কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারীতে গত দুই দিন থেকে ভারি বৃষ্টিপাত না হওয়ায় বন্যার পানি কিছুটা কমতে শুরু করেছে। পানি কমলেও বান ভাসীদের দুর্ভোগ কমেনি। উপজেলার ৭টি ইউনিয়নের প্রায় ২৫ হাজার মানুষ এখনো পানিবন্দি রয়েছে।
মঙ্গলবার ( ৯ জুলাই) সকাল ৯ টায় কুড়িগ্রাম পাউবো জানায়, দুধকুমার নদের পানি পাটেশ্বরী সেতু পয়েন্টে গত ২৪ ঘন্টায় ৪৬ সে.মিটার কমে বিপদসীমার ১০ সে. মিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। বন্যার পানি ওঠায় অন্তত ১০টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পাঠদান বন্ধ রয়েছে। পানি কমলেও ঘর-বাড়ি, রাস্তা-ঘাট, নলকূপ, শৌচাগার এখনো তলিয়ে রয়েছে। এতে বিশুদ্ধ খাবার পানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। গরু-ছাগল, হাসঁ-মুরগী নিয়ে চরম দূর্ভোগে পড়েছেন বন্যা কবলিতরা।
উপজেলার শিলখুড়ি ইউনিয়নের কাজিয়ার চরের বাসিন্দা আবুল কালাম, মফিজুল ও সিরাজুল জানান, বন্যার পানি ঘর থেকে নেমে ওঠানে এসেছে। চুলার ভিতর পানি, টিউব ওয়েল ঢুবে আছে। রান্না করে খাবার কোন ব্যবস্থা নেই। তিন দিন থেকে মুড়ি আর বিস্কুট খেয়ে আছি। চেয়ারম্যান ১০ কেজি করে ত্রাণের চাউল দিছে কিন্তু রান্না তো করতে পারি না।
চর তিলাই গ্রামের রফিকুল ইসলাম জানান, বাড়ির চারদিকে পানি। কোথাও বের হতে পারি না। গরু ছাগল নিয়ে খুব বিপদে আছি।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ দপ্তর জানায়, চলমান বন্যায় উপজেলার শিলখুড়ি, তিলাই, চর- ভূরুঙ্গামারী, সদর, পাইকেরছড়া,সোনাহাট, বলদিয়া ও আন্ধারিঝাড় ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় বপনকৃত ৮০ হেক্টর বীজ তলা পুরোপুরি নষ্ট হয়ে গেছে। এছাড়াও আলু, পটল, ঝিংগা, আদা,তিল, মরিচ ও অন্যান্য শাক সবজিসহ প্রায় ৩০ হেক্টর জমির ফসল আংশিক নষ্ট হয়েছে।
শিলখুড়ি ইউপি চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান আসাদ জানান, আমার ইউনিয়নে কাজিয়ার চর এলাকাটি বন্যায় বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বন্যার পানি নামতে শুরু করেছে। ৫ মে.টন ত্রানের চাউল বরাদ্দ পেয়েছিলাম তা বিতরণ করেছি।
তিলাই ইউপি চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান জানান, ২ ও ৪ নং ওয়ার্ডের চলাচলের একমাত্র রাস্তাটি ভেঙে যোগাযোগ ব্যবস্থা অচল হয়ে পড়েছে। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছে ওই দুই ওয়ার্ডের জনসাধারণ।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল জব্বার জানান, বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের তালিকা প্রণয়নের কাজ চলছে। ১ হাজার কৃষককে ৫ কেজি করে রোপা আমনের বীজ দেওয়া হবে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার গোলাম ফেরদৌস জানান, বন্যায় জরুরী ত্রান সহায়তা হিসেবে নগদ ১ লক্ষ টাকা ও ৪৩ মে. টন চাল পেয়েছি। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার চেয়ারম্যানদের সাথে সমন্বয় করে এবং আমি নিজে উপস্থিত থেকে এখন পর্যন্ত ৩৮ মে.টন চাল বিতরণ করেছি।