সিলেট মহানগর স্বেচ্ছাসেবকলীগের ১১নং ওয়ার্ড সভাপতি আব্দুস সালাম (৪০) ও তার সহযোগী বিরুদ্ধে এক তরুণীকে আটকে রেখে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
গত শুক্রবার (২৯ মার্চ) রাতে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের কোতোয়ালি থানায় মামলাটি দায়ের করেছেন ভুক্তভোগী তরুণীর মা।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের কোতোয়ালি থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সুমন কুমার চৌধুরী।
মামলায় প্রধান আসামি হিসেবে আব্দুস সালামের নাম রয়েছে। তিনি নগরের লালাদিঘির পার এলাকার আব্দুর রহিমের ছেলে। এছাড়াও এই মামলার অপর আসামি আব্দুল মনাফ (৩৮) একই এলাকার ইশাদ মিয়ার ছেলে। তিনি আব্দুল মনাফ সিলেট মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সদস্য। এ ছাড়াও অজ্ঞাত কয়েকজনকে এই মামলার আসামি করা হয়েছে।
মামলায় অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, নির্যাতিতা ওই তরুণী নগরীর শেখঘাটের একটি বোতল ফ্যাক্টরিতে কাজ করতো। পরিবারের সদস্যরা ওই তরুণীকে সিলেট শহরের বাসায় রেখে গ্রামের বাড়িতে বেড়াতে যান। এই সুযোগে একই কলোনির বাসিন্দা রেখা বেগম লালদিঘীরপাড়ের আবদুস সালামের সাথে তরুণীকে পরিচয় করিয়ে দেয়। আবদুস সালাম ‘ভালো কাজ’ দেওয়ার প্রলোভন দেখায় তরুণীকে।
গত ৭ জানুয়ারি রেখা বেগম ভালো কাজের কথা বলে তরুণীটিকে আবদুস সালামের লালদিঘীরপাড়স্থ বাসায় নিয়ে যায়। পরে বাসার একটি রুমে ২২ দিন আটকে রেখে আবদুস সালাম তাকে ধর্ষণ করে। পরিবারের সদস্যরা সিলেট নগরীস্থ বাসায় ফিরে তরুণীকে না পেয়ে সম্ভাব্য সকল স্থানে খোঁজ নেন। কিন্তু কোথাও না পেয়ে থানায় জিডি করতে চাইলে রেখা বেগম বাধা দিয়ে তাদেরকে আবদুস সালামের কাছে নিয়ে যায়। আবদুস সালাম তরুণীটিকে উদ্ধারের ব্যাপারে আশ্বাস দেয়। কয়েকদিন পর পরিবারের সদস্যরা আবারও আবদুস সালামের কাছে গেলে সে জানায় লন্ডন প্রবাসী একটি পরিবারের কাছ থেকে তরুণীটিকে উদ্ধার করা হয়েছে। ওই সময় লন্ডন প্রবাসী পরিবারের পরিচয় জানতে চাইলে আবদুস সালাম ক্ষেপে যায়। কিন্তু নির্যাতিতা তরুণী আবদুস সালাম কর্তৃক ধর্ষিত হওয়ার ঘটনা খুলে বললে সে প্রাণনাশের হুমকি ও তাকে বিয়ে করার প্রতিশ্রুতি দেয়।
এ ঘটনার ৩ দিন পর আবদুস সালাম বিয়ের কথা বলে ওই তরুণীকে তুলে নিয়ে যায়। পরে মামলার আসামি আবদুল মনাফের মাধ্যমে তাকে হবিগঞ্জে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। সেখানে আটকে রেখে তাকে আবদুস সালাম ও আবদুল মনাফসহ অজ্ঞাত আরও কয়েকজন তরুণীটিকে ধর্ষণ করে। সেখান থেকে গত ২৬ মার্চ এক আত্মীয়ের মাধ্যমে কৌশলে তরুণীকে উদ্ধার করে আনা হয়।
কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি (তদন্ত) সুমন চৌধুরী বলেন, ভিকটিম আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। মামলাটি আমরা তদন্ত করছি। এখন পর্যন্ত কাউকে আটক করা যায়নি। আসামিদের গ্রেফতারে পুলিশি অভিযান অব্যাহত আছে।