রামপালে ল্যাবওয়ান ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে প্রসূতিকে ভুল চিকিৎসার কারণে জীবনমৃত্যুর সন্ধিক্ষণে চুমকি মন্ডল (২৬) নামের এক প্রসূতি। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী পরিবারের স্বামী কিংকর মন্ডল রামপাল থানায় লিখিত অভিযোগ করেও প্রতিকার না পেয়ে দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
অভিযোগে জানা গেছে, গত ইং ০৫-০২-২০২৪ তারিখ উপজেলার হুড়কা সানবান্দ গ্রামের কিংকর মন্ডলের স্ত্রী সন্তান সম্ভবা চুমকি মন্ডলকে ফয়লাহাটের ল্যাবওয়ান ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়। গত ইং ০৫-০২-২০২৪ তারিখ ওই ক্লিনিকে সিজারিয়ানের মাধ্যমে কন্যা সন্তান জন্ম নেয়। ভুল সিজার অপারেশনের কারণে তার স্ত্রী অসুস্থ হয়ে পড়ে। এক পর্যায় অপারেশনের স্থানে ক্ষতের সৃষ্টি হয়ে পুরো সেলাই কেটে গিয়ে মারাত্মক অবস্থার সৃষ্ট হয়। ওই সময় ল্যাবওয়ান কর্তৃপক্ষের কর্ণধার মো. সেকেন্দার আলীকে বিষয়টি জানালে তিনি বিষয়টি এড়িয়ে যান। তখন ভুক্তভোগী খোঁজখবর নিয়ে জানতে পারেন, অনভিজ্ঞ চিকিৎসক দ্বারা অপারেশন করানোর কারণে তার স্ত্রীর সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে। হতদরিদ্র ভ্যান চালক শেষ সম্বল বিক্রি করে, ধারদেনা করে ওই অভিযোগ দেয়া পর্যন্ত প্রায় ৭৫ হাজার টাকা খরচ করেন। রামপাল থানায় অভিযোগ দেওয়ার পরে প্রায় দেড়মাস গত হলেও কোন প্রতিকার মিলছে না বলে ভুক্তভোগী কিংকর দাবী করেন। এরপরেও তার আরও ৫০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে বলে তিনি জানান । ভুক্তভোগী কিংকর আরো অভিযোগ করেন, থানায় অভিযোগ দেয়ার পরে সাংবাদিকদের বিষয়টি অবগত করে লিখিত কপি দিলেও তারাও বিষয়টি এড়িয়ে যান।
নাম প্রকাশে আরো কয়েকজন রোগীর স্বজনেরা জানান, তাদের অপারেশনের পরে প্রসূতিরা গুরুতর অসুস্থ হয়েছে। তারা জীবনমৃত্যুর সাথে লড়াই করেছে। পরে তাদের জরিমানা দিয়ে পার পেয়েছে ক্লিনিক মালিক সেকেন্দার আলী। ক্লিনিকের বিরুদ্ধে অভিযোগ তারা অনভিজ্ঞ চিকিৎসক দিয়ে চিকিৎসা করান, রোগীদের সাথে ভালো ব্যবহার করেন না, চিকিৎসার নামে অধিকহারে টাকা হাতিয়ে নেয়। বারবার ভুল চিকিৎসার পরেও অদৃশ্য কারণে পার পেয়ে যান ল্যাবওয়ানের স্বত্বাধিকারী ওই সেকেন্দার আলী।
এ ব্যাপারে ল্যাবওয়ান ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালিক অভিযুক্ত সেকেন্দার আলীর কাছে জাতে চাইলে তিনি সকল অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ১০ টা রোগীর চিকিৎসা করলে ২/১ টা রোগী একটু অসুস্থ হতেই পারে। যে রোগীর স্বজন অভিযোগ করেছেন, তারা সমস্যার কথা জানালে আমরা তাকে ক্লিনিকে নিয়ে আসতে বলেছি, কিন্তু তারা রোগীকে নিয়ে আসেনি। উল্টো তাকে বাড়ীতে রেখে হাতুড়ে চিকিৎসক দিয়ে চিকিৎসা করাচ্ছে। তারা অহেতুক আমাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে হয়রানি করছে।
এ বিষয়ে রামপাল থানার অফিসার ইনচার্জ সোমেন দাশের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ল্যাবওয়ান ক্লিনিকের ভুল চিকিৎসার অভিযোগ উঠেছে বলে শুনেছি। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যাবস্থা নেয়া হবে।
সেবার নামে রামপালে ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার রোগীদের মৃত্যু ঝুঁকিতে ফেলে দিচ্ছে। রোগীদের চিকিৎসার নামে অবৈধভাবে অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে। ক্লিনিকগুলো স্বাস্থ্য সম্মত কি না, প্রয়োজনীয় অনুমোদন আছে কি না? এমন সব ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলো চিহ্নিত করে তাদের দ্রুত শাস্তির আওতায় আনার জোর দাবী করেন সচেতন মহল।
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর
যোগাযোগ: । [email protected] । বিজ্ঞাপন ও বার্তা সম্পাদক: 01894944220
ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।
© 2024 Sangbad Sarabela All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh