কাজের পাওনা টাকা চাওয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে শরিফ মিয়া (২৮) নামে এক হোটেল শ্রমিককে কুপিয়েছে হোটেল মালিক। সুপারি কাটা ধারালো অস্ত্র সস্তা দিয়ে মাথায় কোপ মারে হোটেল মালিক। আত্মরক্ষার জন্য হোটেল শ্রমিক হাত দিয়ে আটকালে হাতের তালু কেটে যায়।
শরিফ লালমনিরহাট শহরের মিশন মোড় এলাকায় আলিফ রেস্তোরা নামে একটি খাবার হোটেলে কারিগরের কাজ করতেন। শরিফ লালমনিরহাট সদর উপজেলার মহেন্দ্রনগর ইউনিয়নের দক্ষিণ হাড়িভাঙ্গা এলাকার আব্দুস সালামের ছেলে।
এ ঘটনায় গতকাল রবিবার রাতে লালমনিরহাট সদর থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন হোটেল কারিগর শরিফ। এর আগে শুক্রবার বিকালে ওই হোটেলের সামনে এ ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, শরিফ মিয়া দীর্ঘদিন ঢাকায় থেকে সেখানে একটি রেস্তোরাঁয় দৈনিক মজুরিতে খাবার তৈরির কাজ করতো। লালমনিরহাট শহরের আলিফ রেস্তোরার মালিক সুমন মিয়া দৈনিক মজুরি ৭শ টাকা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ঢাকা থেকে এনে তার হোটেলে কারিগরের কাজ দেন। প্রতিশ্রুতি মতে কয়েক মাস মজুরি ঠিকঠাক প্রদান করেন। কিন্তু পরবর্তীতে মজুরি কমিয়ে দিনে ৬শত টাকা করে দিতে থাকেন। এর কয়েক মাস পর ওই মজুরি থেকে কখনো ১০০টাকা আবার কখনো ২০০ টাকা করে কেটে রেখে পরে এক সঙ্গে দেওয়ার কথা বলে হোটেল মালিক। এতে শরিফের ২ হাজার টাকা পাওনা হয় হোটেল মালিকের কাছে। কম মজুরিতে সংসার চালানো কষ্ট হওয়ায় শরিফ ওই আলিফ রেস্তোরা থেকে পাশে সাগাই বাড়ি নামে অপর একটি হোটেলে কারিগরের কাজ নেয়।
এতে ক্ষিপ্ত হয় পূর্বের হোটেল মালিক সুমন শুক্রবার দরিদ্র শরিফ শ্রমের পাওনা টাকা চাইতে গেলে হোটেল মালিক সুমন মিয়া তাকে অকথ্য ভাষায় গালিগলাজ করতে থাকে। এক পর্যায়ে সুমন পাশে পানের দোকান থেকে সুপারি কাটা ধারালে অস্ত্র দিয়ে শরিফের হাতে, পিঠে ও পায়ে কোপ দেয়। এতে কাটা জখম হয় এবং হাতের তালু কেটে যায়। পরে প্রত্যক্ষদর্শী স্থানীয়রা রক্তাক্ত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে সদর হাসপাতলে ভর্তি করে । রবিবার রাতে এঘটনায় শরিফ মিয়া বাদী হয়ে সদর থানা লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
হোটেল কারিগর শরিফ মিয়া বলেন, হাতের তালু কেটে গেছে। ৭টি সেলাই পড়েছে। এমতাবস্থায় আমি ৩ দিন থেকে কোন কাজ করতে পারছি না। পরিবার পরিজন নিয়ে অনেক কষ্টে আছি।
হোটেল মালিক সুমন মিয়া বলেন, ধস্তাধস্তির এক পর্যায়ে হাতের তালু একটু কেটে গেছে। হঠাৎ হোটেলের কাজ ছেড়ে দেওয়ায় অনেক ক্ষতি হয়েছে বলেও তিনি দাবি করেন।
এদিকে হোটেল শ্রমিকের বাবা সালামের সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, আমার ছেলে অসুস্থ হাত কেটে গেছে, তার ইনকাম দিয়ে আমরা ৫ জনের সংসার চলে। এঘটনার সঠিক বিচার চাই।
এ ব্যাপারে সদর থানার ওসি ওমর ফারুক জানান, হোটেল শ্রমিক থানায় অভিযোগ দিয়েছে । তদন্ত চলছে, দ্রুতই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।