কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী ও পাকুন্দিয়া উপজেলায় গাড়িতে চাঁদাবাজি চলছে দেদারসে। প্রভাবশালীদের প্রশ্রয়ে ও সরকার দলীয় লোক পরিচয়ে দীর্ঘদিন ধরে অবৈধভাবে চাঁদাবাজি করছে একটি চক্র।
দুই উপজেলায় এই চক্রটি রাম রাজ্যত্য কায়েম করেছে। গড়ে ওঠেছে টোকেন বাহিনী। এদের ভয়ে জিম্মি হয়ে আছে চালকরা। চালকদের অবস্থা এখন এমন যে ‘বুক ফাটে তো মুখ ফোটে না’। অবৈধভাবে হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা। এই অসাধু চক্র, চাঁদাখুরদের বিরুদ্ধে এবার কঠিন হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন নবনির্বাচিত সংসদ সদস্য মো. সোহরাব উদ্দিন।
খোঁজ নিয়ে ও চালকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, কটিয়াদী পৌরসভা ও পাকুন্দিয়া পৌরসভায় ঢুকতে প্রতি গাড়িতে একটি টোকেন ধরিয়ে দেওয়া হয়৷ টোকেনের মধ্যে নির্দিষ্ট টাকার পরিমাণ পরিশোধ করলে তবেই ঢুকতে দেওয়া হয়৷ চাঁদা আদায়ের জন্য সকল প্রবেশ পথে টোকেন সদস্যরা ভোর রাত থেকেই অবস্থান করে। পৌর এলাকার প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে মোড়ে এবং বাস্ট্যান্ডে তোলা হয় চাঁদা। এছাড়াও শ্রমিক সংগঠন সহ ভুঁইফোঁড় নাম দিয়ে অটোরিকশা, সিএনজি, ট্রাক সহ সকল যানবাহন থেকে প্রকাশ্যে চাঁদা আদায় করা হচ্ছে৷ এসব কারণে একদিকে ক্ষমতাসীন দল, সরকারকে বিতর্কিত ও বিব্রত হতে হচ্ছে৷
কটিয়াদীর অটোরিকশা চালক আবুল হাসান, রবি, জসিম মিয়া বলেন, ‘পৌর এলাকায় ঢুকলেই টোকেন ধরিয়ে দেওয়া হয়। আবার বাস্ট্যান্ড গেলে সেখানে রশিদ ছাড়া আলাদা টাকা দিতে হয়। লাঠি নিয়ে লোক দাঁড়িয়ে থাকে৷ চাঁদা না দিলেই খারাপ আচরণ শুনতে হয়। এই জিম্মি দশা থেকে মুক্তি চাই।’
কিশোরগঞ্জ ২ কটিয়াদী-পাকুন্দিয়া আসন থেকে এমপি নির্বাচিত হয়ে প্রথমবারের মতো মতবিনিময় সভা করেন অ্যাডভোকেট মো. সোহরাব উদ্দিন।
রোববার (২১ জানুয়ারি) পাকুন্দিয়া উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে সরকারি কর্মকর্তা ও জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে মতবিনিময়ের সময় এ বিষয়ে আলোচনা করেন। চাঁদাবাজদের ধরে আইনের আওতায় আনার জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেন নবনির্বাচিত এই এমপি বলেন, ‘চাঁদাবাজ যদি আমার দলের বা আমার লোকও করে তাকেও ছাড় দেয়া যাবে না।’
সোহরাব উদ্দিন বলেন, ‘কিছু দলীয় নেতাকর্মীসহ স্থানীয় একটি প্রভাবশালী মহল বিভিন্ন এলাকায় বাস, সিএনজি ও অটোরিশসা স্ট্যান্ডে চাঁদাবাজি করছে। এখন থেকে তাদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে। আমার কটিয়াদী-পাকুন্দিয়া এলাকায় কোনো চাঁদাবাজি চলবে না। চাঁদাবাজদের পক্ষে কোন জনপ্রতিনিধি অবস্থান নিলে তিনিও চাঁদাবাজির সাথে জড়িত বলে ধরে নেয়া হবে। অন্যথায় কাউকই ছাড় দেয়া হবে না।’