সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া ঘাট দিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ যাতায়াত করে থাকে। পদ্মা নদীতে থাকা নদীর স্রোত ও ফেরীসহ বিভিন্ন কারণে এ রুটের যাত্রীদের দীর্ঘ সময় ঘাটে অপেক্ষা করতে হয়। এ সময় তারা ফেরি, লঞ্চসহ বিভিন্ন কায়দায় পদ্মা নদী পারাপার হয়। যাত্রীদের এই আসা-যাওয়াতে পথে হিজড়ারা ওঁৎ পেতে থাকে। সুযোগ বুঝে তারা লঞ্চ, ফেরি ও বাসে থাকা যাত্রীদের সঙ্গে বিভিন্ন অপকৌশল অবলম্বন করে তাদের কাছ থেকে টাকা-পয়সা হাতিয়ে নেন। এ সময় তারা যাত্রীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করে এবং জোরপূর্বক টাকা-পয়সাও আদায় করেন। অসহায় যাত্রীরা মান-সম্মানের ভয়ে টাকা দিয়ে নিজেদের আত্মরক্ষা করতে হয়। অহরহ ঘটছে এই ঘটনা। 

ঢাকাগামী দুই যুবক সাইফুল ও শাকিল জানান, দুপুরে তারা কুষ্টিয়া থেকে ট্রেনে এসে দৌলতদিয়া রেলস্টেশনে নামার পর পায়ে হেঁটে ফেরী ঘটে যাওয়া পথে একদল হিজড়া তাদের পিছু নেয়। তারা দল বেঁধে ফেরীতে ওঠার পর তাদের চাহিদা মোতাবেক টাকা না দেওয়াতে যাত্রীদের গালাগালি শুরু করে। এক পর্যায় যাত্রীদের গায়ে হাত তোলে। প্রায় আধা ঘন্টা হিজড়াদের অত্যাচার ও গালাগালি শুনতে হয় যাত্রীদের। এ ধরণের ঘটনা প্রতিদনিই এ রুটের যাত্রীদের সহ্য করতে হচ্ছে।

যশোর থেকে ঢাকাগামী বাসে হিজড়াদের কাছে লাঞ্ছিত হওয়া এক যাত্রী জানান, ঢাকা যাওয়ার পথে তিনি ফেরী পারাপার বাসের যাত্রী ছিলেন। নদী পার হওয়ার সময় ফেরীর উপরে বাস দাঁড়িয়ে। তিনি বাসের মধ্যে বসা ছিলেন। হঠাৎ কয়েকজন হিজড়া কোমর দুলাতে দুলাতে বাসে উঠে এলো। হাতে তালি মেরে, শরীর দোলাতে দোলাতে দুইজন হিজড়া যাত্রীদের কাছে গিয়ে বলছে, এ্যাই দশ টাকা দে, টাকা না দিলে অকথ্য ভাষায় যাত্রীদের গালিগালাজ করতে করতে কাউকে কাউকে কাপড় খুলে ফেললাম হুমকিও দিচ্ছিল। আর অসহায় মানুষগুলো জলদি জলদি টাকা তুলে দিচ্ছে ওদের হাতে। একই অবস্থায় তার কাছেও টাকা দাবী করে। এ সময় তিনি টাকা দিতে অস্বীকার করায় তার গোপন অঙ্গে হাত দেয় ও হিজড়াদের বুকে জড়িয়ে ধরে।

ঝিনাইদহ থেকে ছেড়ে আসা বাসের আরো তিন জন হিজড়াদের নামে অভিযোগ করেন। তারা জানান, ঢাকার উদ্দেশ্যে যাচ্ছি। বাস ফেরীতে উঠার পর কয়েক জন হিজাড়া গাড়ীতে উঠে। ফেরিতে উঠার পর বাসের গেটের সামনে ছিলাম, আমাদের মকধ্যে একজনকে ধাক্কা দিয়ে বলে সর এখান থেকে, হিজাড়া ভিরের ঢুকে গেলে যার কাছ থেকে যেভাবে পারে টাকা নিতে শুরু করে। আমার বন্ধু মিরাজ ও ফবির কাছে গেলে টাকা দিতে অসম্মিত জানালে তারা দূর্ব্যবহার ও অকথ্য ভাষায় কথা বলে। 

হিজরাদের সভাপতির সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি। 

দৌলতদিয়া নৌ-পুলিশ ফাড়ীর ইনচার্জ জেএম সিরাজুল কবির বলেন, আমি হিজরাদের দেখি ঘাট এলাকায়। কিন্তু এরা যে এই অপকর্মের সাথে জরিত তা আমি জানি না। তবে এধরনের কোন অভিযোগ পেলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নিবো।