রংপুরের পীরগাছায় এক শিশুশিক্ষার্থীকে ধর্ষণের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় আসামি সোহেল রানাকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছে আদালত। একই সঙ্গে তাকে এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
রোববার (১৯ নভেম্বর) দুপুরে রংপুরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালত-২ এর বিচারক মো. রোকনুজ্জামান এ রায় প্রদান করেন। রায় ঘোষণার সময় আসামি আদালতের কাঠগড়ায় উপস্থিত ছিলো। পরে তাকে পুলিশী পাহারায় কাগারাগে পাঠানো হয়।
এদিকে মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, পীরগাছা উপজেলার প্রাথমিক স্কুলপড়ুয়া এক শিশু শিক্ষার্থীকে একই গ্রামের যুবক সোহেল রানা জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। ওই শিক্ষার্থী আসামি সোহেল রানার মায়ের কাছে আরবি শিক্ষা গ্রহণ করত। বাড়িতে মায়ের অনুপস্থিতিতে ২০১৬ সালের ১ আগস্ট শিশুটিকে জোর করে ঘুরে তুলে নিয়ে গিয়ে উপর্যুপরি ধর্ষণ করে। শিশুটির আত্মচিৎকারে আশেপাশের লোকজন এগিয়ে আসলে আসামি পালিয়ে যায়।
এ ঘটনায় ধর্ষণের শিকার হওয়া শিশুর পরিবার পীরগাছা থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে সোহেল রানা ও তার সহযোগি রত্মা বেগমকে আসামি করে মামলা দায়ের করে। তদন্তকারী পুলিশ কর্মকর্তা এসআই কনক কুমার ২০১৭ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি তদন্ত শেষে দুই আসামির নামে আ্দালতে চার্জসীট দাখিল করেন।
মামলাটি বিচার শুরু হলে ১২ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য ও জেরা শেষে বিচারক আসামি সোহেল রানাকে দোষী সাব্যস্ত করে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড ও এক লাখ টাকা জরিমানার আদেশ দেন। অন্যদিকে আসামি রত্বা বেগমের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমানিত না হওয়ায় তাকে বেকসুর খালাস প্রদান করা হয়।
সরকারপক্ষে মামলা পরিচালনাকারী আইনজীবী নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালত-২ এর বিশেষ পিপি জাহাঙ্গীর হোসেন তুহিন জানান, ১২ বছর বয়সী এক শিশুকে জোর করে ঘরের ভেতরে নিয়ে গিয়ে উপর্যুপরি ধর্ষণ করার ঘটনায় আসামিকে যাবজ্জীবন সাজা প্রদান করায় আমরা সন্তোষ প্রকাশ করছি। বাদীপক্ষ ন্যায় বিচার পেয়েছে বলে জানান তিনি।
অন্যদিকে আসামিপক্ষের আইনজীবী জহিরুল ইসলাম জানান, তার মক্কেল ন্যায়বিচার পাননি। এ রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করবেন বলেও জানান তিনি।