গত সাত বছর ধরে বাবা থাকেন মালয়েশিয়ায়। মাস তিনেক আগে পরকীয়ায় জড়িয়ে মা তার প্রেমিকের হাত ধরে পালিয়ে যান। এমন অবস্থায় মায়ের খোঁজে গত বৃহস্পতিবার (১ ফেব্রুয়ারি) পাবনা থেকে ফরিদপুরের সালথা উপজেলার বল্লভদী ইউনিয়নের বিষ্ণুদী গ্রামে এসেছে তিন শিশু।
শিশুরা হলো পাবনার সুজানগর উপজেলার সাগরকান্দা গ্রামের প্রবাসী কৃষ্ণ কুণ্ডুর সন্তান নন্দিতা কুন্ডু (১১), ববি কুন্ডু (৮) ও তিন বছর বয়সী প্রতিবন্ধী পার্থ কুন্ডু। ওই গ্রামে মায়ের প্রেমিক সুজন কুন্ডুর বাড়িতে এখন ওই শিশুরা অবস্থান করছে।
কৃষ্ণ কুণ্ডুর বড় মেয়ে নন্দিতা কুন্ডু বলে, গত সাত বছর ধরে আমার বাবা মালয়েশিয়ায় থাকেন। কয়েকমাস আগে মা বাড়ি থেকে চলে এসেছে। আমরা অনেক খোঁজাখুঁজির পর আমার চাচা সঙ্গে এই বাড়িতে এসেছি। এই বাড়িতে এসে মাকে দেখেছি। কিন্তু মা আমাদের দেখে পালিয়ে গেছে। আমরা এখন কী করবো? কোথায় যাবো?
শিশুদের চাচা সাগর কুণ্ডু বলেন, বছর খানেক আগে বিষ্ণুদী গ্রামে একটি অনু্ষ্ঠানে এসেছিল বউদি। সেখান থেকে সুজনের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। পরে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে তাদের মধ্যে প্রেম সম্পর্ক গড়ে ওঠে। একপর্যায় তিন মাস আগে সুজন পাবনায় গিয়ে বউদিকে নিয়ে ফরিদপুরে চলে আসে।
তিনি আরও বলেন, আমার ভাই মালয়েশিয়ায় থেকে বউদির কাছে টাকা পাঠাতো। আর সেই টাকা বউদি তার প্রেমিক সুজনকে দিতেন। সুজন আমার ভাইয়ের টাকায় বাড়ি করেছে। সুখে-শান্তিতে আছে। কিন্তু মা-বাবা ছাড়া আমার শিশু ভাতিজা-ভাতিজীরা অসহায় হয়ে পড়েছে। আমরা এখন ওদের নিয়ে বিপদে আছি। তাই বাধ্য হয়ে ওদের নিয়ে সুজনের বাড়িতে এসেছি। আমরা এর একটা সমাধাম চাই।
শিশুদের মা ও তার প্রেমিক সুজন কুণ্ডু পলাতক থাকায় তাদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে সুজন কুণ্ডুর বাবা দিলীপ কুণ্ডু বলেন, আমার ছেলে বাড়িতে নেই। তার সঙ্গে যে নারী ছিল সেও বাড়িতে নেই। আমি এখন কিভাবে সমাধান দেবো।
গতকাল শুক্রবার রাত ১০টার দিকে বল্লভদী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. সাইফুর রহমান শাহিন বলেন, আমি এলাকায় ছিলাম না, তাই বিষয়টি জানি না। তবে খোঁজখবর নিয়ে এ ঘটনার একটা ব্যবস্থা নেওয়ার চেষ্টা করবো।
সালথা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ ফায়েজুর রহমান বলেন, ঘটনাটি আমার জানা নেই। এটা মূলত সমাজসেবা অফিসের কাজ। তবে অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।