অদম্য ইচ্ছা শক্তি আর অধ্যাবসায় থাকলে লক্ষ্যে পৌঁছাতে দরিদ্র্য বা কোন কিছুই আটকাতে পারে না। তারই দৃষ্টান্ত দিলেন কৃষকের ছেলে মো. ফারুক। শিক্ষকদের অনুপ্রেরণামুলক গল্প বাবা-মার অদম্য ইচ্ছা ছিল বলেই সে সফলতা পেয়েছে।
বলছিলাম খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গার বাইল্যাছড়ির কৃষক আব্দুল মতিনের ছেলে মো. ফারুকের জিপিএ৫ পাবার কথা।
তার বাবা দরিদ্র হলেও মনে প্রাণে একজন কৃষক। নিজের এক খন্ড জমিতে ধান সহ বিভিন্ন কৃষিজ পণ্য উৎপাদন করে ৬ সন্তান নিয়েই চলে তার সংসার।
ফারুক বিজ্ঞান বিভাগ থেকে জিপিএ৫ পাবার গৌরব অর্জন করেন। লেখাপড়ার ফাঁকে তার বাবার সাথে কৃষি কাজে সহযোগিতা করতেন। সে মাটিরাঙ্গা রেসিডেন্সিয়াল স্কুল থেকে এসএসসি পরিক্ষায় জিপিএ৫ পেয়েছে। তার সাথে তার ঘনিষ্ঠ বন্ধু প্রান্ত একই স্কুল থেকে জিপিএ৫ পায়। দরিদ্র পরিবার থেকে ফারুকের এমন ভাল ফলাফলে তার শিক্ষক, বন্ধুবান্ধব, আত্মীয় স্বজন ও এলাকাবাসী সকলেই আনন্দিত।
ফারুক রেসিডেন্সিয়াল স্কুলে হোষ্টেলে থেকে পড়াশোনা করতো। তার বাবার পক্ষে তার পড়াশোনার খরছ চালানো খুবই কষ্টসাধ্য ছিল। সে রাতে হোষ্টেলে থাকতো বলেই শুধুমাত্র আবাসিক খরচ টা তার বাবাকে দিতে হতো কিন্তুু তার বাবা প্রতিদিন তার জন্য খাবার নিয়ে যেতেন। দরিদ্র্যের কষাঘাতে মাঝেমধ্যে ফারুক কে অর্ধাহারে অনাহারে থাকতে হতো। অভাবের সংসারে কাজের ফাঁকে লেখাপড়া চালিয়ে রীতিমতো ভালো ফলাফল করায় এলাকায় আলোচনার ঝড় উঠেছে। তার আত্মীয় স্বজনরা এমন ভাল ফলাফলে সন্তোষ প্রকাশ করেন। ফারুক ৫ম শ্রেণিতে ট্যালেন্টফুলে বৃত্তি পেয়েছে। অষ্টমেও সেভাল ফলাফল করেছে। তারই ধারাবাহিকতায় এসএসসি তে জিপিএ৫ পাওয়া।
বড় হয়ে ইঞ্জিনিয়ার হবার আশা প্রকাশ করে ফারুক জানান, আমার শিক্ষক বাবা-মা আমাকে অনুপ্রেরণা জুগিয়েছিল বলেই আমি এমন একটা ভাল ফল করতে পেরেছি। এইচএসসি তে নটরডেম কলেজে চান্স পাবার আশায় নিজেকে প্রস্তুত করে নিচ্ছি। এরপর আমি ইঞ্জিনিয়ার হয়ে দেশের সেবা করবো। তবে দরিদ্র্যতা পিছু ছাড়ছে না এর পরেও চেষ্টা চালিয়ে যাবো।
দরিদ্রতার কারণে উচ্চ শিক্ষা অর্জন থমকে যেতে পারে জানিয়ে ফারুকের বাবা আব্দুল মতিন বলেন, সংসারের অভাব অনটনের মধ্যেও খুব কষ্ট করে ফারুক কে হোষ্টেলে রেখে পড়াশোনা চালিয়েছি। উচ্চ শিক্ষা অর্জনে তাকে অর্থনৈতিক সাপোর্ট দেয়া হয়তো সম্ভব হবে না। তবে আমি সর্বোচ্চ চেষ্টা করবো তাকে বিসিএস পর্যন্ত লেখাপড়া চালিয়ে নিতে।
মাটিরাঙ্গা রেসিডেন্সিয়াল স্কুলের প্রধান শিক্ষক মো. আবছার হোসেন বলেন, ফারুক আমার বিদ্যালয়ের বিনয়ী ও ভাল ছাত্র। সে লেখাপড়ায় খুবই ভালো। তার এই সাফল্যে আমাদের স্কুল এবং এলাকাবাসী গর্বিত। আমরা তার উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ কামনা করছি।
মাটিরাঙ্গা উপজেলা একাডেমিক সুপারভাইজার শরিফুল ইসলাম বিদ্যুৎ বলেন, মাটিরাঙ্গায় এসএসসি ও সমসমান পরিক্ষায় জিপিএ৫ পেয়েছে ১০ জনে। তার মধ্যে ফারুক অন্যতম। মাটিরাঙ্গায় জিপিএ৫ প্রাপ্ত রা উচ্চ শিক্ষা অর্জন করে দেশের সুনাম বয়ে আনবে এটাই প্রত্যাশা করি।
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর
যোগাযোগ: । [email protected] । বিজ্ঞাপন ও বার্তা সম্পাদক: 01894944220
ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।
© 2025 Sangbad Sarabela All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh