কিশোরগঞ্জে প্রচণ্ড শীত ও ঘন কুয়াশায় স্থবির হয়ে পড়ছে মানুষের জনজীবন। হাড় কাঁপানো শীতে বাতাস ও তীব্র ঘন কুয়াশার কারণে গত কদিন ধরে মানুষের জীবনযাত্রায় নেমে এসেছে সীমাহীন দুর্ভোগ। ঘন কুয়াশার কারণে সড়ক ও মহাসড়কে যানবাহন চলাচলে বিঘ্ন ঘটছে।
বুধবার (১০ জানুয়ারি) ভোর রাত থেকে দিনের ১০টা পর্যন্ত দূরপাল্লার বাসসহ বিভিন্ন মালবাহী যানবাহনকে হেডলাইট জ্বালিয়ে আতঙ্কে যাতায়াত করতে হচ্ছে। শীতকষ্ট নিবারনে আগুন জ্বালিয়ে বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষকে আগুন পোহাতে দেখা গেছে।
স্থানীয়রা জানান, গত ক’দিন ধরে একটু বেশি মাত্রায় শীত নেমেছে। মাঝে মধ্যে সূর্যের দেখা মিললেও দিনের বেশিরভাগ সময় তীব্র বাতাস ও কুয়াশায় ঢাকা থাকছে চারদিক। ঘন কুয়াশার সাথে বয়ে চলা হিমেল হাওয়ার কারণে শীতের তীব্রতা একটু বেশিই অনুভূত হচ্ছে। প্রচন্ড শৈত্যপ্রবাহের কারণে এখানকার সাধারণ কর্মজীবি মানুষ থেকে শুরু করে কারো সময়ই এখন ভাল যাচ্ছে না। বিশেষ করে বৃদ্ধ ও শিশুদের জন্য সময়টা মোটেই ভাল যাচ্ছে না।এমনকি হঠাৎ করে শীতের তীব্রতা বেড়ে যাওয়ার কারনে নবজাতক শিশু থেকে শুরু করে প্রায় সব বয়সের লোকদের শীতজনিত নানা রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিচ্ছে। তবে এদেরমধ্যে শিশুদের সংখ্যাই বেশি। প্রত্যহ শীতজনিত রোগ নিউমোনিয়া, ডায়রিয়া, এজমা, এলার্জীসহ নানা রোগে আক্রান্ত শিশুদের নিয়ে লোকজন বিভিন্ন হাসপাতাল, উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্র ও ফার্মেসিতে ড়িড় করছেন।
কিশোরগঞ্জ শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. হেলাল উদ্দিন জানান, শীত জনিত রোগে অনেক শিশু রোগী হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে।
জেলা সিভিল সার্জন ডাঃ মো. সাইফুল ইসলাম জানান, শীত জনিত রোগে আক্রান্তদের যথাযথ সেবা দিতে চিকিৎসকরা সচেতন রয়েছেন। এদিকে কিশোরগঞ্জ রেলওয়ে স্টেশন থেকে শুরু করে নিউটাউন, শোলাকিয়া, উকিলপাড়া, কানিকাটা, গাইটাল, বত্রিশসহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, এসব এলাকার হতদরিদ্র আমজনতা আসন্ন মাঘের শীতে কাপছে। শীতের তীব্র প্রকোপে কাবু হয়ে তাদের দিন কাটছে খুব কস্টে ও দীর্ঘ নিঃশ্বাসে।
সদর উপজেলাসহ বিভিন্ন উপজেলার গ্রামীণ জনপদের হতদরিদ্র আম-জনতা শীত নিবারনের একমাত্র অবলম্বন বলতে আগুন জ্বালিয়ে আগুনের উত্তাপে কিছু সময় শীত নিবারনের চেষ্টা করছেন। ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, হাড় কাঁপানো এ শীতে শীতকষ্ট লাঘবে সরকারীভাবে এখন পর্যন্ত বড় রকমের কোনো ভূমিকা রাখা হয়নি। আসন্ন মাঘের অসহনীয় এ শীতে সরকারি ও বেসরকারীভাবে ব্যাপকহারে শীতবস্ত্র বিতরণের দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।
জেলা প্রশাসক মো. আবুল কালাম আজাদ জানান, ইতোমধ্যে শীতার্ত মানুষের মধ্যে বিতরণের জন্য প্রতি উপজেলায় কম্বল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।