ময়মনসিংহের নান্দাইলে নিজ ঘরে চার্জ দেওয়া অটোরিকশা থেকে বিদ্যুতায়িত হয়ে দুই শিশুসহ একই পরিবারের ৪ জনের মৃত্যু হয়েছে।
শনিবার (৩০ ডিসেম্বর) বিকেল ৪টার দিকে নান্দাইল উপজেলার চন্ডিপাশা ইউনিয়নের দক্ষিণ বীরঘোষপালা পূর্বপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন দক্ষিণ বীরঘোষপালা পূর্বপাড়া গ্রামের মৃত আব্দুস সাত্তারের ছেলে জামাল উদ্দিন (৪০), জামাল উদ্দিনের মা আনোয়ারা বেগম (৬৫), জামাল উদ্দিনের শিশু কন্যা ফারিয়া ইসলাম আনিকা (৪) ও ফাহমিদা ইসলাম ফাইজা (৬)।
নিহত জামাল উদ্দিন অটোরিকশা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতেন। সব সময় নিজ ঘরেই অটোরিকশা চার্জ দিতেন তিনি।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, জামাল উদ্দিন তার নিজ টিনের চাপড়া ঘরের ভেতর প্রতিদিন নিজের ইজিবাইক চার্জ দিতেন। প্রতিদিনের মতই শনিবার চার্জ দেওয়া থেকে ইজিবাইক ছাড়াতে গিয়ে তিনি প্রথমে বিদ্যুায়িত হন। এসময় তার দুই শিশু কন্যা আনিকা ও ফাইজা বিষয়টি বুঝতে না পেরে ইজিবাইকে উঠবে বলেই একে একে দু’জনই তার বাবাকে জড়িয়ে ধরলে তারাও বিদ্যুায়িত হয়। হঠাৎ কিংকর্তব্যবিমুঢ় জামালের মা আনোয়ারা বেগম নিজ ছেলে ও নাত্নীদের বাচাঁতে গেলে তিনিও বিদ্যুতায়িত হয়ে ঘটনাস্থলে নিহত হন।
ঘটনার পরপরই নিহত জামাল উদ্দিনের বড় মেয়ে জান্নাতুল মারুফা (৮) তার চাচার বাড়ি থেকে নিজ ঘরে এসে দেখতে পান পরিবারের সবাই মাটিতে পড়ে রয়েছে। পরে জান্নাতুল মারুফার ডাক চিৎকারে তার চাচা নুরুল হক দৌড়ে এসে ঘরের বিদ্যুতের মেইন সুইচ অফ করলে ততক্ষণে তিনি দেখতে পান তাঁর আপন ভাই, মা ও দুই ভাতিজি মারা গেছেন। পরে খবর পেয়ে স্থানীয় লোকজন দৌড়ে এসে এ মর্মান্তিক ঘটনা দেখতে পায়।
এলাকাবাসী জানান, নিহত জামাল উদ্দিনের পরিবারে বেচেঁ আছে তাঁর একমাত্র বড় মেয়ে জান্নাতুল মারুফা ও স্ত্রী মরিয়ম আক্তার। মরিয়ম আক্তার ঢাকায় একটি বেসরকারি হাসপাতালে আয়া পদে কাজ করেন।
খবর পেয়ে নান্দাইল মডেল থানা পুলিশ ও স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান শাহাব উদ্দিন ভূইয়া ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এসময় স্থানীয় লোকজনের সুপারিশে নিহতদের ময়নাতদন্ত না করেই লাশ দাফন-কাফনের ব্যবস্থা করা হয়।
এ বিষয়ে চন্ডিপাশা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাহাব উদ্দিন ভূঁইয়া বলেন, বিষয়টি খুবই হৃদয়বিদারক। অটোরিকশা চার্জ দেওয়া ছিল, সেটি বিদ্যুতায়িত হয়ে যাওয়ায় জামাল উদ্দিন সহ তাঁর পরিাবের লোকজন মারা গেছে।
নান্দাইল মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.আব্দুল মজিদ বলেন, ‘বিদ্যুতায়িত হয়ে এক পরিবারের চারজনের মৃত্যুর খবর শুনেই আমরা ঘটনাস্থল গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করি। বিষয়টি খুবই মর্মান্তিক।’