× প্রচ্ছদ বাংলাদেশ বিশ্ব রাজনীতি খেলা বিনোদন বাণিজ্য লাইফ স্টাইল ভিডিও সকল বিভাগ
ছবি ভিডিও লাইভ লেখক আর্কাইভ

মিয়ানমারের মর্টারশেল পড়ল ঘুমধুমে, এলাকা ছাড়ছেন সীমান্তবাসীরা

এ.এম হোবাইব সজীব, কক্সবাজার

৩১ জানুয়ারি ২০২৪, ১৫:২৮ পিএম

মিয়ানমারে চলমান সংঘাতের জের ধরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকলেও বদলে গেছে পরিস্থিতি। গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যা পর থেকে নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম, তমব্রু সীমান্তের উপরে প্রচণ্ড গোলাবারুদের শব্দ শোনা গেছে। যে শব্দে কাঁপছে সীমান্তবর্তী এলাকা। 

বুধবার (৩১ জানুয়ারি) আবারও মিয়ানমারের ছোঁড়া মর্টারশেল এসে পড়ল বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ঘুমধুমের তুমব্রু গ্রামে। ফলে আতংকিত সীমান্তবাসী ঘর ছেড়ে নিরাপত্তাজনিত কারণে অন্যত্রে চলে যাচ্ছেন।

সীমান্ত এলাকার বাসিন্দারা জানিয়েছেন, মিয়ানমার-নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্ত ঘেঁষে ওপারে বিদ্রোহী গোষ্ঠী ও মিয়ানমার জান্তা সরকারের মধ্যে কামানের গোলা নিক্ষেপের পাশাপাশি বিমান থেকে গোলাবর্ষণ চলছে। মিয়ানমার-নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তের কাঁটাতারের বেড়া ঘেঁষে মিয়ানমার অংশে তিনদিনে অর্ধশতাধিক মর্টারশেলের বিকট শব্দ পাওয়া গেছে। এতে সীমান্তের এপারের লোকজন আতঙ্কিত।

ঘুমধুম ইউনিয়নের ৫ নম্বর ইউপি সদস্য মো. আনোয়ার হোসেন সংবাদ সারাবেলাকে বলেন, ‘গত শনিবার থেকেই মিয়ানমারের ভেতরে থেমে থেমে গোলাগুলি ও বোমার আওয়াজ শোনা যাচ্ছে। সোমবার সীমান্তের ৩৩ নম্বর পিলার সংলগ্ন তুমব্রু পশ্চিম কুল পাড়ার বিপরীতে মিয়ানমার অভ্যন্তরে সকাল থেকে গোলাগুলির বিকট আওয়াজ শোনা যায়।’

এ পরিস্থিতিতে আতঙ্কিত ঘুমধুম সীমান্তবর্তী স্থানীয়রা নিরাপত্তাজনিত কারণে অনেকে অন্যত্রে চলে যাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন তিনি।

তিনি বলেন, শব্দ ক্রমাগত সীমান্তের কাছা-কাছি হওয়ায় সীমান্তের কাছে বসবাসকারী স্থানীয়রা দূরের আত্মীয় স্বজনদের বাসা-বাড়িতে চলে যাচ্ছে।

ঘুমধুম ইউনিয়ন চেয়ারম্যান মো. জাহাঙ্গীর আজিজ সংবাদ সারাবেলাকে জানান, ‘সোমবার রাতে থেকে মঙ্গলবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ঘুমধুম সীমান্তের কাছে কোনপ্রকার গোলাবারুদ বা মর্টার শেলের শব্দ শুনা যায়নি। সীমান্ত পরিস্থিতি স্বাভাবিক ছিল। কিন্তু সন্ধ্যা পর থেকে আবারও থেমে থেমে শব্দ শোনা যাচ্ছে। তবে তা সীমান্তে থেকে ২-৩ কিলোমিটার দূরে। ধারণা করা হচ্ছে যেখানে মর্টার সেল ও গোলা নিক্ষেপ করা হচ্ছে।’

তুমব্রুর স্থানীয় চা দোকানি নুরুল বশর গতকাল মঙ্গলবার রাত ৮টায় বলেন, এখন ভারী গোলার শব্দ ভেসে এসেছে। শব্দ মনে হচ্ছে সীমান্তের খুব কাছে। ফলে সীমান্তের কাছে ঘরে থাকা মানুষ ঘরে থেকে বের হয়ে দূরে আসা শুরু করেছে।

এর মধ্যে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় অনুপ্রবেশকালে মিয়ানমারের ৮ নাগরিককে আটক করে বিজিবির কাছে সোপর্দ করেছে স্থানীয় জনতা। যদিও বিষয়টি সম্পর্কে বিজিবি, প্রশাসনের সংশ্লিষ্ট কেউ কোন বক্তব্য প্রদান করেনি।

তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক জনপ্রতিনিধি ও স্থানীয় লোকজন জানিয়েছেন, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় তমব্রু সীমান্ত দিয়ে মিয়ানমারের চাকমা ও মারমা সম্প্রদায়ের ৮ নাগরিক অনুপ্রবেশ করলে স্থানীয় চৌকিদার সহ জনতা আটক করে পুলিশের কাছে সোপর্দ করেছে।

বিষয়টি নিয়ে কোন কথা বলতে রাজি হননি বিজিবির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। যদিও গত সোমবার রাত থেকে গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যা পর্যন্ত বাংলাদেশের সীমান্তের কাছে কোনো প্রকার গোলাবারুদ বা মর্টারশেল বর্ষণের শব্দ শোনা যায়নি। ফলে ঘুমধুম সীমান্তবর্তী ৫টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাঠদান সোমবার বন্ধ রাখা হলেও মঙ্গলবার পাঠদান স্বাভাবিক ছিল।

সীমান্তবর্তী এলাকার ৫টি প্রাথমিক বিদ্যালয়, একটি মাদ্রাসা এবং একটি উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয় সাময়িকভাবে বন্ধ থাকলেও মঙ্গলবার পাঠদান হয়েছে বলে জানিয়েছেন বান্দরবান জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মুহাম্মদ ফরিদুল আলম হোসাইনী ও বান্দরবান জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আবদুল মান্নান।

বান্দরবান জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মুহাম্মদ ফরিদুল আলম হোসাইনী জানান, সীমান্তের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ায় শিক্ষা কর্যক্রম চলছে, তবে নিরাপত্তা পরিস্থিতি বিবেচনা করে পরবর্তী কার্যক্রম গ্রহণ করা হবে।

সীমান্তবর্তী স্থানীয়রা জানিয়েছেন, সীমান্তের কাছাকাছি সংঘাত না হলেও অভ্যন্তরে সংঘাত তীব্র হচ্ছে। ধারণা করা হচ্ছে মিয়ানমারের বিদ্রোহী আরকান আর্মি ক্রমাগত মিয়ানমারের অভ্যন্তরে যাচ্ছে আর মিয়ানমার সেনাবাহিনী ক্রমাগত পেছনে যাচ্ছে। ফলে সীমান্তে থেকে ৭-৮ কিলোমিটার দূরে সংঘর্ষ হচ্ছে বলে মনে করছেন তারা।

বান্দরবানের পুলিশ সুপার সৈকত শাহিন সংবাদ সারাবেলাকে জানিয়েছেন, সীমান্তের দায়িত্ব বিজিবির। বিজিবির পাশাপাশি সীমান্ত এলাকায় পুলিশ টহল বাড়ানো হয়েছে। বিজিবির পর পুলিশের সর্তকতা এবং গোয়েন্দা নজরধারী রাখা হয়েছে। কোনভাবেই যেন মিয়ানমার থেকে কেউ অনুপ্রবেশ করতে না পারে তার জন্য সর্বোচ্চ দায়িত্বশীলতার সাথে দেখা হচ্ছে।

Sangbad Sarabela

সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর

যোগাযোগ: । সম্পাদক: 01703-137775 । [email protected] । বিজ্ঞাপন ও বার্তা সম্পাদক: 01894944220

ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।

আমাদের সঙ্গে থাকুন

© 2024 Sangbad Sarabela All Rights Reserved.