সুরমা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে সিলেট নগরীর বেশ কিছু এলাকায় পানি প্রবেশ করেছে। তৈরি হয়েছে জলাবন্ধতা। অনেকের ঘরবাড়িতে, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে পানি প্রবেশ করেছে। অনেকে আশ্রয়কেন্দ্রে উঠেছে। এর মধ্যে ৩৪ দশমিক ৩ ডিগ্রি তাপমাত্রার ভ্যাপসা গরমে জীবন হাঁসফাঁস। এ পরিস্থিতিতে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হচ্ছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, নগরীর জামতলা, তালতলা, খুলিয়াটুলা, শেখঘাট, মেন্দিবাগ, মাছিমপুর, উপশহরসহ নিম্নাঞ্চল এলাকা প্লাবিত হয়ে অনেকের বাসা-বাড়ি, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে পানি প্রবেশ করেছে।
সিলেট আবহাওয়া অফিসের সহকারী আবহাওয়াবিদ শাহ মো. সজীব হোসাইন জানান, বিকাল ৩টায় সিলেটে ৩৪ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী দীপক রঞ্জন দাশ জানান, নতুন করে বৃষ্টিপাত না হওয়ায় নদ-নদীর পানি কমতে শুরু করেছে। তিনি জানান, বিকাল ৩টায় সুরমা নদীর পানি কানাইঘাট পয়েন্টে ১৩ দশমিক ৫৭ সেন্টি মিটার দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। ওই পয়েন্টে পানির বিপদসীমার ১২ দশমিক ৭৫। সুরমা নদীর পানি সিলেট পয়েন্টে ১০ দশমিক ৮৬ সেন্টি মিটার দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। ওই পয়েন্টে পানির বিপদসীমার ১০ দশমিক ৮০। কুশিয়ারা নদীর পানি আমলশীল পয়েন্টে ১৭ দশমিক ২৯ সেন্টি মিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। ওই পয়েন্টে পানির বিপদসীমার ১৫ দশমিক ৪০। কুশিয়ারা নদীর পানি শেওলা পয়েন্টে ১৩ দশমিক ১২ সেন্টি মিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। ওই পয়েন্টে পানির বিপদসীমার ১৩ দশমিক ০৫।
নগরের পানি বন্দি মানুষের সাথে কথা বলে জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার থেকে একটু একটু করে পানি বেড়েছে। অনেকের ঘরে হাঁটু পরিমাণ পানি। এতে বিপাকে পড়েছেন তারা। এরমধ্যে পানিতে চারপাশের ময়লা-আবর্জনা থাকায় স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে রয়েছেন তারা। এদিকে ভ্যাপসা গরমে হাঁসফাঁস করছেন অনেকে। তারা বলেন, কোন দিক দিয়ে শান্তি নাই। বৃষ্টি হলে পানি চলে আসে রৌদ উঠলে গরমে ঠিকা দায় হয়ে পড়ে।
সড়ক তলিয়ে যাওয়ায় পানি মাড়িয়ে চলাচল করতে হচ্ছে। পানিতে আশপাশের ময়লা-আবর্জনা ভাসছে। পানি মাড়ানোয় পা চুলকাচ্ছে।
সিলেট সিটি কর্পোরেশনের জনসংযোগ শাখা থেকে জানানো হয়েছে, সিলেট নগরীতে বন্যায় আক্রান্ত হয়েছেন ইতিমধ্যে ৪ হাজার পরিবার। তাদের পর্যাপ্ত পরিমাণ শুকনো খাবার পাঠানোর ব্যবস্থা গ্রহণ করছে সিসিক। খোলা হয়েছে আশ্রয়কেন্দ্র।
সিলেট সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ইফতেখার আহমেদ চৌধুরী জানান, সুরমা নদীতে পানি বেড়ে নগরের নিম্নাঞ্চলে পানি প্রবেশ করেছে। তবে বৃষ্টি না হওয়ার কারণে পানি একটু একটু করে কমছে। তাছাড়া পরিস্থিতি মোকাবেলায় প্রস্তুত রয়েছে সিসিক।