ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে তৃতীয় ধাপে আগামী ২৯ মে দেশে ১১১ টি উপজেলা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এরমধ্যে ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনও পড়েছে।এনির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন স্বামী-স্ত্রীসহ ৫ জন।
প্রতীক বরাদ্দ পেয়ে প্রচারণাও শুরু করে দিয়েছেন এ দম্পতি। তারা হলেন মোখলেসুর রহমান সুমন ও তার স্ত্রী লোপা রহমান। এছাড়াও চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে আছেন আরও ৩ জনসহ ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৫ জন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৪ জন।
সুমন উপজেলা আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী ও কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক লীগের সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক। তিনি ভাঙ্গা উপজেলার আজিমনগর ইউনিয়নের ঈশ্বরদী গ্রামের হাজী ইরফান উদ্দিন মাতুব্বরের ছেলে। তার নির্বাচনী প্রতীক ঘোড়া। লোপা রহমান চান্দা ইউনিয়নের পুলিয়া মণ্ডলবাড়ি গ্রামের রাধেশ্যাম মণ্ডলের মেয়ে। তিনি আনারস প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে।
এ উপজেলায় অপর তিন চেয়ারম্যান প্রার্থী হলেন ফরিদপুর-৪ আসনের সংসদ সদস্য মজিবুর রহমান চৌধুরী নিক্সন সমর্থিত ৭ নম্বর আলগী ইউনিয়ন পরিষদের দুইবারের সাবেক চেয়ারম্যান মো. কাওছার ভূইয়া দোয়াত কলম, লায়ন মো. সহিদুল ইসলাম মোটরসাইকেল ও মাইনুল ইসলাম খান রিপন কৈ মাছ প্রতীকে নির্বাচন করছে।
ভাঙ্গা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের বিষয়ে ভাঙ্গা বাজারের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী নয়ন মাতুব্বর (৪৬) বলেন, এই নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থীদের মধ্যে এমপি সমর্থিত প্রার্থী কাওছার ভূঁইয়া ও আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী মোখলেসুর রহমান এর মধ্যে মূল প্রতিদ্বন্দিতা হবে। দুজন প্রার্থী ভাঙ্গা বাজারে তার নেতাকর্মীসহ ভোট চেয়ে গিয়েছে। আমরা চাই শান্তি, সুশৃংখল চাঁদাবাজ ও যানজট মুক্তভাবে ভাঙ্গা বাজারে ব্যবসা করার সহযোগিতা করবে তাকেই আমরা ভোট দেব।
এদিকে আসন্ন উপজেলা নির্বাচনকে সামনে রেখে ভাঙ্গার রাজনৈতিক অঙ্গনে পালাবদল শুরু হয়ে। কিছুদিন আগে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও স্থানীয় স্বতন্ত্র এমপির মধ্যে বিতর্কিত ফোন আলাপ দেশজুড়ে ভাইরাল হয়েছে। স্বতন্ত্র এমপির অনুসারী আলগী ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান ও নুরুল্লাহগঞ্জ ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগ সমর্থিত উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী ঘোড়া প্রতীকের সাথে নেতাকর্মী নিয়ে একাত্মতা প্রকাশ করেছে। অন্যদিকে আওয়ামী লীগ অনুসারী চুমুরদী ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান বিশিষ্ট ব্যবসায়ী সাখাওয়াত হোসেন জালাল এমপি সমর্থিত চেয়ারম্যান প্রার্থী প্রার্থী কাওছার ভূঁইয়ার দোয়াত কলম প্রতীকে সমর্থন দিয়েছে। বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায়, আগামী উপজেলা নির্বাচনের আগে আরও কিছু নেতার দল বদল হওয়ার সম্ভাবনা আছে।
