মাত্র সাড়ে সাত শতাংশ জমির জন্য গৃহবধূ নাহারকে (৪০) খুন করার অভিযোগে ৪ জনকে গ্ৰেফতার করেছে র্যাব। গতকাল রাত পৌনে নয়টার দিকে গুরুদাসপুর উপজেলার ধারাবারিষা ইউনিয়নের সোনাবাজু গ্রাম থেকে তাদের গ্ৰেফতার করা হয়।
গ্ৰেফতারকৃতরা হলো শাহা মাহমুদ (মাদাই) এর ছেলে মো. মাজেম আলী (৫৫), মৃত ওসমান প্রাং এর ছেলে ফিরোজ হোসেন (৪৫), শাহানুর (৩২), আঃ মতিন (৪০)।
র্যাব প্রেরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানা যায়, গুরুদাসপুর উপজেলার সোনাবাজু পাটপাড়া গ্রামের আজাদ প্রামাণিক এর বোন নাহার বেগম (৪২) এর সাথে গত প্রায় ১০ বছর পূর্বে একই এলাকার লোকমান সাকিদার (৫৫) এর বিয়ে হয়। বিয়ের পর লোকমান সাকিদার নাহারের নামে ৭.৫ শতাংশ জমি সাব কবলা দলিল করে দেয়। পরবর্তীতে লোকমান সাকিদার প্রায় ২ বছর পূর্বে তারা বেগম (৪৫) নামের অন্য আরেক নারীকে বিয়ে করে। দ্বিতীয় বিয়ের পর থেকে লোকমান সাকিদার নাহারের কাছ থেকে জমি ফেরত চায় এবং জমি ফেরত নেওয়ার জন্য মাজেম আলী, ফিরোজ হোসেন, শাহানুর, আঃ মতিনদের সহায়তায় নাহারকে বিভিন্নভাবে ভয়ভীতি ও মারপিট করতো। নাহার তাদের অত্যাচার, নির্যাতন সহ্য করে লোকমান সাকিদার এর সংসার করতে থাকে। স্বামীর পরিবারের সদস্যদের জ্বালা যন্ত্রণা অসহনীয় মাত্রায় পৌঁছালে নাহার তার স্বামীর বাড়ি থেকে বড়াইগ্রাম উপজেলার পারকোল গ্রামের জনৈক মোছাঃ আজমি আরা বেগম এর বাড়িতে যায়। এরপর গত ১১ মে দুপুরে লোকমান সাকিদার ও তার দ্বিতীয় স্ত্রী মোছাঃ তারা বেগমকে নিয়ে আজমি আরা বেগম এর বাড়িতে যায়। ঐদিন বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে তারা নাহার বেগমকে সাথে নিয়ে বনপাড়া উপজেলার নওপাড়া গ্রামের উদ্দেশ্যে রওনা হয়। ১৩ মে লোকমান সাকিদার জনৈক দুলাল প্রাং’কে জানায় যে, নাহার বেগম’কে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। ১৭ মে নাহারের পরিবারের সদস্যরা জানতে পারে ১৬ মে বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে নাহারের মরদেহ পড়ে আছে বড়াইগ্রাম উপজেলার বনপাড়া পৌরসভার কালিকাপুর বেড়পাড়া গ্রামের পানির ট্যাংকের পূর্বপাশে জনৈক মোঃ নজরুল ইসলাম এর নেপিয়ার ঘাসের জমিতে। অর্ধগলিত অজ্ঞাতনামা হিসেবে মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ সুরতহাল প্রতিবেদন প্রস্তুত করে মৃত্যুর সঠিক কারণ নির্ণয়ের জন্য মরদেহ নাটোর আধুনিক সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করে। নাহারের আত্মীয়-স্বজনসহ তার সন্ধানে বনপাড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রে গিয়ে পুলিশের কাছে মৃত নারীর ছবি, ভিডিও ফুটেজ দেখে বাদী ও তার আত্মীয়-স্বজন সনাক্ত করে যে, অজ্ঞাতনামা মৃত নারী নাহার। নাহারের পরিবারের সদস্যদের ধারণা ১১ মে থেকে ১৬ মে এর মধ্যে যে কোনো সময় দুর্বৃত্তরা সু-পরিকল্পিতভাবে নাহার বেগমকে নির্মমভাবে হত্যা করে এবং লাশ গুম করে। পরবর্তীতে মৃত নাহারের ভাই আজাদ প্রামানিক বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলা দায়েরের পর থেকেই আসামীরা আত্মগোপনে চলে যায়। মামলার তদন্তকারী অফিসার আসামীদের গ্রেফতারের জন্য সিপিসি-২, নাটোর, র্যাব-৫ বরাবর অধিযাচনপত্র প্রদান করেন। এরই প্রেক্ষিতে র্যাব গোয়েন্দা নজরদারী বৃদ্ধিসহ ছায়াতদন্ত শুরু করে। র্যাব-৫, নাটোর ক্যাম্প গোয়েন্দা তথ্য ও তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে ঘটনার সাথে জড়িত আসামীদের অবস্থান সনাক্ত মাজেম আলী, ফিরোজ হোসেন, শাহানুর, আঃ মতিনকে সোনাবাজু গ্রাম থেকে গ্ৰেফতার করে। অন্যান্য আসামীদেরও গ্রেপ্তারের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে তারা।
পরে গ্রেফতারকৃত আসামীদের বড়াইগ্রাম থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর
যোগাযোগ: । [email protected] । বিজ্ঞাপন ও বার্তা সম্পাদক: 01894944220
ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।
© 2025 Sangbad Sarabela All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh