রংপুরের বদরগঞ্জে যমুনেশ্বরী নদীতে মাছ ধরার উৎসবে মিতেছে সৌখিন মাছ শিকারীরা। টানা বৃষ্টিতে যমুনেশ্বরী নদী, মরা তিস্তা নদী ও চিকলি নদী প্লাবিত। নদীগুলো প্লাবিত হওয়ার কারণে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় পুকুর ও ডোবা গুলোর যে মাছগুলো ছিল বন্যার পানিতে ভেসে গিয়েছে নদীতে। সেই নদীগুলোতে ধরা পড়ছে বিভিন্ন প্রজাতির মাছ। সৌখিন মাছ শিকারীরা সকাল থেকে রাত পর্যন্ত মাছ ধরছে।
সরেজমিনে মেলার মাঠে দেখা যায়, দূর-দূরন্ত থেকে অসংখ্য সৌখিন মাছ শিকারীও আসছেন যমুনেশ্বরী নদীতে মাছ ধরতে। নারী পুরুষ সহ সব বয়সের মানুষের উপস্থিতিতে যমুনেশ্বরী নদীতে চলছে যেন মাছ ধরার উৎসব।
যমুনেশ্বরী নদীতে মাছ ধরছেন মো. সাহিন আহমেদ নামের এক সৌখিন মাছ শিকারী তিনি বলেন, অনেকদিন পর নদীতে পানি হয়েছে। অনেকের কাছে শুনতে পেলাম নদীতে অনেক মাছ। তাই জাল নিয়ে মাছ শিকার করার জন্য চলে এসেছি। আসলে নদীতে অনেক মাছ হয়েছে।
আর এক মাছ শিকারী আব্দুস সালাম বলেন, নদীতে প্রচুর ছোট মাছ রয়েছে। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত জাল দিয়ে প্রায় ১৫ কেজি মাছ মাছ ধরেছি। নদীতে পানি হওয়ায় মাছ মারতে ভালই লাগছে।
নদীতে জাল দিয়ে মাছ ধরছেন সৌখিন মাছ শিকারী, রহমত, গোলজার, নিপুন, নারায়ণ, রঞ্জিত কুমার, সুজিত সাহা সহ আরো অনেকে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত মাছ মারছেন।
উল্লেখ্য, উপজেলার দামোদরপুর ও মধুপুর ইউনিয়নের মধ্যস্থল দিয়ে প্রবাহিত ঐতিহ্যবাহী যমুনেশ্বরী নদী। অপর নদীটি হলো রাধানগর ও দামোদরপুর ইউনিয়নের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত চিকলী নদী। নদীটি তারাগঞ্জ উপজেলার ওকরাবাড়ি হয়ে হাজির হাট শেখর হাট বদরগঞ্জ পৌরশহরের পাশ দিয়ে বৈরামপুর কুতুবপুর নাগের হাট দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। অপর চিকলি নদীটি তারাগঞ্জের পশ্চিম পাশ দিয়ে পাঠানের হাট, কালির ঘাট, দামোদর পুর ঘাট হয়ে এসে যমুনেশ্বরী নদীতে একত্রিত হয়ে পৌর শহরের পাশ দিয়ে কালুপাড়া কুতুবপুর নাগের হাট দিয়ে প্রবাহিত হয়ে বয়ে চলছে।
মেলার মাঠের পাশের পুকুরের মাছ চাষী মো. মুন্না বলেন, এ বছরে বন্যার পানিতে দুই পুকুর মিলে প্রায় ১৫০ মণ মাছের পোনা সহ বড় মাছ বের হয়ে গিয়েছে। বন্যার পানিতে মাছ বের হওয়ায় ক্ষতি হয়েছে প্রায় ১০ লাখ টাকা।
উপজেলা মৎস্য অফিসার সঞ্জয় ব্যানার্জি জানান, উপজেলা মোট পুকুর রয়েছে ৬ হাজার ৪ শত ৮৫ টি এরমধ্যে প্লাবিত হওয়ার কারণে ১০৫টি পুকুরের মাছ ভেসে গিয়েছে। এতে করে মাছ খামারিদের লোকসান হয়েছে প্রায় এক কোটি ১৮ লক্ষ ২২ হাজার টাকা।