মৌলভীবাজার জেলার জুড়ী উপজেলার পাতিলাসাঙ্গন গ্রামের রাস্তা থেকে সাড়ে ৮ ফুট লম্বা একটি অজগর সাপ উদ্ধার করেছে স্থানীয়রা।
বৃহস্পতিবার (২৬ অক্টোবর) সন্ধ্যা ৮টায় স্থানীয় বেশ কয়েকজন লোক ইউপি সদস্য শরফ উদ্দিনের দোকানের পাশে রাস্তায় দেখতে পেয়ে সাপটিকে উদ্ধার করা হয়।
পরে স্থানীয় পরিবেশবাদী টিম ও বন বিভাগকে খবর দেন স্থানীরা। স্থানীয় এলাকাবাসীর সহায়তায় সাপটিকে কৌশলে বস্তাবন্দী করে বন বিভাগের সদস্যরা জুড়ী রেঞ্জ অফিসে নিয়ে আসেন।
শুক্রবার সকাল ১২টার দিকে লাঠিটিলা বনে বন বিভাগ ও পরিবেশকর্মীদের উপস্থিতিতে সাপটিকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
প্রত্যক্ষদর্শী ও উদ্ধারকারী আমির উজ্জ্বল, সিরাজ উদ্দিন, ফারুক মিয়া, আব্দুল মজিদ ও শাহীন আহমদ জানান, সাপটিকে প্রথমে রাস্তার পাশে দেখতে পেয়ে হাসিব আহমদসহ এলাকার বেশ কয়েকজনের সহযোগিতায় সাপটি বস্তায় ভরে পরিবেশবাদী টিম ও বন বিভাগকে খবর দেই। বস্তাবন্দী করার পর অনেক উৎসুক জনতা ভিড় জমায় সাপটি দেখার জন্য। আনুমানিক রাত ৮টায় সাপটি উদ্ধার করা হয় এবং রাত ১০টায় স্থানীয় বন বিভাগের লোক এসে নিয়ে যান। অনেকে মারতে চেয়েছেন আমরা মারতে দেইনি। পরে আমরা সাপটি বন বিভাগের কাছে হস্তান্তর করি।
তারা আরও বলেন, প্রকৃতির এই মূল্যবান সম্পদগুলো রক্ষা করা আমাদের নৈতিক দ্বায়িত্ব। বন্যপ্রাণী বেঁচে থাকুক মানুষের জন্য।
পাথারিয়া বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ টিমের আজিজুর রহমান মুজাহিদ বলেন, এখনকার মানুষ বন্যপ্রাণী সম্পর্কে যথেষ্ট সচেতন। সাম্প্রতিক বেশ কিছু অজগর উদ্ধার করেছে আমাদের পাথারিয়া বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ টিম, তবে কেন দিন দিন নিজ আবাসস্থল অর্থাৎ বনহারা হচ্ছে সাপগুলো তদন্ত করা জরুরি।
লাঠিটিলা বিট কর্মকর্তা মাজহারুল ইসলাম বলেন, আমরা সাপ হেন্ডেলিং জানি না। বন্যপ্রাণী সমন্ধে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত নয়। বন্যপ্রাণী ও ফরেস্ট্রি আলাদা সেক্টরের কাজ। লাঠিটিলা বিটে বন্যপ্রাণী বিভাগের একটা রুম রয়েছে, কিন্তু বন্যপ্রাণীর কোনো লোক নেই, সব সময় জনবল সংকট। এখানে একজন বন্যপ্রাণী বিভাগের লোক দেওয়া হলে আমাদের কাজ আরো সহজ হবে।
সিলেট বন বিভাগের জুড়ী রেঞ্জ কর্মকর্তা নাজমুল হুসাইন বলেন, সাপটির খবর পেয়েছি পাথারিয়া বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ টিমের মাধ্যমে। এর পর গতকাল রাতে স্থানীয়দের সহযোগিতায় পাথারিয়া বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ টিম ও বন বিভাগ সাপটি উদ্ধার করে জুড়ী রেঞ্জ অফিসে নিয়ে আসেন। আজ সকাল ১২টায় লাঠিটিলা বিটের লাঠিছড়া এলাকায় একটি পরিত্যক্ত হান্ডরের পাশে নিরাপদ স্থানে এটি ছেড়ে দেওয়া হয়। বন্যপ্রাণী বনের একটা অংশ বন ও বন্যপ্রাণী রক্ষায় এভাবেই আমরা সক্রিয়।