জেলার নবীনগর উপজেলায় একই পরিবারের স্বামী-স্ত্রী ও দুই শিশু সন্তানসহ চারজনের মরদেহ ঝুলানো অবস্থায় উদ্ধারের ঘটনায় নবীনগর থানায় দু’টি মামলা হয়েছে।
নিহত সোহাগের শশুর মো. আবু হানিফ অজ্ঞাতনামা আসামি দিয়ে সোমবার একটি এজাহার দায়ের করেন।
অপরদিকে, সোহাগের বাবা মোহাম্মদ আমির হোসেন বাদী হয়ে আরেকটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের করেন।
সোহাগের শশুর আবু হানিফের দায়ের করা মামলার এজাহারের বিবরণে বাদী উল্লেখ করেন, সোহাগ ব্যবসার পাশাপাশি ক্ষুদ্র ঋণের একটি সমবায় সমিতি চালাতেন। ওই সমিতির কিস্তির লেনদেনে মোটা অংকের টাকা ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়েন। এ ঋণের কারণে পারিবারিক কলহ লেগে থাকতো। এরই জের ধরে সোহাগ আমার মেয়ে ও দুই নাতনিকে শ্বাসরুদ্ধ করে মেরে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে পরে নিজেই আত্মহত্যা করে। অপর অপমৃত্যু মামলাটির বাদী সোহাগের বাবা মোহাম্মদ আমির হোসেন তার মামলার বিবরণে ঘটনার বর্ণনা দিয়ে উল্লেখ করেন, পারিবারিক কলহের জের ধরে সোহাগ তার স্ত্রী ও দুই মেয়েকে শ্বাসরুদ্ধ করে মেরে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে পরে নিজেই আত্মহত্যা করে।
গত রোববার (২৮ জুলাই) সকালে নবীনগর পৌরসভার ২নং ওয়ার্ডের বিজয় পাড়ায় সোহাগ মিয়ার বসতঘর থেকে একই পরিবারের ৪ সদস্যের মরদেহ এলাকাবাসীর মাধ্যমে সংবাদ পেয়ে ঝুলন্ত অবস্থায় নবীনগর থানার পুলিশ উদ্ধার করে। স্বামী, স্ত্রী ও দুই সন্তানসহ নিহতরা হলেন গৃহকর্তা সোহাগ মিয়া (৩৩), তার স্ত্রী জান্নাত (২৪), তাদের দুই কন্যা সন্তান ফাহিমা (৪) ও সাদিয়া (২)। রোববার সকাল ৯টার দিকে সোহাগ মিয়ার বাসায় গিয়ে তার শাশুড়ি ডাকাডাকি করলে তাদের কোন সাড়া না পেয়ে তিনি চিৎকার চেঁচামেচি শুরু করেন। সোহাগ মিয়ার শাশুড়ির চিৎকার শুনে প্রতিবেশী মনির ও উজ্জ্বল দৌড়ে যান। তারা আবারও ডাকাডাকি করে কোন সাড়া শব্দ না পাওয়ায় দরজা ভেঙ্গে ভিতরে ঢুকে দেখে সোহাগ মিয়া ও তার পরিবারের ৪ সদস্যকে মৃত অবস্থায় ঝুলতে দেখে কান্না শুরু করে। পরবর্তীতে থানায় খবর দিলে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে সকলের লাশ উদ্ধার করে। পরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সদর জেনারেল হাসপাতাল মর্গে মৃত চারজনের পোস্টমর্টেম শেষে বিকেলে স্বজনদের নিকট পুলিশ লাশ হস্তান্তর করে। সন্ধ্যায় জানাজা শেষে এলাকার কবরস্থানে পৃথক চারটি কবরে তাদের দাফন সম্পন্ন হয়।