অপহরণের পর শিশু আবু তালহাকে ১২ হাজার টাকায় বিক্রি করে দেন প্রতিবেশী মো. পাভেল ও তার এক সহযোগী।
শনিবার (৪ নভেম্বর) সকালে নরসিংদীর মাধবদীর একটি বাসা থেকে কৌশলে বেরিয়ে সে বাঁচার আকুতি জানায়। পরে স্থানীয় এক নারী আহত তালহাকে উদ্ধার করে তার পরিবারকে খবর দেন।
অপহরণকারীরা তালহার দুই চোখে কিল-ঘুষি দিয়ে মারাত্মক জখম করেছে। উদ্ধারের পর পরিবারের সদস্যরা গিয়ে তাকে হাসপাতালে নিয়ে যায়।
এর আগে শুক্রবার (৩ নভেম্বর) দুপুরে বাড়ির পাশের একটি দোকান থেকে রুটি কিনে ফেরার পথে অপহরণের শিকার হন রায়পুরা উপজেলার উত্তর বাখরনগর ইউনিয়নের টেকপাড়ার বাসিন্দা মো. দুলাল মিয়ার ছেলে আবু তালহা।
আহত আবু তালহার ভাষ্য, একটি মাইক্রোবাসে করে তাকে তুলে নিয়ে যায় প্রতিবেশী মো. পাভেল ও তার এক সহযোগী। একই গাড়িতে অপহরণের শিকার আরও দুই শিশু ছিল। তারা হলো আতিকুল ও সাদিকুল। পরে অপহৃত তিন শিশুকে নরসিংদীর মাধবদী থানার কান্দাইলের একটি বাসায় নিয়ে যান অপহরণকারীরা। সেখানে তালহাকে ১২ হাজার টাকায় বিক্রি করে দেন তারা। বিক্রির আগে তাদের কিল-ঘুষিতে তালহার দুই চোখ জখম হয়।
এরপর চোখের পাতা তুলতে পারছিল না সে।
এদিকে শনিবার সকালে ওই বাসা থেকে তালহাসহ তিন শিশু কৌশলে বেরিয়ে যায়। পরে তিনজন তিনদিকে দৌড়ে পালায়। চোখে দেখতে না পারায় দৌড়ে একটি বালুর মাঠে গিয়ে পড়ে যায় তালহা। এ সময় সে বাঁচার আকুতি জানালে এক নারী উদ্ধার করে তার পরিবারকে খবর দেন।
পালানো অপর দুই শিশুর ভাগ্যে শেষ পর্যন্ত কি ঘটেছিল তা জানা যাইনি। তাদের নাম শুধু বলতে পারছিল তালহা।
অভিযুক্ত মো. পাভেল (২৫) উপজেলার উত্তর বাখরনগর ইউনিয়নের টেকপাড়া এলাকার ধন মিয়ার ছেলে। ঘটনার পর থেকে সে লাপাত্তা। বাড়িতে গিয়ে তার পরিবারের কাউকে পাওয়া যায়নি।
প্রতিবেশী লিটন মিয়া জানান, অপহরণের ঘটনায় পাভেলের জড়িত থাকার কথা শুনে তার পরিবারের লোকজন বাড়ি থেকে পালিয়ে গেছে।
তালহার বাবা মো. দুলাল বলেন, আমার ছেলে স্থানীয় একটি স্কুলের তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী। শুক্রবার নিখোঁজ হওয়ার পর রাত পর্যন্ত খোঁজ করেও সন্ধান পাইনি। শনিবার সকালে খবর পেয়ে নরসিংদীর মাধবদী থেকে ছেলেকে আহত অবস্থায় পাই।
অপহরণকারীরা আমার ছেলের চোখ ও শরীরে মারধর করেছে। জড়িতদের বিরুদ্ধে রায়পুরা থানায় মামলা করবেন বলে জানান তিনি।
এ ব্যাপারে রায়পুরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আজিজুর রহমান জানান, অপহরণের ঘটনায় তদন্ত করছে পুলিশ। তদন্ত শেষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।