পঁয়ষট্টি বছর বয়সী সমমেহেরা বেগম। ছয় ছেলে ও তিন মেয়ে থাকার পরও ঠাঁই হলো ছোট মেয়ে স্বামী পরিত্যক্তা জান্নাত আক্তার মুন্নির টাকায় নির্মিত স্বামীর ভিটিতে। ছোট ছেলে ও তার স্ত্রীকেও রাখেন একই ঘরে। এতেই কাল হয় মা-মেয়ের। সম্পত্তির লোভে ও টাকা আত্মসাদের জন্য স্বামীকে ফুসলিয়ে রাতের অন্ধকারে বৃদ্ধা মা ও বোন মুন্নিকে বের করে দেন ছোট ছেলে জাহাঙ্গির আলম ও তার স্ত্রী পান্না বেগম।
মঙ্গলবার বিকেলে লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার উত্তরজয়পুর ইউনিয়ন খন্ডলী পুকুর পাড় এলাকায় ভুক্তভোগী ওই দুই নারী এবং স্থানীয়রা এসব কথা বলেন।
ভুক্তভোগী সমমেহেরা বেগম ও মুন্নি উত্তরজয়পুর ইউনিয়নের খন্ডলী পুকুর পাড় এলাকার বাসিন্দা। অভিযুক্ত জাহাঙ্গির আলম ও পান্না বেগম সম্পর্কে ছেলে ও ছেলের স্ত্রী।
ভুক্তভোগী সমমেহেরা বেগম ও মুন্নি বেগমসহ ওই এলাকার কয়েকজন বাসিন্দা জানান, স্বামী পরিত্যক্তা মুন্নি নিজের অর্থ দিয়ে পৈত্রিক কিছু সম্পত্তি ক্রয় করেন। নিজের টাকা দিয়ে বসতঘর নির্মাণ করে বৃদ্ধা মাকে নিয়ে বসবাস করছেন। সম্প্রতি তার ছোট ভাই জাহাঙ্গীর ও তার স্ত্রী পান্নাকে ওই বাড়িতে থাকতে দেন তিনি। গভীর রাতে সম্পত্তি ও বসতঘর দখলের জন্য বৃদ্ধা মা ও বোনকে বের করে দেন জাহাঙ্গির। বাড়ির চারপাশে টিন দিয়ে বন্ধ করে সিসি ক্যামেরা লাগিয়ে দেয় রাতারাতি। বৃদ্ধা ওই দুই নারী এখন রাত্রিযাপন করে রাস্তায়।
মুন্নি বেগম আরো বলেন, তার সঞ্চয়কৃত দুই লাখ টাকা জাহাঙ্গীর ধার নিয়ে আত্মসাৎ করেছে। পাওনা টাকা দাবি করলে ও তার সম্পত্তি বিবাদীদের কাছে বিক্রি করবে না বলে জানালে তারা জোর করে ঘর থেকে বের করে দিয়েছে। এখন তারা চরম নিরাপত্তাহীনতার সাথে বাগানে খোলা আকাশের নিচে বসবাস করছে বলেও জানায়।
এদিকে এ ঘটনায় বক্তব্য নিতে গেলে জাহাঙ্গিরের স্ত্রী পান্না বেগম কোন কথা বলতে রাজি হননি। তবে জাহাঙ্গির আলম বলেন, কোন ধরনের বন্টননামা ছাড়া তার বোন সম্পত্তি ক্রয় করেছেন। এ ধরনের ক্রয় শুদ্ধ নয় বলে দাবি করেন তিনি।
ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মো. আনোয়ার বলেন, তিনি এ বিষয়ে কিছুই জানেন না। তবে জাহাঙ্গির বাড়িতে নেই এই ঘটনার সুস্থ তদন্ত করে এ বিষয়ে খোঁজখবর নেয়ার কথা জানান এই জনপ্রতিনিধি।