ঈদ এলেই ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে ফিটনেসবিহীন লক্কর-ঝক্কর গাড়ি ‘নতুন’ হয়ে ওঠে। আশুলিয়ার বিভিন্ন ওয়ার্কশপে এখন এই লক্কর-ঝক্কর গাড়ি মেরামতেই ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন কারিগর ও রঙ মিস্ত্রিরা। তারা বলছেন, পুরনো গাড়ির ‘বডি’ রঙিন হলেই মিলে যায় পথে নামার অনুমতি। তবে পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, যতই রঙ করা হোক, ফিটনেস না থাকলে গাড়ি পথে চলতে পারবে না।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, রাজধানী ঢাকার সঙ্গে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমের প্রায় ২১টি জেলায় সড়ক পথে যাতায়াতের অন্যতম পথ হচ্ছে ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক। ঈদের তিন-চারদিন আগে থেকেই এই রুটে যানবাহনের সংকট দেখা দেয়। সে সুযোগই কাজে লাগায় একশ্রেণির পরিবহন ব্যবসায়ী। তাদের কারণেই ঈদে ঘরমুখো মানুষ রাস্তায় ভোগান্তির শিকার হন।
ওয়ার্কশপ মালিকরা জানান, ঈদ সামনে রেখে গ্যারেজে পুরাতন গাড়ির কাজ বেড়ে গেছে কয়েক গুণ। গাড়ির রঙ ও ইঞ্জিনের ত্রুটিগুলো মেরামত করা হচ্ছে বেশি। ২৬ রোজার আগেই এসব গাড়ির কাজ শেষ হবে, আর ২৭ রোজাতেই গাড়িগুলো পথে নামানো হবে।
সরেজমিনে আশুলিয়ার বেশ কয়েকটি ওয়ার্কশপ ঘুরে দেখা যায়, ফিটনেসবিহীন ভাঙাচোরা গাড়িগুলো জোড়াতালি দেওয়া হচ্ছে ওয়ার্কশপে। এই মুহূর্তে গ্যারেজের মিস্ত্রিরা পুরাতন গাড়ি মেরামতে দিন-রাত কাজ করে যাচ্ছেন। কোনো গাড়ির ইঞ্জিন, ব্রেকে সমস্যা কিংবা সিটগুলো ছেঁড়া। আবার কোনো গাড়ির বডির রঙ উঠে গেছে।
রঙমিস্ত্রি সাইদুল বলেন, ‘পুরাতন গাড়ি ঈদের সামনে রঙ করে নতুন করা হচ্ছে। যাতে যাত্রীরা আকৃষ্ট হয়। সময়মতো ডেলিভারি দেওয়ার জন্য দিন-রাত গাড়িতে রঙের কাজে ব্যস্ত থাকতে হচ্ছে।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন ওয়ার্কশপের পরিচালক জানান, এবারের ঈদে গাড়ির কাজ কম হচ্ছে। আর বর্তমানে যেসব গাড়ি আমরা মেরামত করছি সেগুলোর বেশির ভাগরেই রুট পারমিট নেই। ঈদের দুই চার দিন আগে রঙ শেষ করে গাড়িগুলো মালিকদের কাছে ডেলিভারি দিতে হবে।
নয়ারহাট একটি ওয়ার্কশপে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে লক্কর-ঝক্কর কয়েকটি গাড়ি মেরামতের কাজ চলছে। কেউ বাসে রঙ করছেন, কেউবা ইঞ্জিন খুলে বসেছেন। এভাবেই এখানকার মিস্ত্রিরা ব্যস্ত সময় পার করছেন। মালিক জানান, পুরানো গাড়িগুলো মেরামত শেষে ২৫-২৬ রোজার মধ্যে কিভাবে ডেলিভারি দেওয়া যায় এ জন্য রাত-দিন কাজ করা হচ্ছে।একই চিত্র দেখা যায় কবিরপুর একটি ওয়ার্কশপে।
বাসচালক সোহেল মিয়া বলেন, ‘ঈদের সময় যাত্রীরা চান সুন্দর গাড়িতে উঠতে। তাই বাসের ভেতরের সিট ও বডিতে রঙয়ের কাজ করার জন্য আনা হয়েছে। তাই গাড়ি সুন্দর করা হচ্ছে।’ তবে গাড়ির ফিটনেসের বিষয়ে তিনি কিছু বলতে চাননি।
ঢাকা-আরিচা রুটে নিয়মিত চলাচলকারী বাসযাত্রী মামুনুর রশীদ বলেন, ‘ফিটনেস না থাকার পরও শুধু রঙ দিয়ে গাড়িগুলো রাস্তায় নামানো হচ্ছে। এর ফলে অহরহ দুর্ঘটনা ঘটছে। এই গাড়িগুলোর ওপরে ফিটফাট, ভেতরে সদরঘাট। এখানে প্রশাসনের কোনো নজরদারিই নেই।’
সাভার হাইওয়ে থানার (সাব ইন্সপেক্টর ) মো. বাবুল আক্তার বলেন , ‘প্রতিবারের মতো এবারের ঈদেও মহাসড়কে আমরা পর্যাপ্ত ব্যবস্থা রেখেছি। পাশাপাশি ফিটনেসবিহীন গাড়িও যাতে চলতে না পারে সেদিকেও ব্যবস্থা রাখা হবে বলে জানান তিনি।ফিটনেসবিহীন গাড়ির বিরুদ্ধে নিয়মিত অভিযান চলমান রয়েছে বলেও জানান।
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর
যোগাযোগ: । [email protected] । বিজ্ঞাপন ও বার্তা সম্পাদক: 01894944220
ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।
© 2024 Sangbad Sarabela All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh