× প্রচ্ছদ বাংলাদেশ বিশ্ব রাজনীতি খেলা জামায়াত বিনোদন বাণিজ্য লাইফ স্টাইল ভিডিও সকল বিভাগ
ছবি ভিডিও লাইভ লেখক আর্কাইভ

মাকে গাছে বেঁধে নির্যাতন, বাবা-ছেলে আটক

মৌলভীবাজার প্রতিনিধি

০৮ জুন ২০২৪, ১৮:৩৮ পিএম

মৌলভীবাজারে জলাশয়ে বাচ্চাদের জাল দিয়ে মাছ ধরা নিয়ে দ্বন্ধের জেরে হামিদা বেগম (৩৫) নামে এক গৃহবধূকে রশি দিয়ে গাছের সাথে বেঁধে নির্যাতনের চাঞ্চল্যকর অভিযোগ উঠেছে।

গত বৃহস্পতিবার (৬ জুন) সকালে সদর উপজেলার  নাজিরাবাদ ইউনিয়নের আগনসি গ্রামের কালাচন্দরতল এলাকায় ঘটে এ ঘটনা। 

ওই ঘটনার পর পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে গাছে বাঁধা হামিদা বেগমকে মুক্ত করে এবং  অভিযুক্ত প্রতিবেশি কুরুশ মিয়া ও তার এক ছেলেকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে আসে। ভুক্তভোগী হামিদা বেগমের স্বামী এলাকায় ভিক্ষা করে পরিবার চালান। 

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, প্রতিবেশি কুরুশ মিয়ার সাথে হামিদা বেগমের পরিবারের দ্বন্দ্ব চলে আসছিল কয়েক বছর ধরে। মূলত ওই দ্বন্দ্বের জের ধরে এ ঘটনা ঘটে। 

এ ঘটনার একটি ভিডিও গত বৃহস্পতিবার সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়। ভিডিওতে গাছে রশি দিয়ে বাঁধা অবস্থায় হামিদা বেগম অভিযোগ করে বলেন, এখানে কালভার্টের উপরে আমার মেয়ে মাছ ধরার জাল রেখে পড়তে যায়। পড়া থেকে আসার পর জাল দিয়ে মাছ ধরার জন্য পানিতে ফেলে৷ ফেলার পর অভিযুক্তের মেয়ে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকে। বিষয়টি আমার ফুফু শাশুড়ীকে জানাই। এক পর্যায়ে অভিযুক্ত কুরুশ মিয়া তাঁর সন্তানদের আমাকে ধরে আনার জন্য আদেশ দেন। এসময় জুবেল নামে এক ছেলে আমাকে পাইপ দিয়ে আঘাত করে। এরপর আমি উঠানে গিয়ে দা নিয়ে বের হই। আমার দা সহ তারা আমাকে আমার বাড়ির উঠান থেকে ধরে নিয়ে গাছের সাথে বেঁধে রাখে।

ঘটনার সত্যতা যাচাইয়ে কথা হয় ইউপি সদস্য মো. সুহেল মিয়ার সাথে। তিনি বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, বৃহস্পতিবার সকালে আমি খবর পাই, এক নারীকে পারিবারিক দ্বন্দ্বের জেরে গাছের সাথে বেঁধে রাখা হয়েছে। সত্যতা যাচাই করতে আমি যখন যাই, তখন হামিদা বেগমের হাত বাঁধা অবস্থায় দেখতে পাই।

পরবর্তীতে ইউপি চেয়ারম্যানকে অবগত করলে, তিনি পুলিশে খবর দেন। এর পরেই পুলিশ ও স্থানীয়দের সহযোগিতায় ওই নারীকে উদ্ধার করা হয়। 

ইউপি সদস্য আরও বলেন, এ ধরনের ঘটনা ইতি পূর্বে আমার ওয়ার্ডে ঘটেনি। এটার সুষ্ঠু বিচার হোক আমরা চাই। 

বিষয়টি জানতে অভিযুক্ত কুরুশ মিয়ার পরিবারের সাথে যোগাযোগ করা হলে মুঠোফোনে তাঁর ভাতিজা রহিম মিয়া জানান, পুকুরে মাছ ধরার জন্য জাল ফেলা নিয়ে দ্বন্দ্ব শুরু হয়৷ এক পর্যায়ে হামিদা বেগমের সাথে কুরুশ মিয়ার পরিবারের কথা-কাটাকাটি ও গালিগালাজ চলতে থাকে। আর এর জেরে কুরুশ মিয়া তাঁর সন্তানদের হামিদা বেগমকে পাশের একটি ফিসারীর গাছের সাথে বেঁধে রাখার নির্দেশ দেন। এসময় কুরুশ মিয়ার নির্দেশে হামিদা-কে গাছের সাথে বেঁধে ফেলা হয়। তবে গাছে বাঁধার বিষয়টি স্বীকার করলেও নির্যাতনের বিষয়টি অস্বীকার করেন রহিম।

নাজিরাবাদ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আশরাফ উদ্দিন বলেন, আমি ইউপি সদস্যর মাধ্যমে বিষয়টি জানতে পেরে পুলিশের কর্মকর্তাদের সাথে যোগাযোগ করে জানালে পরবর্তীতে পুলিশ ব্যবস্থা নেয় ।

এদিকে এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার রাতেই ভুক্তভোগী হামিদা বেগম বাদি হয়ে ৩ জনকে আসামি করে মৌলভীবাজার সদর মডেল থানায় মামলা দায়ের করেছেন। আসামিরা হলেন, কুরুশ মিয়া (৪৫) পিতা জমিল মিয়া, রাসেল মিয়া (২৫) পিতা কুরুশ মিয়া ও কুরুশ মিয়ার মিয়ার মেয়ে সুইটি বেগম। ইতিমধ্যে অভিযুক্ত প্রধান আসামি কুরুশ মিয়া ও ২ নং আসামি কুরুশ মিয়ার ছেলে রাসেল মিয়াকে পুলিশ আটক করে পরবর্তীতে কারাগারে পাঠিয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। 

মৌলভীবাজার সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কে এম নজরুল ইসলাম জানান, বাচ্চাদের মাছ ধরা নিয়ে ঘটনার সূত্রপাত। ওই ঘটনার জেরে বাবা-ছেলে মিলে গাছের সাথে বেঁধে রাখে হামিদা বেগমকে। পুলিশ গিয়ে উদ্ধার করে৷

তিনি বলেন, হামিদা বেগমের স্বামী ভিক্ষা করে পরিবার চালায়। ঘটনাটি অমানবিক। মামলা হয়েছে এবং অভিযুক্ত বাবা-ছেলেকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। 

Sangbad Sarabela

সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর

যোগাযোগ: । [email protected] । বিজ্ঞাপন ও বার্তা সম্পাদক: 01894944220

ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।

আমাদের সঙ্গে থাকুন

© 2025 Sangbad Sarabela All Rights Reserved.