× প্রচ্ছদ বাংলাদেশ বিশ্ব রাজনীতি খেলা জামায়াত বিনোদন বাণিজ্য লাইফ স্টাইল ভিডিও সকল বিভাগ
ছবি ভিডিও লাইভ লেখক আর্কাইভ

সিলেটে ধীরগতিতে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি

মাহমুদ খান, সিলেট ব্যুরো

২২ জুন ২০২৪, ১৪:৪২ পিএম

নতুন করে বৃষ্টিপাত না হওয়ায় সিলেটে বন্যা পরিস্থিতির আরো উন্নতি হয়েছে, তবে পানি নামছে ধীর গতিতে। এখনো অনেকে আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান করছেন। এদিকে সকাল থেকে আকাশ মেঘাচ্ছন্ন থাকলে বেলা বাড়ার পর উকি দিয়েছে সূর্য। 

তাছাড়া সিলেটের প্রধান নদ-নদীর পানি কমতে শুরু করেছে। সিলেটে ও ভারতের মেঘালয় ও চেরাপুঞ্জিতে বৃষ্টিপাত না হলে বন্যা পরিস্থিতির আরও উন্নতি হবে বলে জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, লোকালয় থেকে বন্যার পানি নামতে শুরু করেছে। তবে এখন অনেক রাস্তা-ঘাট, ঘর-বাড়ি পানির নিচে রয়েছে। ফলে অনেকে এখন আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান করছে। তাছাড়া রাস্তায় পানি থাকার কারণে যোগাযোগ ব্যবস্থা ব্যাহত হচ্ছে। এদিকে দীর্ঘ সময় থেকে পানিবন্দি থাকার কারণে নানা পানি বাহিত রোগের প্রকোপ বেড়েছে। আশ্রয়কেন্দ্রে ও যারা পানিবন্দি আছেন তাদের মধ্যে তীব্র খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছে। এদিকে নগরীর বিভিন্ন এলাকা থেকে পানি নেমেছে। তবে ঘরে পানি ঢুকে অনেকের আসবাবপত্র নষ্ট হয়ে গেছে। এতে বিপাকে পড়েছেন নগরীর বাসিন্দারা। অনেককে রোদে বিভিন্ন আসবাবপত্র শুকাতে দেখা যায়।

নগরের উপশহরের বাসিন্দা আমিনা বেগম বলেন, গতকাল থেকে বৃষ্টি না হওয়ায় ঘরের ভেতর থেকে পানি কমেছে। তবে আমাদের ভোগান্তি কমেনি। গতকাল থেকে এখন পর্যন্ত  শুধু ঘর পরিষ্কার করে যাচ্ছি। ময়লা পানি ঢুকে ঘরের অনেক জিনিসপত্র নষ্ট করে দিয়েছে।

কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার বর্ণী গ্রামের ইউনুস মিয়া স্ত্রী, ছেলে ও মেয়েসহ পরিবারের ৭ সদস্য তাদের সবাইকে নিয়ে ৪ দিন থেকে রাস্তার পাশে বাঁশ ও ত্রিপল দিয়ে কোনোরকম বসবাস করছেন। তিনি জানান, বন্যার পানিতে ঘরের সব জিনিসপত্র পানি নিয়ে গেছে। শুধু ঘরের চাল আছে, আর ঘরে কিছু নেই। তিনি জানান, সবাইকে নিয়ে কোনোরকমে সাঁতরে এখানে এসে উঠেছেন। মাঝেমধ্যে অনেকে চিরা-মুড়ি দিয়ে যান সেগুলো খেয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন।

জেলা প্রশাসনের দেয়া শুক্রবার রাতের বন্যা পরিস্থিতির তথ্য অনুযায়ী, মহানগরের ১৩টি ওয়ার্ড প্লাবিত হয়েছে এতে পানিবন্দি হয়েছেন ৩০ হাজার মানুষ। ৮০টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত করা হয়েছে এতে আশ্রয় নিয়েছেন ৭ হাজার ৭০০ জন। অন্যদিকে জেলার ১৩টি উপজেলার ১০৭টি ইউনিয়নের ১ হাজার ৪৯৮টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে এতে পানিবন্দি হয়েছেন ৯ লাখ ৪৮ হাজার ২২৩ জন। এসব উপজেলায় ৬৩৬টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত করা হয়েছে এতে ১৭ হাজার ৪৫৫ জন আশ্রয় নিয়েছেন।

উপজেলা ভিত্তিক উপ-বরাদ্দের তথ্য অনুযায়ী, সিলেটে এখন পর্যন্ত ১ হাজার ১৭৫ দশমিক ৫ মেট্রিক টন চাল, ৫৩ লাখ ৭৫ হাজার নগদ টাকা, ১৯ লাখ টাকা করে শিশু ও গো খাদ্য এবং ৪ হাজার ৭৯৫ বস্তা শুকনা খাবার উপবরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

সিলেটের পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী দীপক রঞ্জন দাশ বলেন, ভারতের চেরাপুঞ্জিতে ও সিলেটে বৃষ্টির পরিমাণ কমে আসায় নদ-নদীর পানিও কমছে। তবে নদ-নদীর পানি কিছুটা ধীরগতিতে নামছে। এতে আগের তুলনায় পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। এমন অবস্থা অব্যাহত থাকলে পানি আরও কমে আসবে। তিনি বলেন, সিলেটের বিভিন্ন নদ-নদীর পানি গতকাল সন্ধ্যা ছয়টার তুলনায় আজ শনিবার দুপুর বারোটায় কমেছে। সিলেটের দুটি নদীর পানি বর্তমানে তিনটি পয়েন্টে বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

সিলেট আবহাওয়া অধিদপ্তরের সহকারী আবহাওয়াবিদ শাহ মো. সজীব হোসাইন জানান, সিলেটে গত ২৪ ঘণ্টায় ২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। সিলেটে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ কমেছে। 

ভারতের আবহাওয়ার সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, চেরাপুঞ্জিতে গত ২৪ ঘণ্টায় ২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।

গোয়াইনঘাট উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মো. তৌহিদুল ইসলাম বলেন, বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে, লোকালয় থেকে পানি নামা শুরু করেছে। আমাদের উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।

জেলা প্রশাসক শেখ রাসেল হাসান বলেন, বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে। নতুন করে বৃষ্টিপাত না হলে আশা করা যায় দ্রুত আরও দ্রুত উন্নতি হবে। আমরা বন্যার সার্বিক পরিস্থিতির উপর সতর্ক দৃষ্টি রাখছি। সরকারি ও বেসরকারিভাবে ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।

Sangbad Sarabela

সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর

যোগাযোগ: । [email protected] । বিজ্ঞাপন ও বার্তা সম্পাদক: 01894944220

ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।

আমাদের সঙ্গে থাকুন

© 2025 Sangbad Sarabela All Rights Reserved.