পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে কোরবানির হাটে বিক্রির জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত ১৩শ কেজি ওজনের বিশাল আকৃতির ফিজিয়ান জাতের ‘কালা মানিক’ ষাঁড় গরুটি। সিরাজগঞ্জের কামারখন্দ উপজেলায় আলোচনার তুঙ্গে রয়েছে এ ‘কালা মানিক’।
এ কালা মানিকের কাছে গিয়ে যদি কেউ দীর্ঘসময় আদর করেন তাহলে সে বড়ই ভালো। আর আদর যদি কমতি হয়ে যায়, তবে মুখ দিয়ে বাতাস বের করে মাথা দিয়ে ঠুস দেয় সে। আরও আদর করতে অথবা এখান থেকে সরে যাও বলে ইঙ্গিত দেয় হয়তোবা।
পা থেকে মাথা অবধি পর্যন্ত কুচকুচে কালো বলেই এর নাম কালা মানিক রাখা হয়েছে। প্রায় ৫ বছর বয়সের ষাঁড়টির ওজন ১৩শ কেজি বা প্রায় ৩৩ মণ। এর দৈর্ঘ্য ১০ ফুট ও উচ্চতা ৫ ফুট ৪ ইঞ্চি।
সরেজমিনে শুক্রবার গিয়ে দেখা যায়, অনেকটা শখের বসে নিজ বাড়িতে করা গরুর খামারটিতে বর্তমানে মোট ৯টি বিশাল আকৃতির ষাঁড় লালন-পালন করে যাচ্ছেন অধ্যাপক ড. আলী আজম তালুকদার।তিনি উপজেলার জামতৈল ইউনিয়নের নান্দিনা মধু গ্রামের বাসিন্দা বীর মুক্তিযোদ্ধা মৃত আলী আজহার তালুকদারের ছেলে। বর্তমানে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের অধ্যাপক তিনি।বর্তমানে তার খামারে কালা মানিক ছাড়াও ৮শ কেজি ওজনের শাহীওয়াল জাতের আকাইসুর এবং ৭শ কেজির ওজনের আরও ৭টি ষাঁড় রয়েছে। আসন্ন কোরবানির পশুর হাটে কালা মানিক, আকাইসুরসহ মোট ৮টি ষাঁড়কে বিক্রির জন্য তোলা হবে। একসঙ্গে এত বিশাল আকৃতির কালা মানিক ও অনেক ষাঁড় দেখার জন্য প্রতিদিন লোকজন ভিড় জমাচ্ছেন অধ্যাপকের খামার বাড়িতে।
এ ব্যাপারে খামারের মালিক অধ্যাপক ড. আলী আজম তালুকদার বলেন, পশু-পাখি লালনপালনে আমার যে শখ রয়েছে সেই শখের বসে এই গবাদিপশু খামারটি তৈরি করা। এখানে কোনো প্রকার ওষুধ ছাড়াই আমার নিজস্ব গবেষণা প্রক্রিয়ায় গোখাদ্য তৈরি করা হয়। দানাদার খাদ্যগুলোকে পাউডার ফর্মে এনে এরপর ব্যাকটেরিয়া দিয়ে গাঁজানো প্রক্রিয়ায় ৬ থেকে ১২ ঘণ্টা ভিজিয়ে রেখে সেগুলো ষাঁড় গরুগুলোকে খাবারের জন্য পরিবেশন করা হয়। এর সঙ্গে আছে কাঁচা ঘাস এবং সাইলেস। আমার চিন্তাধারা সাশ্রয়ী মূল্যে বাংলাদেশের গবাদিপশুকে খাদ্য দেওয়া।কালা মানিক বিক্রির জন্য দাম চেয়েছি ১৫ লাখ টাকা। এটা আমার ব্যবসা না। যদি কেউ কিনতে চায় তাহলে অবশ্যই আলোচনার মাধ্যমে কম বেশি কিছু করা যাবে।খামারের বিষয়ে প্রতিবেশী ইয়াহিয়া সরকার, মুকরামিন হোসেন, জুয়েল রানা ও আব্দুল মন্ডল বলেন- অধ্যাপক সাহেব খুব যত্ন করে খামাটি তৈরি করেছেন। তিনি প্রায় প্রতি সপ্তাহেই ঢাকা থেকে গ্রামের বাড়িতে আসেন। খামারে অনেক রাত পর্যন্ত এ ষাঁড়গুলোর পেছনে সময় ব্যয় করেন তিনি। ষাঁড়গুলোকে আদর যত্নের পাশাপাশি খাবারদাবার নিজ হাতে খাওয়াতে থাকেন। বেশ কয়েকদিন আগে খামার থেকে দুটি ষাঁড় গরু চুরি হয়ে গিয়েছে। এরপরে তিনি আরও সতর্কতা অবলম্বন করে ষাঁড় গরুগুলো লালনপালন করছেন।খামারে সার্বক্ষণিক পরিচর্যার কাজে নিয়োজিত থাকা রাকিবুল ইসলাম বলেন, কালা মানিক খুব ভালো। তাকে আদর করলে বেশি করে করবেন। অল্প করলে রাগ করে সে। আমি মাঝে মাঝে চুমা খাই। কালা মানিক ছাড়াও সবগুলো ষাঁড়গরু খুবই ভালো। সকাল থেকে শুরু করে রাত পর্যন্ত আমি এবং আমার পরিবার এই খামার দেখাশোনা করি।
এ ব্যাপারে কামারখন্দ উপজেলা প্রাণীও পশু সম্পদ অফিসার ভেটেরিনারি সার্জন ডা. মো. ফরহাদ হোসেন চৌধুরী বলেন, এবারের কোরবানি ঈদে কামারখন্দ উপজেলায় ১,৩০৩টি খামারে মোট ১১,২২০টি গরু ও ৪৩ হাজার ১২০টি ছাগল ও ভেড়া হৃষ্টপুষ্টকরণ করা হয়েছে। এগুলোকে আসন্ন কোরবানির পশুর হাটে বিক্রি করলে প্রায় ১ হাজার ৭৭ কোটি টাকায় বিক্রি করা যাবে। এর মধ্যে কামারখন্দে কালা মানিক সর্বোচ্চ সুঠাম দেহের অধিকারী। যা সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক খাবার খেয়ে এত বিশাল আকৃতির ষাঁড় হয়েছে। আশা করছি, কোরবানির পশুর হাটে কালা মানিক ষাঁড়ের মালিক ভালো দামে বিক্রি করতে পারবেন।
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর
যোগাযোগ: । [email protected] । বিজ্ঞাপন ও বার্তা সম্পাদক: 01894944220
ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।
© 2025 Sangbad Sarabela All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh