× প্রচ্ছদ বাংলাদেশ বিশ্ব রাজনীতি খেলা জামায়াত বিনোদন বাণিজ্য লাইফ স্টাইল ভিডিও ঘটনাবহুল ২০২৪ সকল বিভাগ
ছবি ভিডিও লাইভ লেখক আর্কাইভ

৪ কোটি ব্যয়ে রাস্তা সংষ্কারে ব্যাপক অনিয়ম

মো. সাইফুল ইসলাম, নীলফামারী প্রতিনিধি

২৭ জুন ২০২৪, ১৫:১১ পিএম

নীলফামারীর ডিমলায় তিস্তা সেচ ক্যানেলের ৯ কিলোমিটার সড়ক সংস্কারের এক সপ্তাহের মাথায় পিচ গলে উঠে যাচ্ছে। প্রায় ৪ কোটি টাকা ব্যয়ে সড়ক সংষ্কারের পর অধিকাংশ জায়গার পিচ গলে যান চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। নিম্নমান ও কম পুরুত্ব দিয়ে অপরিকল্পিত কার্পেটিং করায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে বলে স্থানীয়দের অভিযোগ।

স্থানীয়দের অভিযোগে জানা যায়, সড়কটি দিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার ছোট-বড় যান চলাচল করে। অথচ সড়ক কার্পেটিংয়ের পুরুত্ব মাত্র ৭ থেকে ৯ মিলিমিটার দেওয়া হয়েছে। বিটুমিনও কম দেওয়া হয়েছে। সংস্কারের পর সড়ক গলে ঢিবির মতো উঁচু-নিচু বা ঢেউয়ের আকৃতি ধারণ করেছে। এ ছাড়া কমপ্রেশার মেশিন দিয়ে সড়ক পরিষ্কার না করে ধুলা-ময়লার ওপরই পিচ ঢালাই করেছেন ঠিকাদার। পথচারীর পায়ে লেগে যাচ্ছে সড়কের পিচ। আবার যানবাহনের চাকার দাগ বসে যাচ্ছে সড়কে। এমনকি পা দিয়ে ঘষলেই উঠে যাচ্ছে কার্পেটিং।

ডালিয়া পাউবো সূত্রে জানা গেছে, ২০২১-২২ অর্থবছরে ৪ কোটি টাকা বরাদ্দে তিস্তা সেচ ক্যানেলের ডালিয়া-দুন্দিবাড়ী পর্যন্ত ১৭ কিলোমিটারের মধ্যে ৯ কিলোমিটার সড়কের সংস্কারের কাজ পায় আবুল কালাম নামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। তবে কাজটি সম্পন্ন করেছেন লোকমান হোসেন নামের সাব-ঠিকাদার। শতভাগ ভাঙা পাথর আর উন্নতমানের বিটুমিন দিয়ে রাস্তাটি সংস্কার করার কথা থাকলেও নিম্নমান ও কম পুরুত্ব দিয়ে অপরিকল্পিত কার্পেটিং করে
গত ১৫ জুন সড়ক সংস্কারের কাজ শেষ করেন ঠিকাদার।

ডিমলা আবহাওয়া অফিস সুত্র জানায়, গত কয়েক দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩২ থেকে ৩৫ ডিগ্রি। এই তাপমাত্রায় পিচ গলে যাওয়ায় ব্যবহৃত পিচের মান নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। সড়ক-মহাসড়কে যে পিচ ব্যবহার করা হয়, তার মান ৬০-৭০ গ্রেডের। এই পিচের গলনাঙ্ক ৪৮-৫২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। অর্থাৎ তাপমাত্রা ৪৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস হলে পিচ গলে যাওয়ার কথা এর আগে নয়।

রাস্তা সংষ্কার কাজে ব্যাপক দূর্নীতির বিষয়ে স্থানীয়রা বলেন, ভাঙা পাথরের পরিবর্তে স্থানীয় গোটা পাথর ব্যবহারের সময় প্রতিবাদ জানালেও কোনো লাভ হয়নি। একপর্যায়ে এলাকার লোকজন সড়কের কয়েক স্থানে হাত দিয়ে কার্পেটিং উঠে যাওয়া ও বিটুমিন গলে যাওয়ার দৃশ্য দেখান। তাদের ভাষ্য, ঠিকাদার ও পাউবোর প্রকৌশলীদের সখ্যতায় নিম্নমানের ও কম সামগ্রী দিয়ে রাস্তাটি তড়িঘড়ি সংস্কার করা হয়েছে। সড়ক সংস্কারের নামে সরকারের কোটি টাকা জলে যাওয়ায় শঙ্কা প্রকাশ করছেন তারা।

পিচ গলে যাওয়ার বিষয়ে জানালে সড়ক পরিদর্শনে আসেন ডালিয়া পাউবোর উপসহকারী প্রকৌশলী হাশেম আলী। তিনি বলেন, বিটুমিন গলে কার্পেটিং উঠে যাওয়ার বিষয়টি নির্বাহী প্রকৌশলীকে জানানো হয়েছে।

ওই সড়ক দিয়ে পণ্যবোঝাই পিকআপ ভ্যান নিয়ে জলঢাকা থেকে ডালিয়া আসছিলেন চালক হেলাল উদ্দিন। এ সময় তিনি বলেন,‘১০ বছর ধরে বিভিন্ন সড়কে পণ্য নিয়ে যাতায়াত করতে হয়, কিন্তু এমনভাবে পিচ গলতে কখনো দেখিনি। এমন সড়কে যানবাহন চালালে দ্রুত টায়ার নষ্ট হবে, যেকোনো সময় টায়ার ফেটে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।’

ইজিবাইকের চালক কুদ্দুস আলী বলেন, সাত দিনেই সড়কের পিচ গলে উঠে যাচ্ছে। কার্পেটিং অনেক উচুঁ-নিচু। ফলে যেকোনো সময় দুর্ঘটনা হতে পারে।

তবে রাস্তাটির সংস্কারকাজে নিম্নমানের ও কম পরিমাণে পাথর-বিটুমিন ব্যবহারের অভিযোগ অস্বীকার করেন ঠিকাদার লোকমান। তিনি বলেন, ‘রাস্তার কিছু জায়গায় বিটুমিনের পরিমাণ বেশি পড়েছে। যার ফলে রোদের তাপে এ রকম হচ্ছে। কার্যাদেশ অনুযায়ী কাজ হয়েছে। দরপত্রেই সড়ক কার্পেটিংয়ের পুরুত্ব ৯ মিলি ধরা হয়েছে।’

ডালিয়া পওর বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আসফাউদদৌলা বলেন, রাস্তা সংষ্কারের সময় পরিদর্শনে গিয়েছিলাম। কার্যাদেশ অনুযায়ী কাজ সম্পন্ন হয়েছে। অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, তিস্তা সেচ ক্যানেলের রাস্তা সংষ্কার কাজ দরপত্র মোতাবেক না হলে এবং কাজে অনিয়ম হলে ঠিকাদারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Sangbad Sarabela

সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর

যোগাযোগ: । [email protected] । বিজ্ঞাপন ও বার্তা সম্পাদক: 01894944220

ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।

আমাদের সঙ্গে থাকুন

© 2025 Sangbad Sarabela All Rights Reserved.