লক্ষ্মীপুরের কমলনগর উপজেলার তোরাবগঞ্জ অগ্রণী স্কুলের ক্যাম্পাস থেকে চুরি হওয়া শিশু মালিহা ইসলাম ওহি (৯ মাস)কে পাওয়া গেছে সড়কের পাশে। পরে খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে শিশুটিকে উদ্ধার করে মায়ের কোলে ফিরিয়ে দেন।
সোমবার (১১ ফেব্রুয়ারি) সকালে শিশু ওহির মা মরিয়ম বেগম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
পুলিশের বরাত দিয়ে তিনি জানান, রাত ১২টার দিকে কমলনগর থানার অদূরে উপকূল ডিগ্রী কলেজ এলাকায় শিশুটিকে একটি কম্বল মোড়ানো অবস্থায় রাস্তার পাশে পড়ে থাকতে দেখতে পেয়ে একপথচারী চিৎকার দেয়। পরে পুলিশ গিয়ে শিশুটিকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। রাতেই এক স্বজনের মাধ্যমে খবর দিয়ে শিশুর মা মরিয়মকে ডেকে নিয়ে ওহিকে তার কোলে তুলে দেয় পুলিশ।
কমলনগর থানার ওসি (তদন্ত) আবদুল জলিল বলেন, রাত আনুমানিক সাড়ে ১২টার দিকে থানার নিকট উপকূল কলেজের পিছনে মাটির রাস্তা দিয়ে জনৈক পথচারী ইউছুপ বাড়ি যাওয়ার সময় শিশুটি দেখতে পায়। তিনি চিৎকার দিয়ে লোকজন জড়ো করে পুলিশে খবর দেয়। পরে পুলিশ গিয়ে শিশুটিকে উদ্ধার করে পরিচয় নিশ্চিত করে। এর আগে শিশুর মা থানায় একটি জিডি করে। সে সূত্রে পুলিশ বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালায়।
ওহির মা মরিয়ম বেগম জানান, চুরি হওয়া ওহির বড় বোন সাবিহা ইসলাম মিহি (৬) অগ্রণী রেসিডেন্সিয়াল স্কুল এন্ড কলেজের নার্সারী শ্রেণির ছাত্রী। বৃহস্পতিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) বিদ্যালয়ে বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগীতা অনুষ্ঠান ছিল। সেখানে মিহি যেমন খুশি তেমন সাজো অনুষ্ঠানে যোগ দেয়। এতে ওহিকে নিয়ে তার মা মরিয়মও বিদ্যালয়ে যায়। মিহিকে সাজানোর জন্য চুলের ক্লিপ ও বেল্ট আনার জন্য বিদ্যালয়ের পাশেই বাজারে যান মরিয়ম। এসময় মায়া নামে ষষ্ঠ শ্রেণির এক ছাত্রী ওহিকে তার কাছে রেখে দেয়। মায়া সম্পর্কে মরিয়মের ফুফাতো বোন হয়। এরমধ্যেই মায়ার কোল থেকে অচেনা এক নারী ওহিকে নিয়ে যায়। বাজার থেকে ফিরে ওহির কথা জিজ্ঞেস করলে মায়া জানায় সে অন্য একজনের কোলে রয়েছে। কিছুক্ষণ পরে ওহিকে আনতে বললে জানায়, অন্য এক নারী ওহিকে কোলে নিয়েছে। এরপর থেকে তাকে আর খুঁজে পাওয়া যায়নি। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল এসে বিদ্যালয়ের ক্লোজ সার্কিট (সিসি) ক্যামেরা যাচাই করে দেখতে পায় মাথায় লাল হিজাব, মুখে মাস্ক ও কালো খয়েরি বোরকা পরিহিত এক নারী শিশুটিকে কোলে নিয়ে বের হয়ে যাচ্ছে। বাজারের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সিসি ক্যামেরা যাচাই করেও একই দৃশ্য দেখা গেছে।
এ খবরটি গণমাধ্যমে প্রতাশিত হওয়ার পর হাজার হাজার নাগরিকরা তাদের ফেসবুক পোস্টে শিশুটিকে উদ্ধারে সহযোগিতা কামনা করে পোস্ট দেয়। পরে পুলিশ, র্যাব ও সিআইডি বিভিন্ন স্থানে অভিযান অব্যাহত রাখে।