কিশোরগঞ্জের হোসেনপুরে গত জুলাই মাসের প্রথম সপ্তাহে সরকারিভাবে বিনা মূল্যে সার ও বীজ বিতরণ চলছিল। তবে নামধারী কৃষক ছাড়া প্রকৃত কৃষকরা এ প্রণোদনা থেকে বঞ্চিত হয়েছে বলে এমন অভিযোগ করেছেন উপজেলার ৬টি ইউনিয়নের সুবিধাবঞ্চিত অনেক কৃষকরা।
তবে কৃষি কর্মকর্তা বলছেন- বিতরণের মাঝে স্বজনপ্রীতির অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তথ্যসূত্রে জানাযায়, উপজেলার ৬টি ইউনিয়নে জমি নেই এমন চাষিরা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কিছু অসাধু কর্মকর্তা ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে তাদের নাম তালিকাভুক্ত করে নেয়। এরপর বিনা মূল্যে সার-বীজ উত্তোলন করে কম টাকায় ডিলারদের কাছে বিক্রি করে। পরে ডিলারদের কাছ থেকে কৃষকরা চড়া দামে সেগুলো কিনতে হয়।
এদিকে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে জানা যায়, উপজেলার ৬টি ইউনিয়নে আমন মৌসুমে প্রায় ৪৭ হাজার কৃষকদের মধ্যে ৭০০ জন সুবিধাভোগী কৃষকের প্রণদনার তালিকা তৈরি করেন কৃষি কর্মকর্তা। প্রণোদনার আওতায় ৫ কেজি উপশী বীজ, ১০ কেজি এমওপি সার ও ১০ কেজি ডিএপি সার কৃষকদের মাঝে ধাপে ধাপে বিতরণ করা হয়।
সরেজমিনে কৃষকদের সঙ্গে কথা বললে তারা জানান, উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তারা মাঠ পর্যায়ে না গিয়ে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের ওপর নির্ভর করে নামের তালিকা তৈরি করে। এতে যাচাই-বাছাই ছাড়াই জমিহীন এমনকি কোনো দিন কৃষিকাজ করেননি এমন কৃষকের নামও তালিকায় স্থান পায়। ফলে প্রকৃত কৃষকরা বঞ্চিত হওয়ায় তাদের মধ্যে ক্ষোভ দেখা গেছে।
উপজেলার পুমদী ইউনিয়নের কৃষক সুরুজ মিয়াসহ আরো অনেক কৃষকরা বলেন, ‘ দুইশ শতক জমিতে আউশ আবাদ করেছি। কিন্তু আমাকে কৃষিকার্ড দেয়া হয়নি। বিনা মূল্যে পাওয়া তো দূরের কথা, ডিলারদের কাছ থেকে চড়া মূল্যে সার ও বীজ কিনে কাজ করি। কখনও সরকারের প্রণোদনা পাইনি। আর কোনদিন পাব কিনা তা সন্দেহ আছে।’
এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ এ.কে.এম শাহজাহান কবির বলেন, নিয়ম অনুযায়ী উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তারা সরেজমিনে প্রকৃত কৃষকের তালিকা প্রস্তুত করে তালিকা অনুযায়ী কার্ডের মাধ্যমে সার-বীজ বিতরণ করা হচ্ছে। এ ব্যাপারে কোনো কৃষক আমার কাছে লিখিত বা মৌখিক অভিযোগ করেনি। খোঁজখবর নিয়ে তদন্ত সাপেক্ষে তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে। আর যে সকল কৃষকরা প্রণোদনা থেকে বাদ পড়েছেন, পরবর্তীতে তাদেরকে প্রণোদনার আওতায় আনা হবে।