বাগেরহাটের রামপালের খেজুরমহল গ্রামে বিবাহ বহির্ভূতভাবে পুত্র সন্তানের পিতা-মাতা হওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ওই এলাকায় তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। কিশোরীর মাতা আইনগত ব্যাবস্থা নিচ্ছেন বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন।
জানাগেছে, উপজেলার খেজুরমহল গ্রামের আকবর আলী শেখের পুত্র (১৬) একই এলাকার মৃত জাকির হোসের বাড়ীতে প্রায়ই বেড়াতে যেত। জাকিরের স্ত্রী সেলিনা বেগমের মৎস্য ঘেরে গিয়ে মাছ ধরে দিতো ওই কিশোর। ঘনঘন যাতায়াতের সুযোগে জাকিরের স্কুল পড়ুয়া সুন্দরী মেয়ে ১০ শ্রেণির ছাত্রীর সাথে প্রেমজ সম্পার্ক গড়ে তোলে।
ছাত্রীর মায়ের দাবী তাদের দূর্বলতার সুযোগ নিয়ে জোরপূর্বক তার মেয়েকে ধর্ষণ করে ওই কিশোর। এতে কিশোরী অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে। লোকলজ্জার ভয়ে ও কিশোরের চাপে কিশোরী বিষয়টি তার মাসহ সবার কাছে গোপন রাখে। একপর্যায়ে ওই কিশোরীর গর্ভের সন্তানের বয়স পূর্ণ হয়ে প্রসববেদনা শুরু হয়।
গত ইংরাজি ৩০-০৬-২০২৪ তারিখ সন্ধয় তড়িঘড়ি করে কিশোরীর মাতা তাকে ফয়লাহাটের একটি প্রাইভেট হাসপাতালে নেওয়ার পথে ভ্যানেই বাচ্চা প্রসব হয়। এরপরে ওই ক্লিনিকে চিকিৎসা নেওয়া অবস্থায় কিশোরীর মাতা রাগে ক্ষোভে হাসপাতাল থেকে বাড়ীতে চলে যান। পরে কিশোরের মাতা শাহারা বেগম ওই কিশোরীসহ নবজাতককে নিয়ে তাদের বাড়ীতে চলে যান। এ খবর জানাজানি হলে এলাকায় তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।
সাংবাদিকেরা ওই কিশোরের কাছে জানতে চাইলে সে বলে দুজনের বয়স পুরে গেছে। জন্ম নিবন্ধনে বয়স কম দেখানো হয়েছে। বিয়ের বিষয়ে জানতে চাইলে সে জানায়, খানপুরের এক কাজীর মাধ্যমে তারা বিয়ে করেছে এক বছর আগে।
তখন প্রশ্ন করা হয়, বয়স তো কারো পূর্ণ হয়নি কি করে রেজিস্টার বিয়ে করালে ? কাগজপত্র দেখাও ? সে পরে কাগজ দেখাবে বলে চম্পট দেয়। এরপরে ওই কিশোরের মাতা শাহারা বেগমের বাড়ীতে গিয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বয়স পূ্র্ণ হয়নি। কোন কাগজপত্রও নেই। কিশোরের বাড়ীতে অবস্থান করা ওই কিশোরীর কাছে জানতে চাইলে বলে ভালোবেসে বিয়ে করেছি।
তবে কাবিন দেখতে চাইলে বলে বয়স পূ্র্ণ না হওয়ায় গ্রাম্যভাবে কালিমা পড়ে বিয়ে করেছি। এটা কতটুকু আইন সম্মত জানতে চাইলে ওই কিশোরী কোন উত্তর দিতে পারেনি।
কিশোর ও কিশোরীর জন্ম সনদপত্র ঘেটে দেখা যায়, কিশোরের স্কুলের ৮ম শ্রেণী পাশের সনদপত্রে জন্ম তারিখ হলো গত ইংরেজি ১০-০৩-২০০৮
কিশোরীর জন্ম সনদপত্র অনুযায়ী তার জন্ম তারিখ ০৭-১১-২০০৭ সাল। তাদের সনদ অনুযায়ী ওই কিশোরীর বয়েস বেশী দেখা যায়।
কথা হয়, বাইনতলা ইউপি সংরক্ষিত মহিলা সদস্য আউলিয়া বেগমের সাথে। তিনি বলেন এটা আইনের ব্যত্যয় ঘটেছে। এমনটি মানা যায় না।
কিশোরীর মাতা জানান, আমার স্বামী মারা যাওয়ার পরে আমি অত্যান্ত কষ্ট করে ৩ টা মেয়ে ও ১ টা ছেলেকে মানুষ করছি। তাদের লেখাপড়া শেখাচ্ছি। আকবরের ছেলে আমার দূর্বলতার সুযোগ নিয়ে আমার কিশোরী মেয়েকে ধর্ষণ করেছে। আমার পরিবারের সর্বনাশ করেছে। আমি আইনের আশ্রয় গ্রহন করবো।