নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলায় সিঁধ কেটে ঘরে ঢুকে মা ও মেয়েকে গণধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় চরওয়াপদা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল খায়ের ওরফে মুন্সি মেম্বারকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
মঙ্গলবার (৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুরের দিকে তাকে জেলা শহর মাইজদী থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
এর আগে গতকাল সোমবার দিনগত রাত পৌনে ২টার দিকে উপজেলার চর ওয়াপদা ইউনিয়নে এই গণধর্ষণের ঘটনা ঘটে।
গ্রেফতারকৃত আবুল খায়ের ওরফে মুন্সী মেম্বার (৫০) উপজেলার চরওয়াপদা ইউনিয়নের ৫নম্বর ওয়ার্ডের চরকাজী মোখলেছ গ্রামের মৃত গোলাপের রহমানের ছেলে এবং চরওয়াপদা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের বর্তমান সভাপতি।
নির্যাতিত গৃহবধূর বয়স (৩০) ও তার মেয়ের বয়স (১২)। সে স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, ভুক্তভোগী গৃহবধূর স্বামী পেশায় একজন দিনমজুর। সে ৩-৪ দিন পর বাড়িতে আসে। তাকে কাজের জন্য প্রায় বাইরে থাকতে হয়।
ভুক্তভোগী গৃহবধূর ভাষ্যমতে, এ সুযোগে গতকাল সোমবার দিনগত রাত পৌনে ২টা থেকে ২টার মধ্যে তার বসতঘরের সিঁধ কেটে তাকে এবং তার মেয়েকে ধর্ষণ করে তিনজন। এর মধ্যে তাকে ধর্ষণ করে দুইজন ও তার মেয়েকে ধর্ষণ করে একজন।
নির্যাতিতার স্বামী জানান, মুন্সী মেম্বার কিছুদিন আগে তার স্ত্রীকে পোড়া মোরগ খাওয়ানোর প্রস্তাব দেয় এবং বিপদ-আপদে পড়লে সহযোগিতার চেষ্টা করত। কিন্তু তার স্ত্রী ওই প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় মুন্সী মেম্বার তার মুঠোফোন নম্বর সংগ্রহ করে ফোন করে উক্ত্যক্ত করত। পরে মোবাইল নম্বর ব্লক করে দিলে সে ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে। এসব ঘটনার জের ধরে তারা এ ঘটনা ঘটায়।
নোয়াখালীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বিজয়া সেন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, মামলার প্রধান আসামি আবুল খায়ের ওরফে মুন্সী মেম্বারকে তাৎক্ষণিক অভিযান চালিয়ে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় দুজনের নাম উল্লেখ করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা নেওয়া হয়েছে। ওই মামলায় আরও একজনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে। গৃহবধূ ও তার মেয়ের ডাক্তারি পরীক্ষা ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে সম্পন্ন করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটের দিন নোয়াখালীল সুবর্ণচর উপজেলায় এক গৃহবধূকে গণধর্ষণের ঘটনা ঘটে। এ নিয়ে দেশব্যাপী ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি হয়। গতকাল সোমবার বেলা ১২টার দিকে নোয়াখালী নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারক (জেলা জজ) ফাতেমা ফেরদৌস ওই দলবদ্ধ ধর্ষণ মামলায় ১৬ আসামির মধ্যে ১০ জনের মৃত্যুদণ্ড ও ছয় আসামির যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন। একই সাথে তাদের অর্থদণ্ডও করা হয়। এ উপজেলা গণধর্ষণের জন্য দেশব্যাপী বারবার আলোচনায় আসছে।