেজ ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে এসব কার্ড পড়ে থাকতে দেখা গেছে। কার্ডগুলোর উপরে লেখা থাকছে নিরব ভাই, মিজান ভাই, রিপন ভাই, হাসান ভাই, সাহিন ভাইসহ আরও অনেক নাম ও ফোন নম্বর।
জানা যায়, দেহ ব্যবসার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট চক্র এসব ভিজিটিং কার্ড সাভার ও আশুলিয়ার ফুটওভার ব্রিজ ও পাড়া, মহল্লা অলি-গলিসহ রাস্তায় ফেলে রেখেছে। চক্রের সদস্যদের নাম ও ফোন নম্বর রয়েছে এসব ভিজিটিং কার্ডে।
আশুলিয়া গার্মেন্টস এলাকা হওয়ায় বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, গার্মেন্টস ও গণপরিবহনে ভিজিটিং কার্ড বিলি করছে এ চক্রের সদস্যরা। এরা মূলত যৌনকর্মীদের দালাল হিসেবে পরিচিত। দ্রুত যৌন ব্যবসা প্রচারের লক্ষে সম্প্রতি তারা এ কৌশল বেছে নিয়েছে। উঠতি বয়সের তরুণ-তরুণী, অভাব গ্রস্থ কর্মহীন নারী এবং স্কুল-কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের টার্গেট করে অভিনব কায়দায় প্রচারে নেমেছে চক্র। এরা রাতের আধাঁরে কিংবা নিরিবিলি সময়ে নতুন রঙিন ভিজিটিং কার্ড রাস্তায় এমনভাবে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রাখে যাতে সহজেই পথচারীদের নজরে পড়ে। অনেকে এদের পাতা ফাঁদে পা দিচ্ছেন। ফাঁদে পড়ে ভুক্তভোগীদের বিভিন্নভাবে হয়রানি হতে হচ্ছে।
ভিজিটিং কার্ডে পাওয়া এক ফোন নম্বরে ফোন দিলে অপর প্রান্ত থেকে তা রিসিভি করেন একজন পুরুষ। তিনি জানান, স্কুল, কলেজ, ইউনির্ভাসিটি পড়ুয়া ছাত্রীসহ মধ্য বয়সি অনেক নারী তার কালেকশনে আছে। ঠিকানা জানতে চাইলে ওই পুরুষ (দালাল) সরাসরি ঠিকানা না দিয়ে গাবতলি বাসস্ট্যান্ডে গিয়ে যোগাযোগ করতে বলেন।
জানা গেছে, ভিজিটিং কার্ডের নম্বর ধারীরা কয়েক ধাপে যৌনকর্মী সরবরাহ করেন। যৌনকর্মীকে ভিজিটরের বাসার ঠিকানায় পৌঁছে দেওয়া, যৌনকর্মী ও ফ্ল্যাট ভিজিটরকে নিরাপদে নিয়ে আসা হয়। হোটেল কক্ষে নিরাপদে সব কিছুর ব্যবস্থা করা হয়।
অভিযোগ আছে, পুলিশের অসাধু কর্মকর্তা, স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তি ও ভুয়া সাংবাদিকরা গাবতলির কয়েকটি আবাসিক হোটেল থেকে নিয়মিত মাসোয়ারা নিচ্ছে।
এ বিষয়ে জানতে, দারুস সালাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ( ওসি) কে একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।