লক্ষ্মীপুরে আক্তার হোসেন বাবু নামে এক স্কুলশিক্ষককে বৈদ্যুতিক খুঁটিতে বেঁধে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন করেছে বখাটেরা। এ ধরনের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ব্যাপক সমালোচনা সৃষ্টি হয়।
নিযর্যাতনের ঘটনায় রবিবার (১৪ এপ্রিল) রাতে ওই শিক্ষকের ভাই মাসুদুর রহমান বাদী হয়ে সদর মডেল থানায় ৮ জনের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
এর মধ্যে স্থানীয় বখাটে পেঁচা সুমন নামে এক যুবকসহ ৫ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে।
আক্তার হোসেন বাব লক্ষ্মীপুর পৌর শহরের লাহারকান্দি এলাকার লকিয়ত উল্যাহর ছেলে ও ঢাকা ক্যামব্রিজ স্কলারর্স স্কুলের শিক্ষক।
ভুক্তভোগীর স্বজন ও থানায় দায়ের করা অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ঈদের ছুটিতে আক্তার বাড়িতে বেড়াতে এসেছে। ১২ এপ্রিল শুক্রবার রাতে লক্ষ্মীপুর শহরের আইয়ুব আলী পোল এলাকায় তার ছোট ভাই মাসুদের বাড়িতে বেড়াতে আসেন। রাতে সেখান থেকে আসার পথে স্থানীয় বখাটে পেঁচা সুমন, সাইমন হোসেন, অটোরিকশা চালক আলাউদ্দিন আলো, মমিন উল্যাহ ও সুমনসহ কয়েকজন তাকে মলম পার্টি অপবাদ দিয়ে বৈদ্যুতিক খুঁটির সঙ্গে হাত-পা বেঁধে ফেলে। এসময় তার কাছে থাকা টাকা ও মোবাইল ফোন নিয়ে যায় অভিযুক্তরা। পরে তাকে জনসম্মুখে লাঠি দিয়ে এলোপাতাড়ি পিটিয়ে গুরুতর আহত করে ওই বখাটেরা। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় ওই শিক্ষককে সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
এদিকে রবিবার (১৪ এপ্রিল) এ ঘটনার ১৬ সেকেন্ডের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। ভিডিওতে দেখা যায়, মলম পার্টি বলে এক যুবক লাঠি দিয়ে এলোপাতাড়ি শিক্ষক আক্তারের পায়ে আঘাত করছে। এসময় শিক্ষক আক্তার অঝোরে কাঁদতে থাকেন। ঘটনাটি পাশে দাঁড়িয়ে কয়েকজন যুবক দেখছিলেন। কেউই তাকে রক্ষা করতে এগিয়ে আসেনি।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শিক্ষক আক্তার হোসেন বাবু বলেন, ‘ছোট ভাই মাসুদের বাড়ি থেকে আসার সময় ওই বখাটেরা অন্যায়ভাবে পথরোধ করে তার মোবাইল ও টাকা ছিনিয়ে নেয়। একপর্যায়ে মলম পার্টি আখ্যা দিয়ে তারা খুঁটির সঙ্গে বেঁধে তাকে নির্যাতন করে। এতে তিনি অচেতন হয়ে পড়েন।’
সদর হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডা. এ কে আজাদ বলেন, ‘আক্তারের শরীরের বিভিন্ন অংশে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। পরীক্ষা-নিরীক্ষার প্রতিবেদন পাওয়ার পর তার শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে বিস্তারিত বলা যাবে।’
লক্ষ্মীপুর সদর মডেল থানার ওসি সাইফুদ্দিন আনোয়ার বলেন, ‘ঘটনাটির তদন্ত চলছে। জড়িতদের গ্রেপ্তারে পুলিশ কাজ করছে।’