ঝালমুড়ির বিক্রি করে এখন চলাই মুশকিল। দেশের যে বাউবাজার নুন আনতেই পান্তা ফুরায়। সংসারে অনেক খরচ। তবুও টিকে আছি ৩৫ বছর ধরে। সরকার অনেক অনুধান দেয় গরিব মানুষকে, কিন্তু কই ৪৭বছরের জীবনের এমন কোন সহায়তা পেলাম না আজও? সাংবাদিকদের প্রশ্নে এমন করেই কথা গুলো বলেন ঝালমুড়ি বিক্রেতা (হকার) শাহিন মিয়া।
তিনি জামালপুর জেলার সরিষাবাড়ী উপজেলার পোগলদিঘা ইউনিয়নের বগারপাড় গ্রামের মৃত আবুল মন্ডলের ছেলে। এলাকার মানুষ তাকে ঝালমুড়ির দোকানদার শাহিন হিসেবেই চিনেন। শাহিন মিয়ার ‘বয়স এখন’ প্রায়ই ৫০ ছুঁইছুঁই। কৈশোর বয়স থেকে টানা ৩৫টি বছর গাড়িতে ঝালমুড়ি দোকান করছেন। তার দোকানটি দেখতে খুব পরিপাটি ও সুন্দর। নানা ধরেন সদাই রয়েছে তার এই পরিপাটি দোকানে।
শাহিন মিয়া বলেন, বেশির ভাগ সময় তিনি বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে গেটে দিয়ে থাকেন। আবার কখনো কোন মোড়ে বা বিশেষ কোন অনুষ্ঠানে সময় দেন। তিনি প্রতিদিন ৭০০/১০০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি করতে পারেন। যেটা তার উপার্জন হিসেবে ২০০/৩০০টাকা লভাংশ রোজগার বলা চলে। এই দিয়ে কোন রকম সংসার চালান তিনি।
তিনি আরো বলেন, ৮/৯বছর পূর্বে জিনিসপাতির দাম ছিলো কম। তখন অল্প খরচে অনেক টাকা ইনকাম করা গেছে। এখন আর ইনকাম নেই, চলাই মুশকিল! সংসারে রয়েছে ৪/৫ জন খানিয়ালা। বড় একটা ছেলে ছিলো হটাৎ বিদ্যুৎতের তাড়ে জড়িয়ে মৃত্যুবরণ করে। সংসারের উপার্জনের মাধ্যম এখন শুধুই আমি। সরকার অনেক কিছু দেয় গরিব মানুষকে। কিন্তু কই আমিতো কিছুই পাই না ? আমার মত হকার আজ অবধি পর্যন্ত একটা চাউলের সিলিপও পেলাম না। তবে দুঃখ নেই, না পেলাম সরকারের কিছু। বাকি জীবনটা সৎ ভাবে উর্পাজন করেই কাটিয়ে দিবো।
স্থানীয় অনেকেই জানান শাহিন মিয়ার সাংসারিক অবস্থা তেমন ভালো নয়। খুব সাধারণ ভাবে কষ্টের মাঝেই জীবনযাপন করেন। এই ঝালমুড়ির দোকানই তার চলার এক মাত্র মাধ্যম। তবে বিভিন্ন এলাকায় তার বেশ পরিচিতি রয়েছে। তার হাতের ঝালমুড়ি অনেক সুস্বাদু এবং মজাদার হয়। ব্যক্তি হিসেবেই শাহিন অনেক সৎ এবং ভালো মনের মানুষ। আর্থিকভাবে কারো সহযোগীতা পেলে তার ব্যবসাকে আরো প্রসারিত করতে পারবে।