রংপুরের বদরগঞ্জ উপজেলার দামোদরপুর ইউনিয়নের চাম্পাতলী কালির ঘাটে চিকলী নদীর পাড়ের মাটি ও বালু অবৈধভাবে কেটে বিক্রি করছেন স্থানীয় তিন প্রভাবশালী ব্যক্তি। এতে হুমকির মুখে পড়েছে সেতু, বসতবাড়ি, বিদ্যালয় ও আশপাশের আবাদি জমি। এসব মাটি স্থানীয় ইটভাটায় বিক্রি করা হচ্ছে।
স্থানীয় লোকজন বলেন, চাম্পাতলী কালির ঘাটের চিকলী নদীর পাড় কেটে মাটি বিক্রি করছেন স্থানীয় ওই তিন প্রভাবশালী ব্যক্তি। তারা বেশ কয়েকদিন ধরেই চিকলী নদীর পাড়ের মাটি কেটে বিক্রি করছেন।
সরেজমিনে দেখা গেছে, কালির ঘাট সেতু থেকে ৪০ থেকে ৫০ গজ দূরে চিকলী নদীর পাড়ের মাটি কেটে পাঁচটি ট্রাক্টরের ভর্তি করা হচ্ছে। এ সময় ট্রাক্টর চালক বলেন, নদীর পাড়ের পাশে মো. লিটন মিয়া ও সোহেল রানার জমি রয়েছে। তার কাছ থেকে প্রতি গাড়ি মাটি ২৫০ টাকা দরে স্থানীয় রামনাথপুর ইউনিয়নের সততা ইটভাটার মালিক কিনে নিয়েছেন। লিটন ও সোহেল যেভাবে মাটি কাটতে বলছেন, তাঁরা সেভাবেই মাটি কেটে নিয়ে যাচ্ছেন।
নদীর পাড় কেটে মাটি বিক্রয়ের বিষয়ে লিটন ও সোহেলের কথা বললে তারা জানান, নদীর পাশে আমাদের জমি, আমার জমির ভেতরে মাটি কেটে ভাটায় বিক্রি করা হচ্ছে। মাটিগুলো কেটে জমি সমান করছি।
অন্য দিকে সেতুর পাশে স্থানিয় বসবাস করা জয়নাল হোসেনের ছেলে বাবলু মিয়া নদীর পাড় কেটে বালু বিক্রি করছেন কে, আর, এম, ইটভাটায় ২০০ টাকা করে। বালু বিক্রিতা বাবলু মিয়ার সঙ্গে কথা বললে তিনি বলেন, নদী খননের সময় তার জমিতে মাটি ফেলা হয়েছিল। এখন তা কেটে নিয়ে জমি সমান করছেন।
বালুমহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইনে (২০১০) বলা হয়েছে, বিক্রির উদ্দেশ্যে বালু বা মাটি উত্তোলনের ফলে কোনো নদীর তীর ভাঙনের শিকার হলে সে ক্ষেত্রে বালু বা মাটি তোলা যাবে না। অন্যদিকে, কালভার্ট, বসতবাড়ি, প্রাথমিক বিদ্যালয়, সেতু এলাকা থেকে এক কিলোমিটারের মধ্যে বালু উত্তোলন নিষিদ্ধ।
স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, ওই স্থানে নদীর পাড় কেটে মাটি তোলা হলে সামান্য বন্যায় বসত বাড়ি, সেতু, ও পাশে অবস্থিত চম্পাতলী উচ্চ বিদ্যালয় ও চম্পাতলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় হুমকির মুখে পড়তে পারে। এ ছাড়া আশপাশের আবাদি জমিতে নদীর পানি অনায়াসে ঢুকে ফসল নষ্ট হবে।
চম্পাতলী গ্রামের এক কৃষক বলেন, কিছুদিন আগেই বড় বন্যা হয়। বন্যার কারণে অনেক ফসলি জমি তলিয়ে যায়। এ ভাবে নদীর পাড় কেটে ইটভাটায় বিক্রি করে ফেললে অল্প বন্যায় পানি ঢুকে আবাদি জমি নষ্ট হয়ে যাবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু সাঈদ বলেন, নদীর পাড় কেটে ফেলা আইনত অপরাধ। অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেলে দায়ীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।