ভাঙ্গা উপজেলার আলগী ইউনিয়নের কৃষক মো.তৈয়ার মুন্সী (৫১) বলেন, আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আলগী ইউনিয়ন থেকে ৬ জন প্রার্থী নির্বাচন করতেছে। এরমধ্যে আমাদের মহল্লা থেকে আমার প্রতিবেশী ভাই চেয়ারম্যান প্রার্থী আমার প্রতিবেশী চাচা ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী ও আমার চাচাতো বোন মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী। আশাকরি প্রতিদ্বন্দিতাপূর্ণ উৎসবমুখর পরিবেশে এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
চেয়ারম্যান প্রার্থীদের মাঝে অভিযোগ পাল্টা অভিযোগের মধ্যে চলছে নির্বাচনী প্রচারণা গত ১৮ মে উপজেলার মানিকদাহ ইউনিয়নের একটি স্কুল মাঠে মোখলেসুর রহমান সুমন এর উঠান বৈঠক চলাকালে ৫টি গাড়ি ও বেশ কিছু চেয়ার ভাঙচুরসহ হামলার ঘটনা ঘটেছে। সুমন অভিযোগ করে বলেন, প্রতিদ্বন্দী প্রার্থী কাউসার ভূঁইয়া ও তার সমর্থিত লোকজন এই ভাঙচুর ও হামলা করেছে।
এ বিষয়ে চেয়ারম্যান প্রার্থী কাউসার ভূঁইয়া গত ১৯ মে সংবাদ সম্মেলন করে বলেন, এই হামলা ভাঙচুর ঘটনা চলাকালীন সময়ে আমি ভাঙ্গা পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ড ও পরে আলগী ইউনিয়নে আমার নির্বাচনী উঠান বৈঠক এবং প্রচারণায় ব্যস্ত ছিলাম। কে বা কারা হামলা করেছে আমি কিছুই জানিনা, আমার ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করার জন্য প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা নিজেরা হামলা ভাঙচুরের নাটক সাজিয়ে আমার ওপরে মিথ্যা অভিযোগ করেছে।
চলমান ভাঙ্গা উপজেলা নির্বাচনে একমাত্র নারী চেয়ারম্যান প্রার্থী লোপা রহমান বলেন, ‘আমি উপজেলা নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছি জনসাধারণের উৎসাহ পাচ্ছি। আমার স্বামীও চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করছেন। আমি সহ আমার লোকজন ভোটের মাঠে আনারস প্রতীকে কাজ করছি। তবে আমার স্বামীর বা পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো নিষেধ বা চাপ নেই।’
ভাঙ্গা উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা হাচেন উদ্দিন জনান, ষষ্ঠ উপজেলা নির্বাচনে আগামী ২৯ মে ভাঙ্গা উপজেলায় তৃতীয় ধাপে ব্যালটের মাধ্যমে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এই উপজেলায় ৯৯ টি কেন্দ্রে ৫৯৮ টি বুথ থাকবে। পুরুষ ভোটার সংখ্যা ১ লক্ষ ২২ হাজার ১২টি,মহিলা ভোটার সংখ্যা ১ লক্ষ ১৪ হাজার ২৩টি ও তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার সংখ্যা ৩টি। মোট ভোটার সংখ্যা ২ লক্ষ ৩৬ হাজার ৩৮টি।
আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আইন শৃঙ্খলার বিষয়ে জানতে চাইলে ভাঙ্গা থানার অফিসার ইনচার্জ মামুনুর আল রশীদ বলেন, গত ১৮ মে মানিকদাহ ইউনিয়নে একটি উঠান বৈঠকে হামলা ভাঙচুরের সংবাদ শুনতে পেয়ে আমি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সহ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনি। এ ঘটনায় মামলা হয়েছে এবং একজন আসামিকে গ্রেফতার করে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। এখন পরিস্থিতি সম্পুন্ন স্বাভাবিক ও নির্বাচনী পরিবেশ বিরাজ করছে।
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর
যোগাযোগ: । [email protected] । বিজ্ঞাপন ও বার্তা সম্পাদক: 01894944220
ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।
© 2025 Sangbad Sarabela All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh