শরীয়তপুরে ভাঙন রক্ষায় নদীতে ফেলা হাজার হাজার জিওব্যাগ শীত মৌসুমে পদ্মার পানি কমে যাওয়ায় নদী পাড় জুড়ে জেগে ওঠেছে। বসতবাড়ির আঙ্গিনার বেষ্টনী নির্মাণ, ঘরের মেঝের কার্পেট ও গবাদী পশুর গরম কাপড় তৈরী করতে জেগে ওঠা এসব জিওব্যাগের বালু ফেলে দিয়ে ব্যাগ চুরি করে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় একটি শ্রেণীর বিরুদ্ধে।
নদী ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্থরা ক্ষোভ জানিয়ে বলছেন, দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে আসছে বর্ষায় আবারও ভাঙনের শিকার হতে পারে পদ্মা পাড়ের চরাঞ্চলের হাজার হাজার মানুষ।
শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ উপজেলার সখিপুরের উত্তর তারাবুনিয়া ইউনিয়ন থেকে চরমোহন পর্যন্ত শীত মৌসুমে জেগে ওঠা জিওব্যাগ কাঁচি দিয়ে কেটে নিয়ে যেতে দেখা গেছে স্থানীয় একটি শ্রেণীকে।
স্থানীয় ও পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, পদ্মা নদীর ভাঙনে কয়েক হাজার মানুষ বসতবাড়ি হারিয়ে অসহায় হয়ে পড়েছিলেন। স্থানীয় সংসদ সদস্যের প্রচেষ্টায় ৫৫২ কোটি টাকা ব্যয়ে উত্তর তারাবুনিয়া থেকে চরমোহন পর্যন্ত ৫ দশমিক ৮ কিলোমিটার জায়গা জুড়ে জিওব্যাগ ফেলা হয়। যা ২০২৩ সালের মে মাসে শুরু হয়ে গত বর্ষায় শেষ হয়। পানি উন্নয়ন বোর্ড কাজটি সমাপ্ত করে বাঁধ প্রকল্পের আওতাধীন এলাকাকে সোনার বাংলা এভিনিউ নামকরণ করে, যা স্থানীয়দের বিনোদন কেন্দ্র হিসেবে পরিণত হয়। বাঁধ প্রকল্পের সব অংশেই সেলাই কেটে ব্যাগ নিয়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটলেও চরভাগা ইউনিয়নের ৫ ও ৬ নং ওয়ার্ড এলাকায় জমেছে জিওব্যাগের বালুর স্তুপ। দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে আসছে বর্ষায় আবারও ভাঙনের মুখে পরবে পদ্মার চরাঞ্চলের হাজার হাজার মানুষ।
আরিফ হোসেন নামে একজন বলেন, সরকার কোটি কোটি টাকা খরচ করে নাদী রক্ষায় কাজ করছে। জিওব্যাগ ফেলার কারণে আমরা নতুন করে স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছি। এক বছরও হয়নি এখনও ব্যাগগুলো ফেলেছে সরকার। হরিলুটের মতো সকাল-বিকেল জিওব্যাগ নিয়ে যাচ্ছে মানুষ। যাদের বাড়িঘর রক্ষার জন্য সরকার জিওব্যাগ ফেলল, তারাই এখন সেলাই কেটে ব্যাগ নিয়ে যাচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিষ্টদের দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া দরকার।
চরভাগা এলাকার মাহবুব আলম বলেন, এলাকার কিছু নারী-পুরুষ সবাই কাঁচি দিয়ে কেটে বালি ফেলে দিয়ে ব্যাগ নিয়ে যায়। নিষেধ করলেও কেউ কথা শোনে না।
চরভাগা ইউপির সদস্য বোরহান বেপারী বলেন, জিওব্যাগ চুরির বিষয়টি জানার পরপরই আমরা স্থানীয় মসজিদের মাইকসহ বিভিন্ন মাধ্যমে ব্যাগ না নিতে এলাকাবাসীকে অনুরোধ করে সতর্ক করে দিয়েছি। তারপরও কোনোভাবে থামানো যাচ্ছে না।
এবিষয়ে শরীয়তপুর পানি উন্নয়ন বোর্ড এর নির্বাহী প্রকৌশলী আহসান হাবীব বলেন, বিষয়টি জানার পরেই স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ সচেতন মহলকে বলেছি অসচেতন এসব মানুষদের সচেতন করতে মাইকিংসহ বিভিন্ন মাধ্যমে প্রচার প্রচারণা করতে। এরপরেও যদি তারা সচেতন না হয়, তাহলে আমরা আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করব।